শাহজাদ হোসেন, ফরাক্কা: সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরোয় অবস্থা। এক পয়সা বেহিসাব খরচের গতি নেই। তা সত্ত্বেও লটারি কেনা বন্ধ হয়নি। কষ্ট করে জমানো টাকায় লটারি কিনেছেন পেশায় রাজমিস্ত্রি ওই যুবক। আর তাতেই ভাগ্যবদল। মাত্র ৩০ টাকায় লটারির টিকিট কেটে কোটিপতি তিনি।
বসির শেখ নামে ওই যুবক মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) সাগরদিঘি থানার বালিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের নয়নডাঙা এলাকার বাসিন্দা। চার সন্তানের বাবা বসির রাজমিস্ত্রির জোগাড়ের কাজ করতেন। এছাড়াও তাঁর বাড়িতে স্ত্রী এবং দুই বোনও রয়েছে। সাতজনের সংসারে রুটিরোজগারকারী একমাত্র বসির। এলাকায় কাজ নেই। তাই বাধ্য হয়ে অর্থ উপার্জনের আশায় হাওড়া, কলকাতা-সহ বিভিন্ন জায়াগায় কাজ করতে যেতে হত তাঁকে। তবে পরিশ্রমই সার। সেই আয়ও সংসার চালানোর জন্য যথেষ্ট নয়।
[আরও পড়ুন: প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে বছরের পর বছর ‘ধর্ষণ’, বাবার বিকৃত যৌন লালসার শিকার নাবালিকা]
নুন আনতে পান্তা ফুরনোর সংসারে সকলের মুখে ঠিকমতো খাবারও তুলে দিতে পারতেন না বসির। লটারির (Lottery) টিকিট কিনতেন নিয়মিত। স্বপ্ন ছিল একদিন না একদিন ভাগ্য ফিরবেই। আর সে কথা ভেবেই গত শনিবারও একটি লটারির টিকিট কিনেছিলেন বসির। মাত্র ৩০ টাকা দাম নিয়েছিল টিকিটের। কয়েক ঘণ্টা পর একটি অজানা নম্বর থেকে ফোন পান বসির। জানতে পারেন, ওই লটারির টিকিটের সৌজন্য কোটি টাকার মালিক হয়েছেন তিনি। স্বভাবতই এই খবর শোনার পর আনন্দে আত্মহারা হয়ে যান বসির।
তবে সাহস করে টাকা নিতে যেকে পারেননি তিনি। পুলিশি নিরাপত্তায় টাকা বাড়িতে আনতে চান বসির শেখ। তিনি জানান, “এলাকায় সারাবছর কাজ থাকে না। বাধ্য হয়ে হাওড়া, কলকাতা-সহ বিভিন্ন জায়াগায় রাজমিস্ত্রির জোগাড়ের কাজ করি। বাড়িতে চারটি শিশুসন্তান রয়েছে। তাদের খাবার কিংবা পড়াশোনার ব্যবস্থাও করতে পারতাম না। লটারি জিতে কোটিপতি হয়ে গিয়েছি। এবার ছেলেমেয়েদের ঠিকভাবে পড়াশোনার ব্যবস্থা করব। অবিবাহিত দুই বোনের বিয়ের ব্যবস্থাও করব।” এদিকে, লটারির টিকিট জেতার কথা জানাজানি হওয়ার পরই যেন সেলিব্রিটি হয়ে গিয়েছেন বসির। বাড়িতে ছুটে আসেন এলাকার বহু মানুষ।