shono
Advertisement

রেইকি করে খুন ব্লগার অভিজিৎ রায়, হত্যাকাণ্ডের ৪ বছর পর রহস্য ফাঁস

‘বিশ্বাসের ভাইরাস’, ‘অবিশ্বাসের দর্শন’ - বই দুটির জন্য অভিজিতকে খুন হতে হয়। The post রেইকি করে খুন ব্লগার অভিজিৎ রায়, হত্যাকাণ্ডের ৪ বছর পর রহস্য ফাঁস appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 08:48 PM Feb 19, 2019Updated: 08:48 PM Feb 19, 2019

সুকুমার সরকার, ঢাকা: প্রায় চার বছর পর বাংলাদেশি ব্লগার অভিজিৎ রায় হত্যাকা্ণ্ডের চার্জশিট দিল পুলিশ। তাতে বেশ কয়েকটি চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসছে। টানা তিনদিন অনুসরণ করে বিজ্ঞানমনস্ক লেখক ও মুক্তমনা ব্লগারকে খুন করা হয়। অভিজিৎ হত্যা মামলায় মূল আসামি জিয়াউল হক সহ ছ’জনের নাম রয়েছে চার্জশিটে। প্রথমে চার্জশিট অনুমোদনের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে পাঠানো হয়। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি) সেটি পাঠিয়েছে।  মন্ত্রকের অনুমোদনের পর আদালতে চার্জশিটটি পেশ করা হবে। ঢাকার মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এসব তথ্য জানিয়েছেন সিটিটিসির প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মণিরুল ইসলাম।   

Advertisement

[অনাথ আশ্রমের শৌচালয়ে একাধিক শিশুকে লাগাতার ধর্ষণ, গ্রেপ্তার শিক্ষক]

২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি অমর একুশে বইমেলা প্রাঙ্গণ থেকে ফেরার পথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় কুপিয়ে হত্যা করা হয় অভিজিৎকে। হামলায় অভিজিতের স্ত্রী রাফিদা আহমেদও গুরুতর আহত হন। চার্জশিটে উল্লেখ রয়েছে, এই হত্যাকাণ্ডের মূল চক্রী ছিল আনসার আল ইসলামের সামরিক শাখার প্রধান ও বরখাস্ত হওয়া মেজর সৈয়দ জিয়াউল হক। এসিপি মণিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, ‘তদন্তে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত মোট ১১ জনের খোঁজ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ছ’জনের পূর্ণাঙ্গ নাম-ঠিকানা পাওয়ায় তাদের নাম রয়েছে চার্জশিটে। বাকিদের পূর্ণাঙ্গ নাম-ঠিকানা পাওয়া গেলে চার্জশিটে তা যোগ করা হবে।’ কীভাবে অভিজিৎকে খুন করা হয়েছে, তার বিস্তারিত বিবরণ দিয়েছেন মণিরুল ইসলাম। তিনি জানান, ‘ওই নির্দিষ্ট দিনের জন্য হত্যাকারীরা অপেক্ষা করছিল। এক সময়ে তারা নিশ্চিত হয়, মার্কিন প্রবাসী অভিজিৎ দেশে ফিরেছেন। ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে তাঁরা অভিজিতের বইমেলায় আসা-যাওয়ার পথে রেকি করতে থাকে। এর মধ্যে ২২ ফেব্রুয়ারি জাগৃতি প্রকাশনীর সামনে তারা অভিজিৎকে দেখে। তিনি ওই দিন স্ত্রীকে নিয়ে ধানমন্ডিতে খেতে গিয়েছিলেন। সেখান পর্যন্ত তাঁকে অনুসরণ করে হত্যাকারীরা। কিন্তু সেদিন তাঁরা অপারেশন করতে পারেনি। এরপর তিনদিন টানা তাঁকে অনুসরণ করা হয় অভিজিতকে। রেকি করার দায়িত্ব ছিল মোজাম্মেল ও আবু সিদ্দিক নামে দুজনের উপর।  হত্যাকাণ্ডের দিন জিয়াউল ও তার আরেক সহকারী সেলিম ঘটনার আশপাশে ছিল। অভিযুক্তদের মধ্যে গ্রেপ্তার চারজন হল – মোজাম্মেল হুসেইন ওরফে সায়মন শাহরিয়ার, আবু সিদ্দিক সোহেল সাকিব, আরাফাত রহমান ও শাফিউর রহমান ফারাবি। এর মধ্যে মোজাম্মেল, আরাফাত ও আবু সিদ্দিক আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। আবু সিদ্দিক ও মোজাম্মেল জাগৃতি প্রকাশনীর মালিক ফয়সল আরেফিন দীপন হত্যাকাণ্ডের সঙ্গেও অভিযুক্ত। 

[ফিরে এলে ‘ধানসিড়ি’ নদীটি খুঁজেই পেতেন না জীবনানন্দ]

অভিজিৎ হত্যার নেপথ্যে কাজ করেছিল  ইনটেল ও কিলার নামে দুটি গ্রুপ। মণিরুল ইসলাম বলেন, “লেখালেখি ও ভিন্নমতের কারণেই তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। মূলত ‘বিশ্বাসের ভাইরাস’ ও ‘অবিশ্বাসের দর্শন’ – এই দুটি বইকে কেন্দ্র করে সমস্যা। এগুলির জন্যই অভিজিৎকে হ্ত্যার সিদ্ধান্ত নেয় আনসার আল ইসলাম।” জানা গিয়েছে, কিলিং স্কোয়াডের প্রধান ছিল মুকুল রানা, যে ইতিমধ্যেই পুলিশের সঙ্গে গুলিযুদ্ধে নিহত হয়েছে। ভক্ত, প্রকাশনী ও বিভিন্ন জায়গায় কথা বলে জঙ্গিরা নিশ্চিত হয়, বইমেলার সময়েই অভিজিৎ দেশে ফিরতে পারেন। সেই অনুসারে তারা ঢাকার এলিফ্যান্ট রোডে তাদের ‘অপারেশনাল হাউস’ ভাড়া নিয়ে হত্যাকাণ্ডের মিশন সম্পন্ন করে। এখন পুলিশের এই চার্জশিট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অনুমোদন সাপেক্ষে আদালতে পেশ করে দ্রুত মামলার নিষ্পত্তি হোক, সেটাই চাইছে অভিজিতের ঘনিষ্ঠ মহল।

The post রেইকি করে খুন ব্লগার অভিজিৎ রায়, হত্যাকাণ্ডের ৪ বছর পর রহস্য ফাঁস appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement