ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: তালিকাটা ক’দিন আগেই পৌঁছে গিয়েছে নেতৃত্বের কাছে। নেতারাও মৌখিক ঝাড়াই-বাছাইয়ের কাজ সেরে নিয়েছেন। এই অবস্থায় পুরভোটে তৃণমূলের প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা নিচ্ছেন স্থানীয় বিধায়ক। কারণ প্রথমত, যোগ্যদের নামের তালিকায় পাড়ার কাউন্সিলরের নাম এবং সম্ভাব্য দ্বিতীয় বা তৃতীয় বিকল্পের নাম পাঠিয়েছেন বিধায়কই। আর দ্বিতীয়ত, কাউন্সিলর-সহ বাকি নামগুলির মধ্যে কে ‘যোগ্যতম’, তালিকা ধরে দল প্রাথমিকভাবে সেই খোঁজটাও নিয়ে নিচ্ছে বিধায়কের কাছ থেকেই।
বিধানসভা সদ্যই শেষ হয়েছে বাজেট অধিবেশন। তার আগেই জমা পড়ে যায় যোগ্যদের নামের তালিকা। প্রায় দিন দশেক ধরে চলা সেই অধিবেশনকে কাজে লাগিয়েই পুরদলের নেতৃত্ব বিধায়কদের কাছ থেকে প্রাথমিক রিপোর্ট জেনে নিয়েছেন। সূত্রের খবর, প্রাথমিক রিপোর্ট নিতে গিয়ে যে নেতৃত্ব শুধু বিধায়কের উপরই ভরসা রেখেছে, তেমনটা নয়। নজর রাখা হয়েছে প্রশান্ত কিশোর এবং দলের নিজস্ব সূত্রের রিপোর্টে। দুই রিপোর্ট মিলিয়ে বিধায়কের মতামত নিয়ে তারপরই সিদ্ধান্ত নিতে চাইছে দল।
[আরও পড়ুন: টানা ১৩ বছর বাড়িতেই যৌন নির্যাতনের শিকার, কাঠগড়ায় তিন দাদা]
গত সপ্তাহে কখনও বিধানসভার অলিন্দে, কখনও নিজের ঘরে বসে পুরদলের চেয়ারম্যান ফিরহাদ হাকিম নিজেই একেবারে কাউন্সিলরদের নাম করে করে সেই হদিশ নিয়েছেন বিধায়কদের কাছে। কোনও বিতর্কে কোনও কাউন্সিলরের নাম জড়িয়ে থাকলে, ফিরহাদ নিজেই বিধায়কের কাছে সেই নাম নিয়ে দলের আপত্তির কথা জানিয়ে দিয়েছেন।
অন্য ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, পাড়ার গন্ডগোলে কাউন্সিলরের নাম জড়িয়ে সেই খবর পৌঁছেছে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। সূত্রের খবর, সেইসব বিতর্কিত নাম নিয়ে যাতে কোনও পক্ষপাতিত্ব না হয়, সংশ্লিষ্ট বিধায়কের তা নিয়ে সতর্কবাণীও শুনিয়ে দিয়েছে নেতৃত্ব। সর্বশেষ রিপোর্ট স্ক্রিনিং কমিটির হাতে জমা পড়লে, তারা প্রাথমিকভাবে কমিটির মতামত জানিয়ে দেবেন নেত্রীর কাছে। চূড়ান্ত নামের তালিকা তৈরি করবেন নেত্রী নিজেই। তবে এই প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে নজরে রাখা হয়েছে দলের ইমেজ। তা যাতে কোনওভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেদিকে নজর রেখেই সন্তর্পণে এগোচ্ছে দল।
[আরও পড়ুন: কলকাতায় গাঁটছড়া চিনা দম্পতির, করোনা আতঙ্কে বিবাহবাসরে নেই স্বভূমের প্রিয়জন]
মার্চের শুরুতেই ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা হওয়ার সম্ভাবনা। তার মধ্যেই প্রার্থী তালিকার কাজ সেরে রাখতে চাইছে তৃণমূল। ভোট ঘোষণা হলেই চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করে দেওয়া হবে। এপ্রিলের শেষ থেকে শুরু হতে পারে রমজান মাস। তার আগেই ভোট সেরে নেওয়ার পক্ষে রাজ্য সরকার। তবে প্রার্থী বাছাই নিয়ে কোনওভাবেই মুখ খুলতে নারাজ নেতৃত্ব। সম্প্রতি দলীয় বৈঠকে রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি বারবার স্রেফ একটাই কথা জানিয়ে দিয়েছেন যে, প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে তৃণমূল নেত্রীর সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। সেই সুরেই এক রাজ্য নেতা জানিয়ে দিয়েছেন, “দল কোনও নাম চাপিয়ে দেবে না। স্থানীয়ভাবে খোঁজখবর নিয়ে তবেই প্রার্থীর নাম চূড়ান্ত হবে। সেক্ষেত্রে স্থানীয় নেতৃত্বেরও একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকবে। তবে প্রার্থীর নাম চূড়ান্ত করবেন নেত্রী।”
The post কাউন্সিলর কেমন, পুরভোটের আগে বিধায়কদের মাধ্যমে খোঁজখবর নিচ্ছে শাসকদল appeared first on Sangbad Pratidin.