ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: যতবারই ক্যামেরার সামনে মুখ খুলছেন, ততবারই অসংলগ্ন মুকুল রায়। যার জেরে বারবার অস্বস্তির মুখে পড়তে হচ্ছে দলকে। সদ্য বীরভূমে গিয়ে তাঁর মন্তব্যে ঠিক এমনটা হয়েছে। দল কড়া অবস্থানও নিয়েছে। যার প্রেক্ষিতে ছেলে শুভ্রাংশুর বক্তব্য, বাবার শরীর একেবারে ভাল নেই। নানারকম শারীরিক আর মানসিক সমস্যায় ভুগে এই দশা।
শনিবার শুভ্রাংশু বলেন, “দল বাবার অবস্থা সবটা জানে।” মুকুলের (Mukul Roy) এমন পরিস্থিতির কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে শুভ্রাংশু বেশ কিছু বিষয়ের উল্লেখ করেন। বলেন, “বাবার শরীরটা একদমই ভাল নেই। মায়ের চলে যাওয়া, আমার অসুস্থতা, বাবার নিজের কোভিড আর সব থেকে যেটা মারাত্মক, সেটা হল কুড়ি বছর ধরে বাবার সুগার।” এতেই মুকুল রায়ের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটেছে বলে জানাচ্ছেন বীজপুরের প্রাক্তন বিধায়ক।
[আরও পড়ুন: বড়দিনে সেলফি তুলতে গিয়ে বিপত্তি, চার্চের জ্বলন্ত মোমবাতি থেকে আগুন তরুণীর চুলে]
চিকিৎসকরা কী বলছেন? একেবারে চমকে দেওয়ার মতো তথ্য দিলেন ছেলে। বলছেন, “আচমকা সব ভুলে যাচ্ছেন। দিন, মাস, বছর সব। বারবার বলে দিতে হচ্ছে আজ কী কর্মসূচি। নিজে থেকে কোনও আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। বলে দিলে কিছু করছেন।” এক সময় যাঁকে তৃণমূলের চানক্য বলা হত, যাঁর মেলানো হিসাব প্রায় হুবহু মিলে গিয়েছিল ২০১১ ও ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে, সেই মুকুল এখন ১০০ থেকে ৭ বাদ দিলে কত, তার জবাব দিতেও একটু ভেবে বলেন। চিকিৎসকরা তাই তাঁকে ‘অ্যাকটিভ’ থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। এখানেই শুভ্রাংশুর বক্তব্য, “থেকে থেকেই যিনি সব ভুলে যাচ্ছেন, চিকিৎসকদের পরামর্শ কীভাবে তিনি মনে রাখবেন!” তাঁর কথায়, “সদ্য বীরভূমের কর্মসূচিতে যাওয়াটা অনেকটা তাই আমন্ত্রণ রক্ষার মতো। বাড়ির বাইরে একটু বেরনোই ছিল উদ্দেশ্য। তাও তাঁকে এই অনুষ্ঠানের কথা মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছিল।”
একুশের বিধানসভা নির্বাচনের ফল বেরনোর পরপরই তৃণমূলে যখন মুকুল ফিরলেন, সে সময়ই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) শুভ্রাংশুকে বাবার শারীরিক অবস্থার কথা বলে কাঁচড়াপাড়া থেকে যাতায়াত না করে কলকাতায় বাবার সঙ্গে এসে থাকার পরামর্শ দিয়েছিলেন। আলিপুরে সরকারি বাসভবনেরও ব্যবস্থা করে দেন মমতা নিজেই। কিন্তু কলকাতায় আর একসঙ্গে থাকা হয়নি বাবা-ছেলের। বাবা নানা জায়গায় যাতায়াত করেন সল্টলেকের বাসভবন থেকে। কখনও পুরনো বাড়ি ছুঁয়ে যান। ছেলের আসা-যাওয়া সেই পুরনো বাড়ি থেকেই।