shono
Advertisement

কীর্তি তিন পর্যটকের! হাম্পির স্তম্ভে ভাঙচুরের তদন্ত শুরু

তদন্তে পুলিশ।
Posted: 09:56 AM Feb 04, 2019Updated: 09:56 AM Feb 04, 2019

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ২০১৯-এ বিশ্বের যে জায়গাগুলি না দেখলে জীবনটাই বৃথা, তার একটা তালিকা প্রকাশ করেছিল নিউ ইয়র্ক টাইমস। জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে প্রকাশিত, সেই ৫২টি ‘যেতেই হবে’-র তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে ছিল ভারতের প্রাচীন সাম্রাজ্য বিজয়নগরের ধ্বংসাবশেষ হাম্পি। প্রায় সাড়ে ছ’শো বছরের পুরনো স্থাপত্য। ইউনেস্কোর বিচারে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের তকমা পাওয়া সেই হাম্পিতেই সম্প্রতি তিন পর্যটককে দেখা গেল কারুকার্যে ভরা এক একটি গ্রানাইট স্তম্ভকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে টুকরো টুকরো করে ভাঙতে।

Advertisement

[পুরীর সমাবেশে রাম মন্দির নিয়ে বিশেষ ঘোষণা অমিত শাহর]

ইন্টারনেটেই ভাইরাল হয়েছে ঘটনাটির ভিডিও। যা দেখে রক্ত গরম হয়ে গিয়েছে নেটিজেনদের। অবিলম্বে ওই অভিযুক্তদের কড়া শাস্তির দাবিতে মুখর হয়েছে তারা। নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসনও। আন্তর্জাতিক দুনিয়ার নজর রয়েছে যে ঐতিহাসিক এলাকার উপর সেখানে নিরাপত্তার এমন অভাব বিশ্বের দরবারে মুখ ডুবিয়েছে কর্নাটকের। প্রশ্ন উঠেছে, নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও কীভাবে এমন ঐতিহাসিক এলাকায় ঢুকে বেপরোয়া ভাঙচুড় চালাতে পারে অনুপ্রবেশকারীরা? ঘটনার জেরে ইউনেসকো অনুদিত বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী এলাকা হিসাবে চিহ্নিত হাম্পিতে বেপরোয়া ভাঙচুড়ের অভিযোগ দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে স্থানীয় বল্লারি পুলিশ ও তদন্তকারীরা। যদিও অভিযুক্তরা এখনও অধরাই। ইনস্টাগ্রামে ‘ডিজিটাল আয়ুষ’ নামের একটি অ্যাকাউন্ট থেকে প্রথম পোস্ট করা হয় ভিডিওটি। পরে তা ভাইরাল হতেই ইনস্টাগ্রাম থেকে ডিলিট করে দেওয়া হয় ওই অ্যাকাউন্ট। যদিও ভিডিওটি ঠিক কবেকার, অর্থাৎ ঘটনা কোন সময় ঘটেছে, তা নিয়ে বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে। ফলে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করার ব্যাপারেও খুব বেশি এগোতে পারেনি পুলিশ। কর্নাটকের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এম বি পাটিলের দাবি, ওই ভিডিও তিন বছর আগেকার। যদিও পুলিশ ঘটনার সময় নিয়ে কোনও মন্তব্য করেনি। তবে ভিডিওটি খুঁটিয়ে দেখে পরীক্ষা করা শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন বল্লারির পুলিশ সুপার অরুণ রঙ্গরাজন। তিনি বলেন,“ঘটনার সঙ্গে চার থেকে পাঁচ জন জড়িত। যতদ্রুতসম্ভব অভিযুক্তদের গ্রেফতার করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে।”

ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, একটি প্রাচীন পাথরের স্তম্ভকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিচ্ছে তিন যুবক। স্তম্ভটি মাটিতে পড়ে ভেঙে যেতেই উল্লাসে ফেটে পড়ছে তারা। পাশেই সার দিয়ে পড়ে রয়েছে একইভাবে ভেঙে যাওয়া এমন ১৪-১৫টি পাথরের স্তম্ভ। ভিডিওতে দেখা না গেলেও অনুমান, ওই স্তম্ভগুলিও ফেলে ভেঙেছে ওই তিন দুষ্কৃতীই। তবে সেগুলির ভিডিয়ো পাওয়া যায়নি। প্রায় দু’মানুষ উঁচু এক একটি পাথরের স্তম্ভ। সাড়ে ছ’শো বছর আগে যা তৈরি করেছিল ভারতের প্রাচীন রাজ্য বিজয়নগরের স্থপতি আর শিল্পীরা। মোনোলিথিক প্রক্রিয়ায়। অর্থাৎ এক একটি স্তম্ভ তৈরি একটি মাত্র গ্রানাইট পাথর থেকেই। জোড়া দিয়ে নয়। তুঙ্গাভদ্রার অপর পারে বিজয়নগরের সমসাময়িক এক মুসলিম রাজ্য ছিল। নাম বাহমণি। সেখানকার সৈন্যদের আক্রমণ থেকে বঁাচাতেই এভাবে মজবুত বানানো হত স্তম্ভগুলিকে। সবরকম স্থাপত্যেই ব্যবহার হত স্তম্ভের। যাতে সহজে তঁাদের বহু কষ্টের কাজ নষ্ট না হয়ে যায়। হাম্পির বিরুপাক্ষ মন্দির থেকে শুরু করে কল্যাণমণ্ডপ, মুক্তমঞ্চ হোক বা বসন্তমণ্ডপ, এমনকী সুউচ্চ রায়গোপুরা মিনারেও ব্যবহার করা হয়েছে আলঙ্কারিক এই গ্রানাইটের স্তম্ভগুলি। প্রায় সমস্ত ভবন এবং অন্যান্য কাঠামোতেও রয়েছে স্তম্ভের ব্যবহার। ভিডিওয় যে স্তম্ভগুলি ভাঙতে দেখা গিয়েছে, সেগুলিও আলঙ্কারিক স্তম্ভ। স্তম্ভগুলির উপরের অংশ রয়েছে পাথর কাটা কারুকাজ। গায়ে পাথর খোদাই করে অলঙ্করণ করা হয়েছে। যে স্থাপত্যটির লাগোয়া ওই স্তম্ভগুলি, তার ছাদ ছিল না। ভিডিওয় দেখা গিয়েছে তিনজন ব্যক্তি ওই স্তম্ভগুলিকে একসঙ্গে ধাক্কা দিচ্ছে মাটিতে ফেলে দেওয়ার জন্য। যা দেখে তুমুল আলোড়ন ছড়িয়েছে ইন্টারনেটে।

[স্ত্রী ও শিশুকন্যাকে গলা কেটে খুন যুবকের, দেহ জ্বালিয়ে দিল প্রেমিকা]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement
toolbarHome ই পেপার toolbarup ছাঁদনাতলা toolbarvideo শোনো toolbarshorts রোববার