সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফের সেঞ্চুরির দোরগোড়ায় পিঁয়াজ। অবশেষে উৎসবের মুখে হাল ধরার চেষ্টা করল কেন্দ্রীয় সরকার। শুক্রবার পিঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্র সম্প্রতি সংসদে সংশোধিত অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আইন প্রয়োগ করেছে। কেন্দ্রের তরফে এই আইন প্রয়োগ করে ঘোষণা করা হয়েছে খুচরো বিক্রেতারা ২ টনের বেশি পিঁয়াজ মজুত করতে পারবেন না। পাইকারি বিক্রেতারা সর্বোচ্চ ২৫ টন পর্যন্ত পিঁয়াজ মজুত করতে পারবেন। কেন্দ্রের এই বেঁধে দেওয়া সীমার বাইরে গিয়ে কোনও ব্যবসায়ী পিঁয়াজ মজুত করলে তাঁকে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আইনে গ্রেপ্তার করা হবে।
গত সেপ্টেম্বরেই সংসদের বাদল অধিবেশনে বহু বিতর্কের মধ্যে কৃষি বিলের সঙ্গে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আইনের সংশোধন করা হয়। এই সংশোধনীর ফলে চাল-ডাল-আলু-পিঁয়াজ-সহ সমস্ত পণ্যকেই জরুরি বা অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের তালিকার বাইরে আনা হয়েছে। কিন্তু, আইনে বলা হয়েছে বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে সরকার হস্তক্ষেপ করতে পারবে। যখন কোনও পণ্যের দাম বাজারে ৫০ শতাংশের বেশি বেড়ে যাবে, তখন সরকারকে হস্তক্ষেপ করার অধিকার আইনে দেওয়া আছে। শুক্রবার ক্রেতা সুরক্ষা এবং খাদ্য ও গণবণ্টন মন্ত্রকের সচিব জানান, সংশোধনের পর এই প্রথম অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আইন লাগু করা হল।
[আরও পড়ুন : এলাহি ব্যাপার! নবনিমির্ত সংসদ ভবনে প্রত্যেক সাংসদ পাবেন পৃথক পৃথক কক্ষ]
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযূষ গোয়েল টুইট করে জানান, “বাজারে যাতে ক্রেতারা ন্যায্য দামে পিঁয়াজ পান তা সুনিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার একাধিক পদক্ষেপ করেছে। পিঁয়াজ রপ্তানি আগেই বন্ধ করা হয়েছে। কেন্দ্রের কাছে পিঁয়াজের যে মজুত ভাণ্ডার ছিল, সেখান থেকেও বাজারে পিঁয়াজ সরবরাহ করা হচ্ছে। পিঁয়াজ আমদানির ক্ষেত্রে সব বাধা শিথিল করা হয়েছে। এবার মোদি সরকার পিঁয়াজ মজুত বন্ধ করার জন্য পদক্ষেপ করল।”
মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ ও কর্নাটকের বিস্তীর্ণ অংশে প্রচুর বৃষ্টিপাতের জন্য এবার পিঁয়াজ চাষে ক্ষতি হয়েছে। সেই কারণেই বাজারে পিঁয়াজের ব্যাপক চাহিদা তৈরি হয়েছে। পিঁয়াজ আমদানি করেও এই পরিস্থিতি সামলানো যাচ্ছে না। গতবছরও ঠিক একইরকম পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। উৎসবের মরশুমে পিঁয়াজের চাহিদা আরও বাড়ে। বাজারে এই বিপুল চাহিদার জন্য কোথাও কোথাও ব্যবসায়ীরা পিঁয়াজ মজুত করে কালোবাজারিও শুরু করে দেন। কালোবাজারি চলতে থাকলে দাম আরও লাগামছাড়া হয়। গতবছর পিঁয়াজের কেজি প্রতি দাম দেশের কোনও কোনও অঞ্চলে ২০০ টাকাতেও পৌঁছে গিয়েছিল। এবার সামনেই বিহারে বিধানসভা ভোট। সেই কারণে কালোবাজারি রুখতে কেন্দ্র আগেভাগেই পদক্ষেপ করল বলে রাজনৈতিক মহলের ধারণা। তবে এতে পিঁয়াজের দাম কতটা কমে তা দেখার।