সৌরভ মাজি, বর্ধমান: করোনা দুর্যোগ ভুলিয়ে দিয়েছিল আজন্মের ‘শত্রুতা’। খেলার ময়দানে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহনবাগান ও ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা একজোট হয়েছিলেন বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ব্লাড ব্যাংকের রক্ত সংকট মেটাতে। মোহনবাগান ফ্যান ক্লাব পূর্ব বর্ধমান মেরিনার্সের তরফে ওই রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয়েছিল আরও একটি সংস্থার সহযোগিতায়। তবে লকডাউন (Lock Down) পিরিয়ডে শুধুমাত্র রক্তদানেই থেমে থাকেননি বর্ধমানের মোহনবাগান প্রেমীরা।
মোহনবাগানকে ভালবেসে গড়ে উঠেছে এই পূর্ব বর্ধমান মেরিনার্স। করোনার সংক্রমণ রুখতে লকডাউন শুরু হওয়ার পর বহু মানুষ সংকটে পড়েছেন। সামাজিক দায়িত্ববোধ থেকে তাঁদের পাশে দাঁড়াতে এগিয়ে এসেছেন বর্ধমানের মোহনবাগান সমর্থকরা। সায়ন দত্ত, আকাশদীপ রায়-সহ বেশ কয়েকজন করোনা মোকাবিলায় মানুষের পাশে থাকতে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে অন্য লড়াই শুরু করেছেন। তাঁদের মতে, সব থেকে বেশি প্রয়োজন মানুষকে সচেতন করা। তাই রাস্তায় আলপনা এঁকে করোনার বিষয়ে সবাইকে সচেতন করেছেন সবুজমেরুন ভক্তরা। লকডাউন বজায় রাখতে রাস্তায় প্রচুর পুলিশকর্মী দিনরাত কাজ করছেন তীব্র দাবদাহ উপেক্ষা করে। তাঁদের পাশেও দাঁড়িয়েছেন সায়নরা। বর্ধমান শহরের উল্লাস মোড় থেকে নবাবহাট মোড় এবং তেলিপুকুর থেকে বীরহাটা মোড় পর্যন্ত প্রতিটি মোড়ের ট্রাফিক পুলিশকর্মীদের মাস্ক ও স্যানিটাইজার বিলি করেছেন তাঁরা। গ্লুকোজ, পানীয় জল, কেক ও বিস্কুটের প্যাকেট তুলে দিয়ে স্যালুট জানিয়েছেন করোনা পরিস্থিতিতে পুলিশকর্মীদের নিরলস কর্তব্য পালনকে।
[আরও পড়ুন: লকডাউনে সীমান্তের পথে বাধা বিজেপি সাংসদকে, পাঠানো হল কোয়ারেন্টাইনের নোটিস ]
সায়ন জানান, তাঁরা আড়াইশোটি দুস্থ পরিবারকে চিহ্নিত করেছেন। তাঁদের রেশন সামগ্রী প্রদান করা হবে। ইতিমধ্যে চাল, ডাল, তেল, নুন ও সাবান-সহ বিভিন্ন সামগ্রী প্যাকটবন্দি করেছেন। শহরের অদূরে ঝিঙুটি ও নবাবহাট এলাকায় ওই রেশন সামগ্রী দান করবেন তাঁরা। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে ও মোহনবাগান সমর্থকদের সহৃদয় মনোভাবে পূর্ব বর্ধমান মেরিনার্স অর্থ সংগ্রহ করেছে দুস্থদের পাশে থাকতে। বেশ কিছু সংগঠনও পাশে দাঁড়িয়েছেন মোহনবাগান ফ্যান ক্লাবের। সকলেই মোহনবাগানকে ভালবেসে সহায়তার হাত বাড়িয়েছেন।
[আরও পড়ুন: ডার্বির টিকিটের দাম ফেরত চেয়ে কোয়েস ইস্টবেঙ্গল এফসিকে চিঠি মোহনবাগানের ]
The post মানবিক, করোনা যুদ্ধে মানুষের পাশে দাঁড়ালেন মোহনবাগান সমর্থকরা appeared first on Sangbad Pratidin.