অর্ণব আইচ: এ যেন রূপালি পর্দার ‘স্পেশ্যাল ২৬’র বাস্তব সংস্করণ! সিবিআই তল্লাশির নামে ব্যবসায়ীর বাড়ি থেকে লক্ষ-লক্ষ টাকা নিয়ে গায়েব দুষ্কৃতীরা। সিবিআই (CBI) আধিকারিক বলে পরিচয় দিলেও হাতে ধরা ডান্ডা। তাতেই ভড়কে গেলেন ব্যবসায়ী। আর সেই সুযোগে বাড়ি তল্লাশির অছিলায় নগদ ত্রিশ লক্ষ টাকা ও প্রচুর সোনার গয়না নিয়ে চম্পট দিল দুষ্কৃতী দলের সাত-আট সদস্য। সোমবার সকাল আটটা নাগাদ ভবানীপুর রূপচাঁদ মুখার্জি লেনের এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে এই দুষ্কৃতী হানায় নড়ে বসেছে কলকাতা পুলিশ প্রশাসন।
ব্যবসায়ী সুরেশ ওয়াধার বাড়িতে সিসিটিভি না থাকলেও আশপাশের সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করেছে পুলিশ। সূত্রের খবর, পুলিশ লেখা একটি গাড়িতে ওই ব্যবসায়ীর বাড়িতে সাত-আটজনের দল এসে হানা দেয়। নিজেদের সিবিআই আধিকারিক বলে পরিচয় দিয়ে বাড়ি তল্লাশির কথা জানায়। এরপর নগদ ত্রিশ লক্ষ টাকা ও প্রচুর সোনার গয়না নিয়ে ‘সিজার’ লিস্ট বানায় ব্যবসায়ীর সামনে। তবে সেই লিস্টের কপি যেমন দেয়নি ব্যবসায়ীকে, তেমনই কোন অফিস থেকে কী কারণে এই হানা তাও জানানো হয়নি। ব্যবসায়ীর এইসব প্রশ্নে তারা বলে, ‘আমরাই আপনাকে ডেকে নেব।’
[আরও পড়ুন: মেঘালয়ে জিতলে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, আমজনতার মন পেতে কৌশলী মমতা]
বেশ খানিকক্ষণ ধরে এই ‘অপারেশন’ করে দুষ্কৃতীরা চলে যাওয়ার পর ওই ব্যবসায়ী সন্দেহবশে ভবানীপুর থানায় গিয়ে বিস্তারিত জানান। পুলিশ তখনই সন্দেহ করে। এরপর অভিযোগ দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে। পুলিশের সন্দেহ এই দুষ্কৃতী হানার পিছনে ব্যবসায়ীর জানাশোনা কেউ থাকতে পারে। কারণ, ওই দুষ্কৃতীরা বড় বাড়ি ও একাধিক ঘর থাকা সত্ত্বেও সেই ঘরেই ঢুকে তল্লাশির নামে আলমারি খোলায়, যেখানে ছিল টাকা ও সোনার গয়না। ফলে এই তথ্য পরিচিত ছাড়া অন্য কারও জানার কথা নয়।
সিবিআই লাঠিধারী হয়ে হানা দেয় না। মূলত আতঙ্কগ্রস্ত করতেই হাতে লাঠি ও পুলিশের মতো শক্ত সমর্থদের দলে আনা হয়েছিল বলে তদন্তকারীদের অনুমান। এতে একটা গোপন চক্র সক্রিয় থাকতে পারে। এজন্য পুলিশ ব্যবসায়ীর বাড়ি ও কর্মস্থলের কয়েকজনকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে।