সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এগারোটি দুর্নীতি মামলায় দোষী সাব্যস্ত আং সান সু কি (Aung San Suu Kyi)। বুধবার আদালতের রায়ে পাঁচ বছরের জেলের সাজ হয় নোবেলজয়ী ওই নেত্রীর। এখানেই শেষ নয়, সবমিলিয়ে মায়ানমারের প্রাক্তন কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে আঠেরোটি অভিযোগ রয়েছে। সব মামলায় দোষী প্রমাণিত হলে ১৯০ বছরের জেল হতে পারে সু কি’র।
[আরও পড়ুন: করাচি হামলায় ৩ নাগরিকের মৃত্যুতে ক্ষিপ্ত চিন, ইসলামাবাদকে একহাত নিল বেজিং]
রয়টার্স সূত্রে খবর, এদিন রাজধানী নাইপিদাও-য়ে ১১টি দুর্নীতি মামলায় সু কি’র বিরুদ্ধে শুনানি হয়। বন্ধ দরজার পিছনে হওয়া দীর্ঘ সওয়াল জবাবের পর, সু কি-র বিরুদ্ধে থাকা অভিযোগ সত্যি বলে প্রমাণিত হয় এজলাসে। যদিও গোটা বিচার প্রক্রিয়াই মেকি এবং জুন্টার নির্দেশেই সু কি-কে ফাঁসানো হয়েছে বলে দাবি করছেন প্রাক্তন কাউন্সিলরের সমর্থকরা। জানা গিয়েছে, এদিন যে সমস্ত দুর্নীতি মামলার শুনানি হয়েছে, তার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে ইয়াঙ্গনের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ফিও মিন থেনের করা অভিযোগ। একদা সু কি’র বশংবদ হিসেবে পরিচিত থেন অভিযোগ করেন যে, সোনা ও টাকা মিলিয়ে তাঁর কাছ থেকে প্রায় ৬ লক্ষ ডলার নিয়েছেন সু কি। যদিও সু কি’র দাবি সমস্ত অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা।
এদিকে, আদালতের রায়ের বিরোধিতায় সরব হয়ছে আন্তর্জাতিক মঞ্চ। দ্রুত সু কি’র মুক্তি দাবি জানিয়েছে বিভিন্ন দেশ। কিন্তু আন্তর্জাতিক চাপের মুখেও কিছুতেই মাথা নত করতে চাইছে না প্রবল ক্ষমতাশালী জুন্টা। বার্মিজ সেনার প্রধান মিন আউং হ্লাইং জানিয়েছেন গোপন সমস্ত মামলার রায় না আসা পর্যন্ত কারাগারেই থাকতে হতে পারে সু কি-কে।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি আচমকাই মায়ানমারের (Myanmar) ক্ষমতা দখল করে সেনাবাহিনী। পতন হয় নির্বাচিত সরকারের। তারপর থেকেই সেনার নির্দেশে গৃহবন্দি মায়ানমারের নেত্রী আং সান সু কি (Aung San Suu Kyi)। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। আর্থিক দুর্নীতি, ভোটে কারচুপি এমনকী ভোটপ্রচারে করোনাবিধি ভাঙারও অভিযোগ রয়েছে নোবেলজয়ী এই নেত্রীর বিরুদ্ধে।
ক্যু-এর প্রায় চার মাস পর গত মে মাসে প্রথমবার তাঁকে আদালতে তোলা হয়। সেখান থেকে আইনজীবীর মাধ্যমে দেশবাসীর উদ্দেশে বার্তা দেন তিনি। ২০২০ সালে বিরোধীদের পরাজিত করে ক্ষমতা দখল করে সু কি’র দল ‘ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি’ (NLD)। মায়ানমার সংসদের নিম্নকক্ষের ৪২৫টি আসনের মধ্যে ৩৪৬টিতে জয়ী হয় তারা। কিন্তু, রোহিঙ্গা ইস্যু থেকে শুরু করে একাধিক বিষয়ে বিগত দিনে সেনাবাহিনীর সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয় সু কি সরকারের। তারপর অভ্যুত্থান পালটে দেয় গোটা চিত্র।