shono
Advertisement

ট্রেকিংয়ে গিয়ে তুষারধসে মৃত্যু ৫ অভিযাত্রীর, উত্তরাখণ্ড থেকে কলকাতায় ফিরল কফিনবন্দি দেহ

উত্তরাখণ্ডের কানাকাটা পাস থেকে সোমবার উদ্ধার হয়েছে আরও ৫টি দেহ।
Posted: 01:01 PM Oct 25, 2021Updated: 05:49 PM Oct 25, 2021

কলহার মুখোপাধ্যায় ও সোমনাথ রায়: আর মাত্র কয়েকটা মাস। তারপরই সাত জন্মের সঙ্গিনীর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার দিনক্ষণ স্থির হয়েছিল। কিন্তু জীবনের সেই গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে পা রাখার আগেই সব ওলটপালট হয়ে গেল। উত্তরাখণ্ডে (Uttarakhand) ট্রেকিংয়ে গিয়ে প্রাণটাই খোয়াতে হল কালীঘাটের শুভায়ন দাসের। সোমবার উত্তরাখণ্ড থেকে তাঁর কফিনবন্দি দেহ ফিরেছে দমদম বিমানবন্দরে। সঙ্গে আরও ৪ ট্রেকারের বরফঢাকা নিথর দেহ। সেখান থেকে পরিবারের সদস্যরা প্রয়োজনীয় কাগজে সইসাবুদের পর প্রিয়জনদের নিথর দেহ নিয়ে ফিরে যান শূন্য ঘরে।

Advertisement

অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে উত্তরাখণ্ডের দুর্গম পার্বত্য এলাকা ট্রেকিংয়ে  (Trekking) গিয়েছিলেন বঙ্গের মোট ৬ জন অভিযাত্রী। কিন্তু প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের জেরে পাঁচজনেরই মৃত্যু হয়েছে। একজন এখনও নিখোঁজ। সুখেন মাজি নামে সেই ব্যক্তির জন্য চিন্তিত তাঁর পরিবার। সোমবার ৫ জনের দেহ উত্তরাখণ্ড থেকে ফিরেছে কলকাতায় (Kolkata)। সৌরভ ঘোষ, তনুময় তিওয়ারি, বিকাশ মাকাল, রিচার্ড মণ্ডল, শুভায়ন দাস – এই পাঁচজনের পরিবার দমদম বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন। যে ছেলেদের ব্যাকপ্যাক, রুকস্যাক পিঠে নিয়ে হইহই করতে করতে গেল ট্রেকিংয়ে, তারাই আজ ফিরেছে কফিনবন্দি হয়ে।

[আরও পড়ুন: গুরুতর অসুস্থ রাজ্যের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়, ভরতি এসএসকেএম হাসপাতালে]

সোমবার সকাল ৮টা ১৫ নাগাদ দমদম বিমানবন্দরে (Dum Dum Airport) নামে ইন্ডিগোর 6C2346 বিমানটি। তাতে ছিল তিনজনের দেহ। এরপর ১০টায় বাকি ২ জনের দেহ নিয়ে অবতরণ করে 6E5573 বিমান। কালো কফিনবন্দি ৫ টি দেহ একসঙ্গেই বেরয় বিমানবন্দর থেকে। সেখানেই পরিবারের সদস্যরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। পরিস্থিতি সামলাতে সেখানে ছিল বিধাননগর পুলিশ। পরিবারগুলির পাশে থাকতে হাজির হয়েছিলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিষ্ণুপুরের বিডিও-ও। নিহতদের ৫ জনের মধ্যে চারজনই বিষ্ণুপুরের বাসিন্দা।

উত্তরাখণ্ডের কানাকাটা পাস

পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, তনুময়, সৌরভ, সুখেনদের সঙ্গে ফেসবুকে আলাপ কালীঘাটের শুভায়নের। আগামী বছর শুভায়নের বিয়ে। তাই বাড়ির লোকজন এবছর দুর্গম পাহাড়ে ট্রেকিংয়ে যেতে আপত্তি তুলেছিলেন। সেই আপত্তি উড়িয়ে নতুন বন্ধুদের সঙ্গে বেরিয়ে পড়েছিলেন বছর আঠাশের শুভায়ন। উত্তরাখণ্ডের বাগেশ্বর থেকে কানাকাটা পাস হয়ে তাঁরা অভিযানে যাচ্ছিল। এই পথটি অত্যন্ত দুর্গম। ফলে বিপদও ঘনিয়ে এল দ্রুত। তুষারধসে চাপা পড়ে প্রাণবায়ু নিভে গেল একে একে পাঁচজনেরই। এখনও নিখোঁজ সুখেন মাজি নামে বছর বিয়াল্লিশের ব্যক্তি। এদিন তাঁর ভাই শুভেন্দু এসেছিলেন বিমানবন্দরে, তাঁর মামা তনুময় তিওয়ারির দেহ নিতে। জানালেন, দাদা-মামার সঙ্গে তাঁরও যাওয়ার কথা ছিল উত্তরাখণ্ডে। কিন্তু অফিসের কাজ পড়ে যাওয়ায় তিনি যেতে পারেননি। আর সেই বাধাই এখন আশীর্বাদ বলে মনে হচ্ছে শুভেন্দুর, অন্তত প্রাণে বেঁচে রয়েছেন তিনি।

[আরও পড়ুন: আত্মহত্যা নাকি খুন? নিজের বাড়ি থেকে মহিলার অগ্নিদগ্ধ দেহ উদ্ধারে চাঞ্চল্য]

উত্তরাখণ্ড অভিযানে যাওয়া আরও কয়েকজনের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না এখনও। কারণ সেই এলাকার দুর্গমতা। তবে কানাকাটা পাস লাগোয়া স্থানীয় ক এলাকার বাসিন্দারা নিজেরাই উদ্ধারকাজে নামে গত শনিবার। আজ সকালে সেখান থেকে ৫টি দেহ উদ্ধার হয়েছে। দেহগুলি নামানো হচ্ছে। ইতিমধ্যে উত্তরাখণ্ডে পৌঁছে গিয়েছেন উলুবেড়িয়ার দুই নিখোঁজ অভিযাত্রী সাগর দে ও সরিৎশেখর দাসের আত্মীয়রা। প্রিয়জনের দেহ শনাক্তকরণের পর ঘরে ফিরবেন।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement