রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: সাম্প্রতিক কালে সামনের সারিতে চলে আসা সিপিএমের নবীন প্রজন্মের নেতৃত্বের মধ্যে নজর কেড়েছেন। বামেদের ‘মুখ’ হয়ে উঠেছেন তিনি। সেই মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়কে (Minakshi Mukherjee) পার্টির পশ্চিম বর্ধমান জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য করা নিয়ে এবার প্রশ্ন উঠে গেল সিপিএমের অন্দরে।
দলের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআইয়ের (DYFI) রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী। তাঁকে ঘিরে উন্মাদনা তৈরি হয়েছে বাম ছাত্র-যুবদের মধ্যে। দলের যুব সংগঠনকে শক্তিশালী করতে রাজ্যজুড়ে ছুটে বেড়াচ্ছেন তিনি। সিপিএম (CPIM) ক্ষমতায় নেই, তা সত্ত্বেও গত কয়েক বছরে রাজ্যে ডিওয়াইএফআইয়ের সদস্য সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে। তাহলে সেই মীনাক্ষীকে কেন সিপিএমের একটি জেলার সম্পাদকমণ্ডলীতে রাখা হল? এরপরই দলে প্রশ্ন উঠে গেল, তাহলে কি আগামীদিনে গণ্ডি ছোট করে দেওয়া হচ্ছে এই যুবনেত্রীর? রাজ্যজুড়ে দলের যুব সংগঠন সামলানোর পাশাপাশি পার্টির পশ্চিম বর্ধমান জেলার সাংগঠনিক দায়িত্ব তিনি কতটা সামলাতে পারবেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে পার্টি নেতৃত্বের একাংশ। শুধু তাই নয়, যুব নেতাদের একাংশও বিষয়টি মেনে নিতে পারছে না।
[আরও পড়ুন: ধমনীতে ৭০% ব্লকেজ নিয়েও অনুষ্ঠান, জীবন দিয়ে পেশাদারিত্বের প্রমাণ দিলেন কেকে]
জেলা পার্টির সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য হলে সেখানকার পার্টি সংগঠনের গুরু দায়িত্ব সামলাতে হবে। তাহলে রাজ্যে যুব সংগঠনে আগের মতো সময় দিতে পারবেন তো মীনাক্ষী? ডিওয়াইএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদকের পাশাপাশি পার্টির রাজ্য কমিটির সদস্য থাকার পরও জেলা সম্পাদকমণ্ডলীতে কেন তাঁকে নেওয়া হল? এমনটাই প্রশ্ন পার্টির একাংশের। জঙ্গি আন্দোলনে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়া, জেলে যাওয়া থেকে শুরু করে বাংলা-হিন্দিতে সাবলীল বক্তৃতা দিতে পারা মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়কে বিভিন্ন জেলার পার্টির কর্মসূচিতেও ডাক আসছে। সিপিএম পার্টির মধ্যেও ‘জনপ্রিয়’ মুখ হয়ে উঠেছেন তিনি। রাজনৈতিক মহলের প্রশ্ন, তাহলে কি মীনাক্ষীর গণ্ডি টেনে মাঠ ছোট করে দিল সিপিএম? তাঁকে কি জেলায় আবদ্ধ করে দেওয়া হল? তাছাড়া, পার্টির ছাত্র বা যুব ফ্রন্টের কেউ জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্যও রয়েছেন, এরকম নজিরও নেই। ফলে এটা নিয়ে চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছে পার্টির অন্দরে।
[আরও পড়ুন: ‘কোনও সেন্সর নয়, নিজের রাস্তাতেই হাঁটব’, সাফ কথা দিলীপ ঘোষের, নিশানায় দলেরই ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী!]
সিপিএমের (CPIM) একাংশ অবশ্য অন্য যুক্তি দিচ্ছে। সেই অংশের কথায়, জেলা সম্পাদকমণ্ডলীতে নেতৃত্ব দিয়ে নিজেকে আরও তৈরি করে নিতে পারবেন যুবনেত্রী। যুব সংগঠন আবার জেলা পার্টির কাজ, এই দুই দায়িত্ব একসঙ্গে সামলাতে পারবেন? মীনাক্ষীর জবাব, “কাজ যা থাকবে সেই কাজ করতে হবে। একা তো নই, যৌথ নেতৃত্বে কাজ হবে।” এবার সিপিএমের রাজ্য কমিটিতে যে কয়েকজন নবীন মুখ ঠাঁই পেয়েছেন সেই তালিকায় অন্যতম মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। একুশের বিধানসভা ভোটে নন্দীগ্রামে প্রার্থী হয়ে রাজনৈতিক মহলে নজর কেড়ে নিয়েছিলেন তিনি।