shono
Advertisement

রাত বাড়লেই ফ্ল্যাটে ফুর্তির ফোয়ারা, হৈমন্তীর উদ্দাম জীবনযাপনে অতিষ্ঠ ছিলেন পড়শিরা

শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এবার নজরে এই 'রহস্যময়ী'।
Posted: 09:47 AM Feb 26, 2023Updated: 09:47 AM Feb 26, 2023

স্টাফ রিপোর্টার: উদ্দাম নাইট লাইফ। রাত বাড়লেই ফ্ল্যাটে ফুর্তির ফোয়ারা। আনাগোনা শুরু ‘রহস্যময়’ নারী ও পুরুষের। অভিনেত্রী তথা মডেল হৈমন্তী গঙ্গোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাটে সারারাত ধরে চলত পার্টি। আবার কখনও ফ্ল্যাটের জানালা দিয়ে বাইরে ছুঁড়ে ফেলা হতো আবর্জনাও। অভিনেত্রীর এই লাইফস্টাইলে রীতিমতো বিরক্ত ছিলেন প্রতিবেশীরা।

Advertisement

শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এবার কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার (ED) স্ক্যানারে রহস্যময়ী নারী হৈমন্তী গঙ্গোপাধ্যায়। এই মামলায় ধৃত তৃণমূল (TMC) যুবনেতা কুন্তল ঘোষই দিয়েছেন এই রহস‌্যময়ী নারীর তথ‌্য। তাঁর দাবি, এই হৈমন্তী গোপাল দলপতির স্ত্রী। বেহালা মুচিপাড়া মোড় ৩৫৯ রাজা রামমোহন রায় রোডে দোতলার ফ্ল‌্যাটে থাকতেন হৈমন্তী ও গোপাল দলপতি ওরফে আরমান। যদিও এলাকায় তিনি ‘গোপালদা’ নামে পরিচিত ছিলেন। জানুয়ারিতেই গোপালকে শেষবারের মতো বাড়িতে দেখা গিয়েছিল। হৈমন্তীকেও দেখা যাচ্ছিল না।

[আরও পড়ুন: এলাকা দখল নিয়ে তুমুল লড়াই, জিতেও নালায় নাকানিচোবানি ‘বিজয়ী’ ষাঁড়ের!]

স্থানীয় এক বাসিন্দা জানাচ্ছেন, “গোপাল ও হৈমন্তী দু’জনে স্বামী-স্ত্রী বলে জানতাম। গোপাল নিজেকে সমাজকর্মী হিসেবে পরিচয় দিতেন। তিনি আর পঁাচটা সাধারণ মানুষের মতোই চলাফেরা করতেন। সকালে পুরসভার জঞ্জালের গাড়ি এলে গোপাল ফ্ল‌্যাটের ঝুলবারান্দা দিয়ে আবর্জনা ভরা প্লাস্টিক দড়ি করে ঝুলিয়ে ফেলে দিতেন। থলে হাতে নিয়ে বাজারও যেতেন। এলাকায় লোকজনের সঙ্গে দেখা হলে টুকটাক কথা বলতেন। কিন্তু হৈমন্তীর জীবনযাত্রা একেবারে ভিন্ন ছিল। তিনি কী করতেন কোথায় যেতেন কেউ কিছুই জানতেন না। তবে তঁার চলাফেরা দেখে সন্দেহ হত। তঁার সাজপোশাকও ছিল একটু অন্যরকমের। স্বল্প পোশাকে বেশিরভাগ সময় তঁাকে দেখা যেত। এমনি সময় খুব একটা বাইরে বের হতেন না। অনেক সময় দেখতাম, তঁাকে নিতে অনেক দামি গাড়ি আসত। স্বল্প পোশাক পরে গাড়িতে উঠে পড়তেন তিনি। শুধু তাই নয়, রাত হলে তঁার ফ্ল‌্যাটে একাধিক মহিলা আসতেন। তঁাদের সাজ পোশাক ও ব‌্যবহার রহস‌্যজনক লাগত। এছাড়াও কিছু বহিরাগতর আনাগোনাও ছিল।”

[আরও পড়ুন: দেড়শো বছর পেরিয়ে স্মৃতির জাদুঘরেই ঠাঁই হবে ট্রামের! কেন উতলা আমবাঙালি?]

প্রতিবেশীদের অভিযোগ, গভীর রাত পর্যন্ত ফ্ল‌্যাটে তঁারা পার্টি করতেন। মদ ও নানারকম নেশার আসর বসত ফ্ল‌্যাটে। বাইরে থেকে খাবারের প‌্যাকেট ঢুকত ফ্ল‌্যাটে। নামী হোটেল থেকে সে সব খাবার আসত। হৈমন্তীর ফ্ল‌্যাটের পাশেই বাড়ি অশোক সাধুখাঁর। তিনি বলেন, “হৈমন্তীর জীবনযাত্রা আমাদের অতিষ্ঠ করে তুলেছিল। রাতভর ঘরে বহিরাগতদের নিয়ে পার্টি করতেন তিনি। মদের বোতল খাবারের প‌্যাকেট জানালা দিয়ে ছুড়ে আমার বাড়ির ফঁাকা জমিতে ফেলতেন। এ নিয়ে একাধিকবার তাকে সতর্ক করেছিলাম। কিন্তু হৈমন্তী বেপরোয়া ছিলেন। কাউকে তিনি যেন তোয়াক্কা করেন না। এমন ভাব প্রকাশ করতেন বোঝাই যেত তঁার মাথার উপর প্রভাবশালীদের হাত রয়েছে। এরকম খাবারের প‌্যাকেট, মদের বোতলের সঙ্গে অনেক কাগজও ছুঁড়ে ফেলতেন জানালা দিয়ে। যেহেতু আমার বাড়ির জমিতে ফেলতেন জমি পরিষ্কারের সময় সেগুলি আবর্জনার সঙ্গে পুড়িয়ে দিতাম। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে ওই সব কাগজ শিক্ষক নিয়োগ মামলার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে।”

আরেক প্রতিবেশী জানান, হৈমন্তীর স্বভাব-চরিত্র দেখে সন্দেহ হত। তঁার বিলাসবহুল জীবন, সাজগোজ এত টাকা কোথা থেকে আসত তা নিয়ে সবসময় তঁারা সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। ওই টাকা নিয়োগ দুর্নীতির কি না তা নিয়েও প্রশ্ন করছেন তঁারা।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement