shono
Advertisement

‘কে আছে, কে নেই, সেসব ভাবি না’, টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ জেতা নিয়ে আত্মবিশ্বাসী শামি

'সংবাদ প্রতিদিন'কে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে কী কী বললেন টিম ইন্ডিয়ার পেসার?
Posted: 03:03 PM May 20, 2021Updated: 03:03 PM May 20, 2021

আলাপন সাহা: বুধবারই মুম্বই উড়ে গেলেন। সেখানে এখন চোদ্দোদিনের কোয়ারান্টাইনে থাকতে হবে। তারপর গন্তব্য ইংল্যান্ড। প্রথমে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল। তারপর ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে পাঁচ টেস্টের সিরিজ। প্রায় সাড়ে তিন মাসের লম্বা সফর। মুম্বই উড়ে যাওয়ার আগে সংবাদ প্রতিদিন-কে দেওয়া এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে মহম্মদ শামি (Mohammad Shami)।

Advertisement

প্রশ্ন: কলকাতার করোনা পরিস্থিতির কথা শুনেছেন?
শামি: শুনেছি। খুব খারাপ লাগছে। পুরো দেশেই করোনা পরিস্থিতি বেশ খারাপ। সবাইকে বলছি, খুব প্রয়োজন না থাকলে প্লিজ কেউ বাইরে যাবেন না। এই সময়টা আমাদের কাছে প্রচণ্ড চ্যালেঞ্জিং। লড়াইটা সবাইকে জিততে হবে।
প্রশ্ন: আপনাদের তো এখন মুম্বইয়ে ১৪ দিনের কোয়ারান্টাইন।
শামি: হ্যাঁ, কিছু করার নেই। এখানে বায়ো-বাবলে থেকে তারপর ইংল্যান্ডে গিয়ে আর একটা বায়ো-বাবল। ওখানেও বেশ কিছুদিন কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে।

[আরও পড়ুন: আগামী তিন জন্মে কী করতে চান? মনের কথা জানালেন সৌরভ]

প্রশ্ন: কিন্তু আইপিএলে (IPL 2021) এবার বায়ো-বাবলে থাকার সময়ও অনেক ক্রিকেটার করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
শামি: বুঝতে পারছি না কী করে হল? আসলে খাবার জিনিস বাইরে থেকে আসবেই। সেগুলো কী করে আটকাবেন? আমার মতে সব জায়গায় বায়ো-বাবল তৈরি করার ব্যাপারটা অত্যন্ত কঠিন। বিসিসিআই খুব ভাল ব্যবস্থা করেছিল। এরপর যদি হয়, তাহলে কিছু করার নেই।
প্রশ্ন: ভয় লাগেনি তখন?
শামি: কিছুটা ভয় পেয়েছিলাম। খবর আসছিল, কোনও টিমের দু’জন আক্রান্ত । কোনও টিমের তিনজন। নিজেদের পজিটিভ রাখছিলাম।
প্রশ্ন: ভারতীয় টিমের প্রায় সবাই ভ্যাকসিন নিয়ে নিয়েছেন। আপনার এখনও নেওয়া হয়নি শুনলাম।
শামি: না, নিইনি। মুম্বইয়ে গিয়ে নেব।
প্রশ্ন: অস্ট্রেলিয়া (Cricket Australia) সফরে চোট পেয়ে ফিরে এসেছিলেন। তারপর আবার জাতীয় দলে ফিরলেন। মাঝে আইপিএল খেলেছেন।
শামি: এই আইপিএলটা খুব কাজে দিয়েছে। পুরো টুর্নামেন্ট হয়নি ঠিকই। তবে বেশ কয়েকটা ম্যাচ খেলেছি। পুরনো রিদম ফিরে পেয়েছি। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালের আগে এটা দরকার ছিল।
প্রশ্ন: কিন্তু দুটো ফরম্যাট আলাদা। সাদা বলের বদলে এবার লাল বল।
শামি: জানি ফরম্যাট আলাদা। বল আলাদা। তবে সেটা খুব একটা ফ্যাক্টর নয়। একজন বোলারের কাছে রিদম আসল। অনেকদিন ধরে খেলছি তাই ফরম্যাট বদলালেও কোনও সমস্যা হবে না। অভিজ্ঞতা আছে। কোন পরিস্থিতিতে কী করতে হবে, সেটা জানি।
প্রশ্ন: গত কয়েক বছরে ধরে টেস্টে টানা ভাল পারফরম্যান্সের পর এবার ফাইনাল। কতটা উত্তেজিত?
শামি: এবারই প্রথম বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ (World Test Championship) শুরু হয়েছে। প্রথমবারই আমরা ফাইনালে উঠেছি। প্রচণ্ড গর্বের । অবশ্যই আমরা সবাই খুব উত্তেজিত। একইসঙ্গে আবেগ নিয়ন্ত্রণও করতে হবে। ধৈর্য্য ধরতে হবে। নিজের স্কিলের উপর ফোকাস রাখতে হবে। কী করতে চাইছেন, সেই ব্যাপারটা ক্লিয়ার রেখে গেমপ্ল্যান ঠিক করতে হবে।

[আরও পড়ুন: ‘গেস্ট হাউসে’ বসে কোভিড টিকা নিয়ে বিপাকে কুলদীপ! ঘটনা খতিয়ে দেখার নির্দেশ]

প্রশ্ন: আপনি এর আগেও ইংল্যান্ডে গিয়েছেন। ওখানকার পরিবেশ জানেন। নিউজিল্যান্ডের ব্যাটসম্যানদের নিয়ে আলাদা করে কোনও পরিকল্পনা?
শামি: দেখুন এখন থেকে প্ল্যান করে কোনও লাভ নেই। এত আগে পরিকল্পনা করে কিছু হবে না। কারণ ওখানে কী কন্ডিশন থাকবে, কীরকম পিচ দেওয়া হবে, সেটা এখানে বসে বোঝা সম্ভব নয়। পরিস্থিতি সম্পর্কে না জেনে আপনি কীভাবে পরিকল্পনা করবেন? ইংল্যান্ড যাই আগে। আমি একটা কথা সবসময় বিশ্বাস করে এসেছি, লাইভ সিচুয়েশনে সিদ্ধান্ত নিতে বেশি সুবিধা হয়।
প্রশ্ন: প্রথমে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল। তারপর ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে পাঁচ টেস্টের সিরিজ। প্রায় সাড়ে তিন মাসের সফর। তার উপর আবার বায়ো-বাবলে থাকা। একজন ক্রিকেটারের কাছে কতটা চ্যালেঞ্জিং?
শামি: অবশ্যই কঠিন। তবে এর আগেও আমরা এরকম লম্বা সফর করেছি। ফাইনালের পর কিছুটা গ্যাপ আছে। নিজেদের তাজা রাখতে হবে। আর ফিটনেসের উপর জোর দেওয়াটা খুব জরুরি।
প্রশ্ন: এবার একটু ভারতীয় পেস অ্যাটাকের প্রসঙ্গে আসি। বিশ্বের অন্যতম সেরা পেস অ্যাটাক বলা হয়। যা আজ থেকে কয়েক বছর আগেও স্রেফ ভাবা যেত না।
শামি: শেষ চার-পাঁচ বছর আমাদের পেস অ্যাটাক যেরকম পারফর্ম করেছে, দেখার মতো। সবচেয়ে বড় কথা হল, পারফরম্যান্সের গ্রাফটা একইরকম আছে। শুধু একটা-আধটা সিরিজ নয়, আমরা ধারাবাহিকভাবে পারফর্ম করেছি। বিশ্বের সব জায়গায় আমাদের বোলিং ইউনিট নিজেদের সেরাটা উজাড় করে দিয়েছে। আমাদের বোলিং ইউনিট দেখুন। ভাল পেসার আছে। স্পিনার আছে। ফলে আমাদের যে উইকেটেই ফেলুক না কেন, চিন্তার কিছু নেই। আমাদের টিম ওসব নিয়ে ভাবে না। টিমের মাইন্ডসেট খুব পরিষ্কার—টেস্ট জিততে গেলে রান করতে হবে আর বিপক্ষের কুড়িটা উইকেট নিতে হবে। সেই মানসিকতা নিয়েই আমরা মাঠে নামি। এর বাইরে কেউ আর অন্য কিছু ভাবে না। অস্ট্রেলিয়া সিরিজের কথা ভাবুন। কী পরিস্থিতি ছিল! চোট-আঘাতে অনেক সিনিয়র ক্রিকেটার ছিল না। বিশেষ করে বোলিং ডিপার্টমেন্টে। তারপরও আমরা সিরিজ জিতেছি। এটা বোঝায়, আমাদের বেঞ্চ স্ট্রেংথ ঠিক কতটা।

[আরও পড়ুন: মা-বোনের মৃত্যুর পর খোঁজ নিয়েছেন জয় শাহ, BCCI-কে ধন্যবাদ জানালেন বেদা কৃষ্ণমূর্তি]

প্রশ্ন: অস্ট্রেলিয়া সিরিজ জয় কতটা স্পেশাল ছিল? যদিও চোটের জন্য আপনি মাঝ পর্বে ফিরে এসেছিলেন।
শামি: ওরকম সিরিজ জিততে পারলে আত্মবিশ্বাস অনেক বেড়ে যায়। আর যেভাবে জিতেছিলাম, সেটা আত্মবিশ্বাস আরও অনেক বাড়িয়ে দিয়েছিলাম। তারপর ঘরের মাঠে ইংল্যান্ড সিরিজ জেতা। প্রত্যেকটা প্লেয়ার এখন যেরকম পারফর্ম করছে, তাতে কেউ চোট পেয়ে গেলেও খুব একটা চিন্তা হয় না। যেই খেলুক না কেন ঠিক পারফর্ম করে দেবে, এই আত্মবিশ্বাসটা চলে এসেছে। কে আছে কে নেই, সেটা নিয়ে আমরা আর খুব একটা ভাবি না।
প্রশ্ন: শোনা যায়, অস্ট্রেলিয়া থেকে ফিরে আসার আগে জুনিয়র পেসারদের নিয়ে বসেছিলেন। কী বলেছিলেন?
শামি: এটা আমরা সব করে থাকি। টিমে যেই আসুক না কেন, তার সঙ্গে কথা বলি। কন্ডিশন নিয়ে কথা হয়। কোন কন্ডিশনে কী করতে হবে, সেটা নিয়ে কথা হয়। ওদের স্কিল নিয়ে কথা হয়। যদি কারও সঙ্গে কথা বলে তার আত্মবিশ্বাস বাড়াতে পারি, সেটা যেমন প্লেয়ারের কাছে ভাল, তেমনই টিমের পক্ষে খুব ভাল একটা ব্যাপার। এভাবেই তো একটা সেরা টিম তৈরি হয়। আশা করি ভবিষ্যতেও এরকম ড্রেসিংরুমের পরিবেশ থাকবে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement