ঐন্দ্রিলা বসু সিংহ: বাঘের দুধের জোরের কথা অনেকেই শুনে থাকবে৷ কিন্তু, পুঁচকে একটা আরশোলর দুধেরও যে এত জোর তা কে জানত৷ একটি বিশেষ গবেষণায় বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি জানতে পেরেছেন, বিশ্বের সবচেয়ে বেশি প্রোটিনযুক্ত যে দুধ, সেই মোষের দুধের থেকেও তিন গুণ বেশি প্রোটিন রয়েছে আরশোলার দুধে! এ পর্যন্ত পড়ে যাদের শরীরের মধ্যে অপ্রীতিকর অনুভূতি হতে শুরু করেছে, তাঁরা জেনে রাখুন, এমন দিন আর বেশি দেরি নেই, যখন ওলিম্পিকে কুস্তি লড়ার আগে আরশোলার দুধ খেয়ে রিংয়ে নামবেন কুস্তিবীররা৷ ফাটিয়ে পারফরম্যান্স দেবেন৷ আবার ডোপ টেস্টেও ধরা পড়বেন না৷
এব্যাপারে গবেষণাও শুরু হয়েছে৷ আর সেই গবেষণায় অংশ নিয়েছেন এক বাঙালি গবেষক৷ নাম সঞ্চারী বন্দ্যোপাধ্যায়৷ অন্য গবেষকদের সঙ্গে একটি বিজ্ঞান বিষয়ক পত্রিকায় এ ব্যাপারে একটি প্রতিবেদন লিখেছেন তিনি৷ সেখানেই সঞ্চারী জানিয়েছেন, এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে পাওয়া এক বিশেষ ধরনের প্যাসিফিক বিটল আরশোলার কথা৷ তিনি লিখেছেন, “এখানে একটা প্রশ্ন উঠতে পারে–আরশোলারা কবে থেকে তাদের শরীরে দুধ তৈরি করছে৷ তারা তো স্তন্যপায়ী নয়৷ এর উত্তরটা হল, সব আরশোলা নয়৷ তবে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে পাওয়া এক বিশেষ ধরনের প্যাসিফিক বিটল আরশোলা নিজেদের শরীরে দুধ তৈরি করতে পারে৷ যৌবন ধরে রাখার জন্য এরা স্তন্যপায়ীদের মতোই বাচ্চার জন্ম দেয়৷ আর তারপর বাচ্চাদের পুষ্টি দিতে তাদের শরীর থেকে বেরোতে শুরু করে এক ধরনের সাদা তরল৷ যা দুধের মতোই প্রোটিনে ভরপুর৷”
আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানীদের একটি দল এই নিয়ে গবেষণা শুরু করেছিলেন৷ তাঁরা দেখেছেন, ওই সাদা তরল একটি সম্পূর্ণ সুষম আহার৷ এর মধ্যে স্ফটিকের আকারে রয়েছে অসংখ্য প্রোটিন, চিনি এমনকী স্নেহজাতীয় পদার্থও (লিপিড)৷ যা খেলেই মিলবে ইনস্ট্যান্ট এনার্জি৷ এমনকী প্রোটিন বিশ্লেষণ করে দেখা গিয়েছে, তাতে সমস্তরকমের প্রয়োজনীয় অ্যামাইনো অ্যাসিডও বর্তমান৷ এ সব জেনে শুনেই ভবিষ্যতের খাদ্য নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে শুরু করেছেন বিজ্ঞানীরা৷ প্যাসিফিক আরশোলাদের সাহায্যে এই প্রোটিনে ভরপুর দুধ আরও বেশি করে কীভাবে তৈরি করা যায় এখন তা নিয়েই মাথা ঘামাচ্ছেন গবেষকরা৷
The post আরশোলার দুধে সুষম আহার appeared first on Sangbad Pratidin.