সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: ডাক্তারির প্রবেশিকা পরীক্ষা নিট-এ প্রশ্নপত্র ফাঁস ও বিক্রি, তারপরে প্রশ্ন ফাঁসের জেরে কলেজ শিক্ষকদের যোগ্যতা নির্ণায়ক পরীক্ষা নেট বাতিলের পরে মুখ পুড়েছে বিজেপি সরকারের। সুযোগ বুঝে তোপ দাগছে বিরোধীরা। এই অবস্থায় একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করল কেন্দ্রের শিক্ষা মন্ত্রক। ন্যাশনাল টেস্ট এজেন্সির যাবতীয় কার্যক্রম এবং কাজের পদ্ধতি খতিয়ে দেখবে এই কমিটি। নিট, নেট-সহ গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষায় স্বচ্ছতা আনতে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেবেন কমিটির সদস্যরা। দুমাসের মধ্যে মন্ত্রককে রিপোর্ট দেবে তারা। এদিকে আজই গ্রেটার নয়ডা থেকে প্রশ্নপত্র ফাঁসকাণ্ডে মূল পান্ডা রবি অত্রিকে গ্রেপ্তার করেছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ।
সাত সদস্যের কমিটিতে রয়েছেন ইসরোর প্রাক্তন চেয়ারম্যান ড. কে রাধাকৃষ্ণন, এইমস দিল্লির প্রাক্তন ডিরেক্টর ডা. রণদীপ গুলেরিয়া, হায়দরাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বি জে রাও, আইআইটি মাদ্রাজের অধ্যাপক রামমূর্তি কে, কর্মযোগী ভারতের সহ-প্রতিষ্ঠাতা পঙ্কজ বনসল, আইআইটি দিল্লির ডিন আদিত্য মিত্তল এবং শিক্ষা মন্ত্রকের যুগ্ম সচিব গোবিন্দ জয়সওয়াল। উচ্চ পর্যায়ের এই কমিটি যে বিষয়গুলি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেবে, সেগুলি হল পরীক্ষা পদ্ধতি, তথ্যের গোপনীয়তা, ন্যাশনাল টেস্ট এজেন্সির কার্যক্রম এবং কর্মপদ্ধতি। আগামী দুই মাসের মধ্যে মন্ত্রককে রিপোর্ট দেবে এই কমিটি।
[আরও পড়ুন: তিস্তা চুক্তি নিয়ে সদর্থক বার্তা মোদির, ভারতকে ‘বিশ্বস্ত বন্ধু’ বললেন হাসিনা]
এদিকে শনিবার গ্রেটার নয়ডায় নিমকা গ্রাম থেকে রবি অত্রিকে গ্রেপ্তার করেছে উত্তরপ্রদেশ টাস্ক ফোর্স। এই রবিকে নিট দুর্নীতির মূল পান্ডা মনে করা হচ্ছে। নিটের প্রশ্নপত্র ফাঁসকাণ্ডে আগেই ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। এর পর ঝাড়খণ্ড থেকে এই কাণ্ডের আরেক সন্দেহভাজন মূলচক্রী সিকন্দর যাদবেন্দ্র-সহ পাঁচ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
[আরও পড়ুন: অটল সেতুতে ফাটল! কংগ্রেসের অভিযোগ উড়িয়ে দিল বিজেপি]
লোকসভা ভোটের প্রচারে বিরোধীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতিকেই প্রধান অস্ত্র করেছিল বিজেপি। ভোটের মুখে গ্রেপ্তার হন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল, ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন প্রমুখ। প্রশ্নপত্র ফাঁসকাণ্ডে উলটো অভিযোগ উঠছে গেরুয়া শিবিরের বিরুদ্ধেই। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী অভিযোগ করেছেন, সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাথায় বিজেপি এবং আরএসএসের মধ্যমেধার অযোগ্য লোকেদের বসানোর ফলেই শিক্ষা ব্যবস্থায় ‘জরুরি অবস্থা’ তৈরি হয়েছে। রাহুল আরও দাবি করেন, মোদি সরকারের আমলে গত সাত বছরে ২০টি সরকারি চাকরি বা প্রবেশিকা পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে। সব মিলিয়ে চাপে নরন্দ্র মোদি, অমিত শাহ জুটি।