সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: “ডাল ভাত আমাদের ছিলই। মুকুলবাবুর যোগদানে চাটনিটাও আমরা পেয়ে গেলাম।” মুকুল রায়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ এবং জাতীয় স্তরের বরেণ্য নেতাকে এভাবেই দলে স্বাগত জানিয়েছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। অর্থাৎ মুকুল রায়কে শুরুতেই ‘চাটনি’র সঙ্গে তুলনা করেছিলেন দিলীপবাবু। বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, মুকুলবাবু আর যাই হোন, বিজেপির জন্য অপরিহার্য নন। তখন থেকেই শুরু বিভেদ।
মুকুল ঘনিষ্ঠরা বলেন, ‘দাদা তিন বছর ৯ মাস দলে থাকলেও যোগ্য সম্মান পেলেন না।’ বস্তুত, মুকুল রায়ের মতো নেতাকে সত্যিই সেভাবে ব্যবহার করেনি গেরুয়া শিবির। দিলীপ লবিকে সন্তুষ্ট রাখতে গিয়ে মুকুলবাবুকে অনেক ক্ষেত্রেই বঞ্চিত করেছে গেরুয়া শিবির। বিজেপিতে সাড়ে তিন বছরের বেশি সময় থাকার পরও তাঁর প্রাপ্তি শুধু নাম-সর্বস্ব সর্বভারতীয় সহ-সভাপতির পদ। যে পদের গরিমা থাকলেও কার্যকারিতা তেমন নেই। আসলে গেরুয়া শিবিরে সভাপতির পর সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পান সাধারণ সম্পাদকরা। সহ-সভাপতিদের বিশেষ কিছু করার থাকে না। মুকুলবাবুও এই পদে থেকে বিশেষ কিছু করে উঠতে পারেননি। বিজেপিতে এতদিন তাঁকে থাকতে হয়েছে আজ্ঞাবহ হয়েই।
[আরও পড়ুন: সম্পূর্ণ হল বৃত্ত, বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে প্রত্যাবর্তন সপুত্র মুকুল রায়ের]
২০১৭ সালে মুকুল যখন বিজেপিতে যোগ দিলেন, তখনও রাজ্য বিজেপি বহরে এত বড় হয়নি। মূলত মুকুলের হাত ধরেই শ্রীবৃদ্ধি শুরু হয় গেরুয়া শিবিরের। একের পর এক নেতা আসেন দলে। বাড়ে সাংগঠনিক শক্তি। উনিশের লোকসভায় বিজেপি ১৮ আসন পাওয়ার নেপথ্যের কারিগরও ছিলেন মুকুলই। অথচ, তারপরও রাজ্য বিজেপিতে কোনও পদ দেওয়া হয়নি মুকুলকে। শুরুতে মুকুলকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী করার একটা জল্পনা ছিল। সেটাও কোনওদিন বাস্তবায়িত হয়নি। উনিশের সাফল্যের পরও না। এমনকী ৩ বছর ৯ মাসে মুকুলকে রাজ্যসভার সাংসদ পর্যন্ত করেনি গেরুয়া শিবির। বরং প্রতিপদে তাঁকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে, দিলীপ ঘোষই বঙ্গ বিজেপির মুখ। মুকুল ঘনিষ্ঠদের মতে, তিনি দীর্ঘদিন ধরেই বিজেপিতে অস্বস্তি বোধ করছিলেন। এমনকী গতবছর একবার দল ছাড়ার ব্যাপারে মনস্থিরও করেছিলেন। কিন্তু পরে আবার মত বদলান। অবশেষে ‘শান্তির খোঁজে’ ঘরে ফিরলেন বিজেপির সদ্যপ্রাক্তন সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি।