অর্ণব দাস, বারাসত: বারাকপুর শিল্পাঞ্চলে অর্জুন সিং বনাম সোমনাথ শ্যাম দ্বন্দ মেটাতে নৈহাটি গিয়েও খালি হাতে ফিরতে হল তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সিকে। শনিবার বিকেলে নৈহাটি পুরসভায় রাজ্য তৃণমূল সভাপতির ডাকে অর্জুন গেলেও উপস্থিত হননি জগদ্দলের বিধায়ক সোমনাথ। তাই ঘন্টা খানেকের বেশি অপেক্ষা করার পর বাধ্য হয়েই পুরসভা থেকে বেরিয়ে যান সুব্রত। যদিও এদিনের বৈঠক হবে এমনটা জানতে না বলেই জানান সোমনাথ শ্যাম। জগদ্দলের বিধায়কের কথায়, “নৈহাটিতে এদিন সুব্রত বক্সি বৈঠক করবেন এমন খবর আমার কাছে ছিল না। আমাকে ডাকাও হয়নি। জানলে দলের অনুগত কর্মী হিসেবে অবশ্যই যেতাম।”
প্রসঙ্গত, বারাকপুরের সাংসদ এবং জগদ্দলের দলীয় বিধায়কের এই দ্বন্দ্ব নতুন নয়। তবে এই দ্বন্দ্ব ফের মাথা চাড়া দেয় ভাটপাড়া তৃণমূল কর্মী ভিকি যাদব খুনের ঘটনায় অর্জুনকে সোমনাথ শ্যাম নিশানা করার পর। চলতি মাসের ২১তারিখ অর্জুনের ভাইপো পাপ্পুকে পুলিশ গ্রেপ্তার করলে সাংসদ বিধায়কের দ্বন্দ্বের পারদ আরও চড়ে। বছর ঘুরলেই লোকসভা নির্বাচন। তার আগে বারাকপুর শিল্পাঞ্চলের এই গোষ্ঠীকোন্দলে অস্বস্তি বাড়ে শাসকদলের অন্দরে। এই দ্বন্দ্বের ইতি টানতে অর্জুনকে এবিষয়ে মুখ খুলতে বারণ করেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি।
[আরও পড়ুন: এশিয়ান কাপের দল ঘোষিত, প্রীতমের কামব্যাক, স্টিমাচের দলে মাত্র দুজন বঙ্গসন্তান]
ঠিক হয়েছিল চাকলায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভার পর শনিবার অর্জুন এবং সোমনাথকে নিয়ে একসঙ্গে বসে দ্বন্দ্ব মেটাবেন দলের রাজ্য সভাপতি। উত্তর ২৪ পরগনা জেলা নেতৃত্বরাও এদিনের বৈঠকের দিকে তাকিয়ে ছিলেন। এনিয়ে এদিন দুপুরে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ জানান, “দলের রাজ্য সভাপতি যাবেন। নিশ্চয়ই সুরাহা হবে।” সেইমতো বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ ভাটপাড়া থেকে অর্জুন সিংকে সঙ্গে নিয়ে সুব্রত বক্সি পৌঁছান নৈহাটি পুরসভায়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন পুরসভার চেয়ারম্যান অশোক চট্টোপাধ্যায়, চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিল সনৎ দে-সহ অন্যান্যরা। ঘন্টাখানেকের বেশি সময় অপেক্ষা করার পর সোমনাথ না আসায় অর্জুনের সঙ্গে নিয়ে সেখান থেকে বের হন সুব্রত বক্সি। সাংসদ অর্জুন সিং বলেন, “দলের উচ্চ নেতৃত্ব রয়েছে। তাই এ বিষয়ে আমি কোনও মন্তব্য করব না।”
যদিও সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে এ দিনের বৈঠক সম্পর্কে কিছুই বলেননি সুব্রত বক্সি। তবে তিনি নৈহাটি উৎসবে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, “যারা অপপ্রচার করে দলে দ্বন্দ্ব লাগানোর চেষ্টা চালাচ্ছেন তাঁদের উদ্দেশ্যে বলবো, বৃথা চেষ্টা চালানো হচ্ছে। এভাবে তৃণমূল কংগ্রেসকে ভাঙা যাবে না। কারণ তৃণমূল কংগ্রেস এমন একটি পরিবার যা বাংলার সর্ব স্তরের মানুষকে নিয়ে পরিচালিত হয়।” নৈহাটি উৎসবে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী পার্থ ভৌমিক। বৈঠক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “বক্সিদার নৈহাটি উৎসবে আসার কথা ছিল। উনি এসেছেন। এর বাইরে আমিও কোনদিন কিছু বলিনি, বক্সিদাও কোনও মন্তব্য করেনি।”