সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সাধারণতন্ত্র দিবসের অশান্তির পর বুধবার সকাল থেকেই থমথমে রাজধানী দিল্লি (Delhi)। এদিন সকাল থেকে বেনজির নিরাপত্তার ঘেরাটোপে ছেয়ে ফেলা হয়েছে রাজধানী দিল্লিকে। আধাসেনা, CRPF -এর বহু জওয়ান এদিন সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় টহল দিচ্ছে। এদিন সকাল থেকে সিঙ্ঘু সীমান্তে কয়েক হাজার সিআরপিএফ জওয়ান মোতায়েন। আজও সিঙ্ঘু, গাজিপুর, টিকরি, মুকারবা চক, নাঙ্গলোইয়ের মতো এলাকায় বন্ধ ইন্টারনেট পরিষেবা। আজ সকাল থেকেও দিল্লির লালকেল্লা এবং জামা মসজিদ মেট্রো স্টেশনের গেট বন্ধ রাখা হয়েছে। এদিকে, গতকালের ঘটনার পর বিক্ষোভকারী কৃষকরা অনেকটাই ছত্রভঙ্গ। বিক্ষোভের আগামী দিনের রূপরেখা ঠিক করতে সিঙ্ঘু সীমান্তে আজ নিজেদের মধ্যে আলোচনায় বসতে পারেন কৃষকনেতারা। তার আগেই অবশ্য বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে বক্তৃতা রাখতে পারেন কৃষক সংঠনের নেতারা।
এদিকে গতকালের বিক্ষোভের ঘটনার তদন্তে নেমে দিল্লি পুলিশ (Delhi Police) একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে। পুলিশ সূত্রের খবর, কৃষক বিক্ষোভের এই হিংসা পূর্বপরিকল্পিতও হতে পারে। কৃষক নেতা রাকেশ টিকাইতের একটি ভিডিও ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। যাতে তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, “নিজেদের জমি বাঁচাতে সকলে লাঠি, অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে প্রস্তুত থাকবেন।” পুলিশ সূত্রের দাবি, ওই ভিডিও ছাড়াও আরও বেশ কিছু সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। একাধিক জায়গায় বিনা প্ররোচনায় পুলিশের উপর চড়াও হয়েছে বিক্ষোভকারীরা। বেশ কিছু জায়গায় পুলিশকে রাস্তায় ফেলে মারধর করা হয়েছে। সব সিসিটিভ ফুটেজই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দিল্লি পুলিশ সূত্রের দাবি, এই ঘটনায় তিনশো’র বেশি পুলিশ কর্মী আহত হয়েছেন। এঁদের মধ্যে বেশ কয়েক জনের অবস্থা গুরুতর। দু’জন ভরতি আইসিইউতে। গতকালের ঘটনায় মোট ২৬টি এফআইআর (FIR) দায়ের করেছে পুলিশ। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি জামিন অযোগ্য ধারা। সেসবের ভিত্তিতেই তদন্ত হবে।
[আরও পড়ুন: ‘বিজেপিপন্থী’ অভিনেতার উসকানিতেই লালকেল্লায় তাণ্ডব! ষড়যন্ত্রের অভিযোগ কৃষকদের]
এদিকে, গতকালের কৃষক বিক্ষোভ রীতিমতো আন্তর্জাতিক ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্বয়ং রাষ্ট্রসংঘের (United Nations) মহাসচিব অ্যান্তোনিয় গুতেরেস (Antonio Guterres) এই ইস্যুতে মুখ খুলেছেন। তাঁর মুখপাত্র সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে জানিয়েছেন,”এই ধরনের ঘটনায় আমরা একটাই কথা বলি। আমাদের মনে হয় সব দেশেরই উচিত শান্তিপূর্ণ এবং অহিংস বিক্ষোভকে সম্মান করা। প্রত্যেকের বিক্ষোভের স্বাধীনতা আছে।” রাষ্ট্রসংঘের এই বয়ান নিঃসন্দেহে সরকারের অস্বস্তি বাড়াবে।