সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইম্ফলের দূরত্ব কতটা? দেশের রাজধানী থেকে উত্তর-পূর্বের সাত বোনের অন্যতম মণিপুরের ভৌগোলিক ব্যবধান যতটা না বিরাট, মানসিক-আত্মিক সংযোগহীনতা, দূরত্ব তার চেয়েও হয়তো বেশি। নয়তো মেইতেই-কুকি সংঘাতের পরিণতি হিসাবে গণধর্ষণ, মহিলাদের নগ্ন করে উন্মত্ত জনতার ধাওয়া করার ঘটনার খবর দিল্লিতে পৌঁছতে এত দেরি হল কেন?
গত মে-র গোড়ার দিকের হাড় হিম করা আতঙ্কের কথা জানতে প্রায় দু’মাস লেগে গেল! ক্রমশ সামনে এল দুই বিবাদমান জনগোষ্ঠীর দীর্ঘদিন ধরে পরস্পরের প্রতি চরম অসহনশীলতা, রক্তভেজা সংঘাতের কাহিনি। একদিকে সমতলের হিন্দু-বৈষ্ণব মেতেই, অন্যদিকে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী কুকি-নাগা-চিন গোষ্ঠী। সেই থেকে মিডিয়ায় মণিপুরের জাতি সংঘাতের নানা কারণ নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ অব্যাহত। আর তার মধ্যেই সংসদে পাস হয়ে গেল মাইনস অ্যান্ড মিনারেলস (ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড রেগুলেশন সংশোধনী বিল, ২০২৩)। যেটি রাষ্ট্রপতির সম্মতির অপেক্ষায়।
[আরও পড়ুন: এক্তিয়ার বহির্ভূত কাজ! বঙ্গের পঞ্চায়েত ভোটে পর্যবেক্ষক নিয়োগ নিয়ে ‘সুপ্রিম’ তোপের মুখে NHRC]
বিলের মোদ্দা কথা, এই সংক্রান্ত ১৯৫৭ সালের পুরনো আইনে বদল করে ভারত সরকারের হাতে দেশে ২৬টি দামি খনিজ পদার্থের খনন ও উত্তোলনের জন্য বেসরকারি কোম্পানিদের নিয়ে নিলাম ডাকার ক্ষমতা দেওয়া হবে। লিথিয়াম, কোবাল্ট, গ্রাফাইটের মতো মহামূল্যবান প্রাকৃতিক খনিজ সম্পদ উৎপাদন বাড়াতে হবে। এতদিন এগুলির নিলাম করতে পারত শুধু রাজ্য সরকার। ২৬টি সম্পদের উৎপাদন চাঙ্গা হলে সুবিধা হওয়ার কথা ইলেকট্রিক যান, ব্যাটারি ক্রেতাদের। আর মুনাফা হবে প্রাইভেট কোম্পানিগুলির। বেরিলিয়াম, নিওবিয়াম, টাইটানিয়াম, জিরকোনিয়ামের মতো খনিজ সম্পদও তালিকায় রয়েছে। কয়েকদিন আগেই লিথিয়ামের খোঁজ মিলেছে কাশ্মীরে।
উত্তরপূর্বেও মাটির নিচে অঢেল প্রাকৃতিক সম্পদ আছে। তবে কি সেই বিপুল সম্পদ আগামী দিনে ভূগর্ভ থেকে তুলে এনে নিলামের পথে কোনও বাধা যাতে না আসে, সে জন্যই উত্তরপূর্বে জাতিদ্বন্দ্ব সৃষ্টি করা হয়েছে, সুচতুর কৌশলের অঙ্গ হিসাবে। মানুষের জীবনের চেয়েও বেশি দামি প্রাকৃতিক সম্পদ?