সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আইএসএলের ফাইনাল (ISL Final) ম্যাচ খেলতে নামার আগে মোহনবাগান (Mohun Bagan) ফুটবলারদের শরীরী ভাষা বুঝিয়ে দিচ্ছে চ্যাম্পিয়ন হওয়া ছাড়া দ্বিতীয় কিছু ভাবছেন না কোনও ফুটবলারই। শনিবার বেঙ্গালুরু এফসি-র বিরুদ্ধে ফাইনালে নামার আগে জুয়ান ফেরান্দোর মোহনবাগানের জন্য ভাল খবর। চোট সারিয়ে মাঠে ফিরছেন আশিক। বুধ-বিকেলে এবং বৃহস্পতিবার গোয়া রওনা হওয়ার আগে দলের সঙ্গে অনুশীলন করেন তিনি। বিমানে ওঠার আগে আশিক বললেন, ”চোটের জন্য দুটো সেমিফাইনালে খেলতে পারিনি। ফাইনালে সুযোগ এলে সর্বশক্তি দিয়ে দলকে সাহায্য করব।” প্রতিপক্ষ বেঙ্গালুরুকে নিয়ে কী ভাবছেন স্লাভকো, গ্লেন মার্টিন্স, শুভাশিস বসুরা?
স্লাভকো ড্যাময়ানোভিচ-আমি সার্বিয়া, মন্টেনেগ্রো, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং হাঙ্গেরিতে খেলে বেশ কয়েকবার লিগ বা কাপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। ভারতে খেলতে এসে এই প্রথম আমার সামনে ট্রফি জেতার সুযোগ। এই সুযোগ একেবারেই হাতছাড়া করতে চাই না। আমার দুই মেয়ে এবং ছেলে প্রায় প্রতিদিনই ফোন করে আবদার করছে, ”বাবা, তোমাকে ট্রফিটা জিততেই হবে।” মন্টেনেগ্রোতে যাঁরা আমার বা আমাদের দলের খেলা দেখছে সবারই একই দাবি। আমার ছেলেমেয়েকে ট্রফিটা উপহার দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি। ডার্বিটা আমার মতে ছিল সবথেকে কঠিন ম্যাচ। সেটা আনায়াসে জেতার পর আমাদের দল দারুণ ফর্মে আছে। কোনও ম্যাচ আমরা হারিনি। বেঙ্গালুরুও ধারাবাহিকভাবে জয় পাচ্ছে। শনিবার ওদের থামিয়ে আমরাই জিতবো। চ্যাম্পিয়ন হওয়া ছাড়া দ্বিতীয় কিছু ভাবছি না।
[আরও পড়ুন: শ্রেয়স কি খেলবেন? ধোঁয়াশায় আটকে নাইটদের অধিনায়ক নির্বাচন]
গ্লেন মার্টিন্স-আমি গোয়ার ছেলে। ফাইনালে আমাদের টিম ওঠার পর অসংখ্য মেসেজ পাচ্ছি গোয়ার বন্ধুদের কাছ থেকে। সবাই আমাকে ট্রফি হাতে দেখতে চায়। ওঁরা সবাই টিকিট কিনছে। মাঠে আসবে আমাকে এবং মোহনবাগানকে সমর্থন করতে। ছোট থেকে ফতোরদা স্টেডিয়ামে খেলছি। ওখানে খেলেই বড় হয়েছি। সেখানে চ্যাম্পিয়ন হয়ে যদি ট্রফি জিততে পারি, সেটা হবে ফুটবলার জীবনের অন্যতম সেরা প্রাপ্তি। জীবনে প্রথম বার আইএসএল ফাইনাল খেলবো। তার উপরে সবুজ-মেরুন জার্সি পরে, দারুণ রোমাঞ্চ লাগছে। একশোর বেশি যদি কিছু থাকে তাহলে সেটা দিতে চাই।
বেঙ্গালুরু খুবই শক্তিশালী দল। ওদের সোনালি সময় চলছে। টানা জিতছে। ব্যালান্সড দল বলতে যা বোঝায়, বেঙ্গালুরু সেরকমই। রয় কৃষ্ণ, জাভি ভাল ফর্মে আছে। আমাদের দলও ডার্বির পর থেকে ভাল খেলছে। দলগত শক্তিই আমাদের শক্তি। বিশেষ কোনও ফুটবলারের ব্যক্তিগত নৈপুণ্যের উপরে নির্ভরশীল নয়। সেটা দিয়েই আমরা ট্রফি জিতবো। গোয়ার মাঠে যদি ট্রফি জিততে পারি, তার চেয়ে আনন্দের আর কিছু হবে না।
শুভাশিস বসু-ডার্বির পর থেকে প্রতিটি ম্যাচ আমরা ফাইনাল মনে করে খেলছি। ডু অর ডাই, হয় জেতো না হলে বিদায় নাও–এই মনোভাব নিয়ে ড্রেসিং রুমে শপথ নিয়ে নেমেছি আমরা। সফলও হয়েছি। এবার শেষ লড়াই। ফাইনালের রেজাল্ট বেরোবে। সেটায় পাস করতেই হবে। ১২টা ক্লিনশিট রয়েছে আমাদের। ১৩ নম্বরটা শনিবার করতে হবে। গোল অক্ষত রেখে মাঠ ছাড়ার ব্যাপারে আমি আশাবাদী। নব্বই মিনিটের মধ্যেই ম্যাচ শেষ করতে চাই। কে কী ভাবছে জানি না, তবে আমি নিশ্চিত যে আমরাই চ্যাম্পিয়ন হব।
বেঙ্গালুরু খুব ভাল খেলছে। ওদের দলে বেশ কয়েকজন এমন ফুটবলার রয়েছে, যারা খেলাটা ধরতে পারে। গোলের মুখ খুলতে পারে। সবাই রয় কৃষ্ণ বা সুনীল ছেত্রীদের কথা বললেও আমার মতে ওদের সেরা অস্ত্র জাভি। আমাদের আসল শক্তি দলগত সংহতি। শেষ মিনিট পর্যন্ত লড়াই করার ক্ষমতা আমাদের আছে। সেটা দিয়েই এবার ট্রফি জিতব।