সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সুপ্রিম কোর্টের রায়ে গুজরাট দাঙ্গার কলঙ্ক থেকে মুক্তি পেয়েছেন নরেন্দ্র মোদি। আর তারপরই সংবাদ সংস্থা এএনআইয়ের সামনে মুখ খুলেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বিরোধীদের, বিশেষ করে কংগ্রেসকে একহাত নিয়ে তাঁর মন্তব্য, “১৯ বছর মুখ বুজে মিথ্যাচার সহ্য করেছেন মোদি।”
২০০২ সালে গোধরা পরবর্তী দাঙ্গায় বরাবরই গুজরাটের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে (Narendra Modi) দায়ী করে আসছে বিরোধীরা। সবরমতী এক্সপ্রেসে কর সেবকদের গায়ের আগুনে রাজ্য জ্বলে উঠতে আঙুল উঠেছে গুজরাটের প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর বিরুদ্ধেও। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বারবার বলেছেন। গুজরাটে মুসলিমদের উপর হামলার নেপথ্যে হাত রয়েছে মোদি-শাহ জুটির। কিন্তু সেই সমস্ত জল্পনায় পেরেক পুঁতে শুক্রবার প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে পুনরায় তদন্ত করার আরজি খারিজ করে দিল সুপ্রিম কোর্ট। প্রয়াত কংগ্রেস সাংসদ এহসান জাফরির স্ত্রী জাকিয়া জাফরির (Zakia Jafri) করা মামলাটি যুক্তিগ্রাহ্য নয় বলেই মত শীর্ষ আদালতের ডিভিশন বেঞ্চের। আদালত স্পষ্ট জানিয়ে দেয়ম গুজরাট দাঙ্গার নেপথ্যে কোনও ‘বৃহত্তর ষড়যন্ত্র’ নেই।
[আরও পড়ুন: ৭ বছরের প্রতিবন্ধী নাবালিকাকে ধর্ষণ করে খুন, দোষীর মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ বহাল সুপ্রিম কোর্টেও]
এহেন পরিস্থিতিতে শনিবার সংবাদমাধ্যমে মুখ খোলেন অমিত শাহ। শুরু থেকে আগ্রাসী মেজাজে কংগ্রেসকে নিশান করেন তিনি। শাহ বলেন, “যাদের হাতে শিখদের রক্ত লেগে রয়েছে তারা আমাদের প্রশ্ন করছে?” উল্লেখ্য, সম্প্রতি রাহুল গান্ধীকে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে জেরা করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। প্রতিবাদে দেশজুড়ে বিক্ষোভ ও ‘সত্যাগ্রহ’ অনদলের ডাক দেয় কংগ্রেস। তানিয়ে কটাক্ষ করে শাহ বলেন, “১৯ বছর ধরে সমস্ত মিথ্যাচার মুখ বুজে সহ্য করেছেন মোদিজি। কই, তখন তো কেউ ধরনায় বসেনি। ২০০২ সালের দাঙ্গার পর তিস্তা সেতলওয়াদ-সহও কিছু এনজিও, বিরোধী ও রাজনৈতিক স্বার্থে আগ্রহী সাংবাদিকরা সমস্ত মিথ্যা রটনা করেছে। গোধরার পর যে হিংসা হয় তা থামাতে সেনা নামতে দেরই করেনি গুজরাট সরকার।”
উল্লেখ্য, ২০০২ গুজরাট দাঙ্গা মামলার পিছনে মূল খলনায়ক বর্তমান প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদের এই অভিযোগ দীর্ঘদিনের। এমনকী তৎকালীন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী মোদি (Narendra Modi) দাঙ্গা রুখতে উপযুক্ত পদক্ষেপ করেননি বলেও অভিযোগ উঠেছিল। এ নিয়ে বিস্তর তদন্তও হয়। দীর্ঘ ১৫ বছর পর ২০১৭ সালে সুপ্রিম কোর্ট নির্বাচিত বিশেষ তদন্তকারী দল (স্পেশ্যাল ইনভেস্টিগেশন টিম) মোদি-সহ গুজরাটের শীর্ষ পুলিশ আধিকারিকদের বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ খারিজ করে তাঁদের ক্লিনচিট দিয়ে দেয়। সেই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রথমে গুজরাট হাই কোর্টে (Gujarat High Court) মামলা করেন জাকিয়া জাফরি। কিন্তু গুজরাট হাই কোর্ট তাঁর সেই পিটিশন খারিজ করে দেয়। এরপর গুজরাট হাই কোর্টের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে শীর্ষ আদালতে আবেদন জানান জাকিয়া। সর্বোচ্চ আদালত সেই মামলা গ্রহণও করে। বিচারপতি এ এম খানউইলকরের নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ মামলা পুনরায় শুরু করার সিদ্ধান্ত নেন। বেশ কিছুদিন ধরে মামলাটির শুনানি চলছিল। কিন্তু শুক্রবার শীর্ষ আদালত জানিয়ে দিল, জাকিয়া জাফরির করা মামলা কোনও গ্রহণযোগ্য যুক্তি নেই।