সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কমনওয়েলথ গেমসের (Commonwealth Games) সর্বকালীন রেকর্ড গড়ে সোনা জিতেছেন তিনি। বাকি প্রতিযোগীদের বহু পিছনে ফেলে সোনা জিতেছেন তিনি। অলিম্পিকে রুপোর পরে কমনওয়েলথ গেমসে সোনা, দেশজুড়ে জোর চর্চা মণিপুরের মেয়েকে নিয়ে। সেই মীরাবাই চানু (Mirabai Chanu) স্বীকার করেছেন, সেরকম কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখোমুখিই হতে হয়নি তাঁকে। প্রতিদ্বন্দ্বীরা সেরকম কঠিন চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিতে পারেননি তাঁকে। ফলে চানুর কাছে প্রতিযোগিতা ছিল বেশ ‘বোরিং’। নিজের সঙ্গেই লড়াইয়ে নেমেছিলেন ভারতের ‘সোনার মেয়ে’ চানু।
২০২০ সালের টোকিও অলিম্পিকে রুপো জিতেছিলেন চানু। তাই কমনওয়েলথ গেমসে সোনার পদক পাবেন চানু, এটা প্রত্যাশিতই ছিল। কিন্তু ভারোত্তোলনের ৪৯ কেজি বিভাগে বার্মিংহ্যামে যেভাবে পারফরম্যান্স করলেন তিনি, তা দেখে মুগ্ধ ক্রীড়ামহল। মাত্র দু’ বার লিফট করেই সোনার পদক নিশ্চিত করে ফেলেছিলেন চানু। তারপরেও আরও বেশি ওজন তোলার চ্যালেঞ্জ নিয়েছিলেন। প্রসঙ্গত, কমনওয়েলথ গেমসে অংশ নেওয়ার আগেই চানু জানিয়েছিলেন, বার্মিংহ্যামে তাঁর লড়াই মূলত নিজের সঙ্গেই।
[আরও পড়ুন: ১১ বছর বয়সে পিতৃহারা, জরির কাজ করে চলত সংসার, কঠিন পথ পেরিয়ে ইতিহাসের পাতায় অচিন্ত্য]
একটি সাক্ষাৎকারে চানু বলেছেন, “প্রতিযোগিতা শুরু হওয়ার আগে থেকেই জানতাম, আমার কাজটা সহজই হবে। তবে এই প্রতিযোগিতা ঘিরে আমার নিজস্ব কিছু পরিকল্পনা ছিল। আমি চেয়েছিলাম আরও উন্নতি করতে। তার ফলে আগামী দিনে যেসব প্রতিযোগিতায় নামব, সেখানে আরও ভালভাবে পারফর্ম করতে পারব। কিন্তু একথাও সত্যি, কঠিন প্রতিযোগীদের মুখোমুখি না হলে লড়াইটা খুবই একঘেয়ে হয়ে যায়।”
কমনওয়েলথ গেমসে তিনটি সোনার পদক রয়েছে চানুর ঝুলিতে। শুধু তাই নয়, ভারোত্তোলনে বিশ্বচ্যাম্পিয়নও হয়েছেন তিনি। তার মধ্যে কড়া প্রতিদ্বন্দ্বীর অনুপস্থিতিতে ভাল পারফর্ম করার মোটিভেশন পাওয়াও খুব কঠিন হয়ে যায়। কিন্তু সেই কথা মাথাতেই আনেননি চানু। তিনি বলেছেন, “এই প্রতিযোগিতায় নিজের সঙ্গেই লড়াই করতে চেয়েছি। আমার কোচ বলেছিলেন, ”তুমি যা পরিশ্রম করেছ, তার প্রতিফলন দেখা যাবে এই মঞ্চে।”
এই কথা শোনার পরে বেশ মানসিক জোর পেয়েছিলাম। শান্ত মনে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছিলাম। ভেবেছিলাম, আমি এতদিন যেভাবে নিজেকে তৈরি করেছি, সেইভাবেই প্রস্তুতি চালিয়ে যাব। আমার পারফরম্যান্স আরও উন্নত করার চেষ্টা করতে থাকব। সেই কথা মাথায় রেখেই কমনওয়েলথ গেমসে পারফরম্যান্স করেছি।”
প্রসঙ্গত, বেশ কিছু খেলোয়াড়ের মুখেই শোনা গিয়েছে, সর্বোচ্চ মানের প্রতিদ্বন্দ্বিতা একজনের থেকে সেরাটা বের করে নেয়। প্রতিদ্বন্দ্বিতা তীব্র না হলে সংশ্লিষ্ট প্রতিযোগী ভাল খেলার তাগিদও পান না। চানুর এহেন মন্তব্যের পরে ফের প্রশ্ন উঠে গেল, প্রতিযোগিতা শুরুর আগেই সাফল্য সম্পর্কে যেখানে একশো শতাংশ নিশ্চয়তা থাকে, সেরকম ক্ষেত্রে কি আদৌ অংশ নেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে? চানু কিন্তু অনেক প্রশ্ন তুলে দিয়ে গেলেন।