সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিলকিস বানোর (Bilkis Bano) ধর্ষকদের মুক্তি নিয়ে গত কয়েক দিন ধরেই উত্তপ্ত জাতীয় রাজনীতি। এমন নৃশংস অপরাধের সঙ্গে যুক্তদের মুক্তি কেন? এ নিয়ে সরব হয়েছে বিরোধীরা। এই মুক্তি আদৌ আইন মেনে হয়েছে কিনা, তা গুজরাট (Gujarat) সরকারের কাছে জানতে চেয়েছে সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। এদিকে ওই ধর্ষকদের প্রত্যাবর্তনের পরে আশঙ্কায় কাঁপছে রাধিকাপুর গ্রাম। গ্রাম ছেড়ে অন্যত্র পাড়ি জমাচ্ছেন সেখানকার মুসলিমরা। তাঁদের দাবি, আবার ওই অপরাধীদের জেলবন্দি না করা পর্যন্ত তাঁরা এখানে নিরাপদ অনুভব করছেন না নিজেদের।
এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, ইতিমধ্যেই জেলার কালেক্টরের কাছে একটি আবেদনপত্র পাঠানো হয়েছে। সেখানে সই রয়েছে ৫৫ জনের। তাঁদের আরজি, ওই ১১ জনকে আবারও জেলে ফেরত পাঠানো হোক। পাশাপাশি তাঁদের পুলিশি নিরাপত্তা দেওয়া হোক। যতক্ষণ এমন না করা হচ্ছে ততক্ষণ তাঁরা কেউই রাধিকাপুরে ফিরবেন না।
[আরও পড়ুন: অনুব্রত মণ্ডল নয়, পূর্ব বর্ধমানের তিন বিধানসভা এলাকার সংগঠনের ভার স্থানীয় নেতৃত্বেরই]
রাধিকাপুরের মুসলিম বাসিন্দারা এখন রয়েছেন দেবগড় বারিয়া নামের অন্য একটি গ্রামে। বিলকিস বানো ও তাঁর পরিবারও সেখানেই রয়েছেন। সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময় গ্রামছাড়া সমীর ঘাচি জানাচ্ছেন, ”আমরা তো কিছুই জানতাম না। কিন্তু ওই ১১ জন গ্রামে ফিরলে তাদের রীতিমতো আতশবাজি ফাটিয়ে, ডিজে বাজিয়ে স্বাগত জানানো হয়। আর তখন থেকেই আমরা ভীত হয়ে পড়েছি। খুনি, ধর্ষকদের জন্য কেউ কেন বাজি ফাটিয়ে ডিজে বাজাবে! এরপরই আমরা সিদ্ধান্ত নিই, আর এই গ্রামে নয়।” ওই পলাতক মুসলিমদের বক্তব্য, এভাবে অন্য গ্রামে চলে যাওয়ায় তাঁদের জীবনযাপন, পেশাগত নানা সমস্যা হচ্ছে ঠিকই। তবু প্রাণ বাঁচাতেই এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০০২ সালে সাবরমতী এক্সপ্রেসে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। তারপর থেকেই ব্যাপক সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা শুরু হয় গোটা গুজরাট জুড়ে। সেই সময়েই ২১ বছর বয়সি তরুণী বিলকিস বানোকে গণধর্ষণ করা হয়। ঘটনার সময়ে গর্ভবতী ছিলেন বিলকিস। দাঙ্গার ভয়ে এলাকা ছেড়ে পালাচ্ছিলেন তিনি। সেই সময়েই তাঁকে গণধর্ষণ করা হয়। শুধু তাই নয়, তাঁর তিন সন্তানকেও খুন করা হয়। ২০০৮ সালে এগারোজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেয় মুম্বইয়ের বিশেষ সিবিআই আদালত। তাদের মধ্যে ছিলেন দু’জন চিকিৎসক, যারা প্রমাণ লোপাট করার চেষ্টা করেছিল। একই অপরাধে কয়েকজন পুলিশকর্মীকেও কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। মেয়াদ ফুরনোর আগেই তাদের মুক্তি দিয়েছে গুজরাট সরকার। যা ঘিরে শুরু হয়েছে বিতর্ক।