অর্ণব আইচ: কথায় বলে, ভালোবাসার জন্য জান কবুল। কিন্তু বাস্তবে জান নয় বরং প্রেমের জন্য খুন কবুল। তাও আবার নিজের মাকে! মায়ের অপরাধ কী? ১৪ বছর বয়সি মেয়ের প্রেম মেনে নেননি তিনি। মেয়েকে নিত্যদিন বকাবকি করতেন। সেই শাসন থেকে রেহাই পেতে রাতের আঁধারে নাবালক প্রেমিককে ডেকে পাঠিয়েছিল কিশোরী প্রেমিকা। রীতিমতো ছক কষে বাবার সামনে মাকে খুন করে দুজনে। এখানেই শেষ নয়, মুখ খুললে বাবাকেও দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেওয়ার হুমকিও দিয়ে রেখেছিল প্রেমী যুগল। কিন্তু কথায় আছে, ধর্মেক কল বাতাসে নড়ে! শেষপর্যন্ত সোমবার পুলিশের জালে পড়ল দুজনে। জেরায় নিজেদের অপরাধের কথা স্বীকার করে নেয় তারা। ঘটনাটি ঘটেছে খাস কলকাতা-ঠাকুরপুকুরে।
পুলিশ সূত্রে খবর, বছর দেড়েক আগে ১৪ বছরের এক কিশোরী ফেসবুকে একটি ছেলের প্রেমে পড়ে। বাড়িতে জানাজানি হতেই সম্পর্কটা মানেনি পরিবার। উলটে মা চায়না স্যানাল বকাবকি শুরু করে তাকে। তার পর থেকেই মাকে খুনের ছক কষেছিল মেয়েটি। ৬ জুন গভীর রাতে মধ্যমগ্রাম থেকে নিজের প্রেমিককে ডেকে পাঠায় সে।
[আরও পড়ুন: ‘নিয়মের বেড়াজালে আটকাচ্ছে কাজ’, মুখ্যমন্ত্রীকে হস্তক্ষেপের আর্জি টলিউড পরিচালক-প্রযোজকদের]
তখন ঘরে পাশাপাশি ঘুমোচ্ছিলেন চায়নাদেবী ও তাঁর স্বামী বাদল স্যানাল। এমন পরিস্থিতিতেই চায়নাদেবীর শ্বাসরোধ করে খুন করে তাঁর মেয়ে ও মেয়ের প্রেমিক। মৃত্যু নিশ্চিত করতে মেয়েটির প্রেমিক তাঁর বুকে ঘুষিও মারে। বাদলবাবুকে আগেই ধাক্কা দিয়ে বিছানা থেকে ফেলে দিয়েছিল তারা। খুনের পর বাদলবাবুকে মুখ বন্ধ রাখার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। মুখ খুললে তাঁকেও দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেওয়ার হুমকি দেয় মেয়ে ও তার প্রেমিক। পর দিন সকালে ডাক্তার স্বাভাবিক মৃত্যুর সার্টিফিকেট দেয়। চায়নাদেবীর দেহ দাহও করে দেওয়া হয়।
কিন্তু মেয়ে ও মেয়ের প্রেমিকের কুকীর্তি চেপে রাখতে পারেননি বাদলবাবু। প্রতিবেশীদের পুরো ঘটনা জানিয়ে দেন তিনি। এর পর সোমবার সকালে ওই ছেলেটিকে ঠাকুরপুকুরে ডেকে পাঠানো হয়। সে এলে পুলিশে খবর দিয়ে ধরিয়ে দেয় প্রতিবেশীরা। একটানা জেরায় ভেঙে পরে শেষ অবধি নিজেদের অপরাধের কথা স্বীকার করে নেয় দুজনে।