সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিতর্ক যেন কিছুতেই পিছু ছাড়েনা কাঞ্চন-শ্রীময়ীর। বছরের শুরু থেকে শেষ চর্চায় তারকাদম্পতি! কাঞ্চন তাই রসিকতা করেই নিজের নাম রেখেছেন 'কাঞ্চন বিতর্ক মল্লিক' (Kanchan Mallick)। এবার মেয়ের জন্মের হাসপাতালের বিল নিয়ে ফের চর্চার শিরোনামে কাঞ্চন। গত নভেম্বর মাসে অন্নকূটের দিন কন্যাসন্তান এসেছে তাঁদের সংসারে। আর হাসপাতালের পাহাড়প্রমাণ সেই বিল নিয়েই এবার বিতর্কে জড়ালেন বিধায়ক-অভিনেতা।
জানা গিয়েছে, সন্তান প্রসবের সময়ে হাসপাতালে চিকিৎসা বাবদ কাঞ্চন-শ্রীময়ীর খরচ হয়েছে ৬ লক্ষ টাকা। সেই বিল বিধানসভায় জমা পড়তেই রীতিমতো চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছে। সাধারণত বিধায়করা তাঁর নিজস্ব কিংবা স্ত্রীর চিকিৎসার ক্ষেত্রে হাসপাতালের বিল বিধানসভায় জমা দেওয়ার সুযোগ পান। সেই টাকা তাঁরা ফেরতও পান। বহু বিধায়কের জটিল রোগের চিকিৎসার খরচ বহন করেছে বিধানসভা। মেডিক্যাল বিলের ক্ষেত্রে কোনও ঊর্ধ্বসীমা থাকে না। শুধুমাত্র চশমার ক্ষেত্রে খরচের উর্ধ্বসীমা বাঁধা রয়েছে, ৫ হাজার টাকা। তারপরেও সন্তান ডেলিভারির বিল ৬ লক্ষ টাকা হওয়ায় চর্চা শুরু হয়েছে। জানা গিয়েছে, বেসরকারি হাসপাতালের খরচ ২ লক্ষ টাকা। আর চিকিৎসকের খরচ ৪ লক্ষ টাকা। এই বিষয়েই বিতর্ক তুঙ্গে। কাঞ্চন মল্লিক যদিও জানিয়েছেন, "আমরা বিধায়ক হিসেবে একটা মেডিকেল পাই। সেই হিসাবে আমি বিল জমা দেব। তবে আমি কোনও বিল জমাই দিইনি। আর কতটা বিল হয়েছে, সেটা একান্তই আমার ব্যক্তিগত বিষয়।" এদিকে কাঞ্চন বিতর্কে জড়াতেই বেজায় চটেছেন স্ত্রী শ্রীময়ী চট্টরাজ (Sreemoyee chattoraj)।
সপাটে জানালেন, "আমরা কোনও অপরাধমূলক কাজ করিনি। অনধিকার চর্চা করবেন না।" এই মুহূর্তে কাঞ্চন-শ্রীময়ী ডুয়ার্সে বেড়াতে গিয়েছেন। সেখান থেকেই নিন্দুকদের তোপ দেগে পোস্ট করলেন শ্রীময়ী। ফেসবুকে তিনি লিখেছেন, 'আমার আর কাঞ্চনের সন্তান হওয়ার সময় কেন ডাক্তারবাবুর ফি চার লক্ষ টাকা। আর নার্সিংহোমের ফি দু লক্ষ টাকা। ছয় লক্ষ টাকা কেন খরচা করেছি, আর সেই বিল কি কাঞ্চন বিধানসভায় জমা দিয়েছে, প্রথমত যারাই প্রশ্নটা করছেন আমি তাদের উদ্দেশ্যে বলছি, বিধানসভায় বিল জমা দিয়েছে কি দেয়নি সেই বিষয়ে আমি উত্তর দেওয়ার কেউ নই তার কারণ আমি বিধানসভার সদস্য নই। আর আমার স্বল্প অভিজ্ঞতায় যেটা বলে, যা দেখেছি এতকাল ধরে, সেটা যে কোনও সরকারি কর্মচারীরা রাজ্য সরকার বা কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারী হোক, তারা তাদের মেডিকেল পরিষেবাটা পান। এটাই সরকারি কর্মচারীদের একটা বড় সুবিধা। এবার আসি দ্বিতীয় প্রসঙ্গে "ডাক্তারবাবুর ফি কেন চার লক্ষ টাকা", আমি একটা কথা খুব ভালোভাবে জানতে চাই আমি একজন নবীন অভিনেত্রী হিসেবে, আমার যা পারিশ্রমিক হবে, সেটা নিশ্চয়ই একজন বর্ষীয়ান অভিনেতা বা অভিনেত্রীর পারিশ্রমিক হবে না। আর সেই বিষয় নিয়ে, তার কেন বেশি আমার কেন কম, এটা নিয়ে নিশ্চয় আমার কথা বলা শোভা পায় না।'
শেষপাতে শ্রীময়ী লেখেন, 'আমার একটাই অনুরোধ যাঁরা এই ধরনের কথা বলছেন, তাদেরকে বলব যে প্লিজ অনেক কিছু নিয়ে কথা বলার, সমালোচনা করার বা চর্চা করার বিষয় রয়েছে কাঞ্চন মল্লিক আর শ্রীময়ী চট্টরাজের কটা বাচ্চা হল বা কোথায় হল বা কত টাকা খরচা হল? কত মাসে হল? সিজার হল নাকি নরমাল ডেলিভারি হল নাকি ফর্সেপ হল, এই ধরনের চর্চা করে নিজেদের শিক্ষার পরিচয়টা আর বাড়াবেন না, সর্বোপরি বলবো এগুলো ছাড়াও সমাজের অনেক বিষয় আছে চর্চা করার, আলোচনা করার, সমালোচনা করার, ওগুলোতে ফোকাস করুন। দয়া করে আমাদের জন্য নিজেদের মূল্যবান সময় নষ্ট করবেন না। আমাদের অযথা ভ্যালুয়েবল বানিয়ে দেবেন না। এই পৃথিবীর অনেকেই মা হয়েছেন, তাদের নিজেদের মতো করে, নিজেদের ইচ্ছা অনুযায়ী এবং একান্ত ব্যক্তিগতভাবে। নিজেদের পছন্দমত ডাক্তার বা নার্সিংহোমের তালিকায়। তাই আমি কোনও বিরল মা নই।'