সঞ্জিত ঘোষ, নবদ্বীপ: দোল পূর্ণিমার তিনদিন আমিষ পদ বিক্রি ও ভক্ষণে কার্যত 'নিষেধাজ্ঞা' জারি করেছিল চৈতন্যভূমি নবদ্বীপের পৌরসভা। ১৩ থেকে ১৫ মার্চ আমিষ বর্জনের ডাক দেন খোদ পৌরসভার চেয়ারম্যান। কিন্তু সেই আবেদন উড়িয়ে দোলের দিন নবদ্বীপজুড়ে মাছ-মাংস বিক্রি হল দেদার। হোটেলগুলিতে ভিড় আমিষপ্রেমীদের। ফলে 'ফতোয়া' জারির প্রথম দিন কিছুটা ব্যাকফুটেই পৌরসভা। বৈষ্ণব তীর্থ নবদ্বীপ তার শাক্ত ধারা বজায় রাখল বলে অভিমত নবদ্বীপের সংস্কৃতি বিশেষজ্ঞদের।
চলতি বছর দোল উপলক্ষে ১৩ থেকে ১৫ মার্চ, তিনদিন শহরবাসীর কাছে আমিষ বর্জনের আবেদন করেছিলেন নবদ্বীপ পৌরসভার চেয়ারম্যান বিমানকৃষ্ণ সাহা। দোল উপলক্ষে নবদ্বীপে আসা তীর্থযাত্রীদের দৃশ্য স্বচ্ছন্দ্যের কথা মাথায় রেখে সমস্ত কসাইখানা বন্ধ রাখা এবং বাজারে মাছ-মাংস বিক্রি না করার কথাও বলেছিলেন তিনি। চেয়ারম্যানের মন্তব্য ছিল, বৈষ্ণব ভক্তদের কাছে এই দৃশ্য অসহনীয়। কিন্তু আবেদনই সার! শুক্রবার, দোল পূর্ণিমার দিন নবদ্বীপে দেদার বিক্রি হল মাংস। পরিমাণে কম হলেও বিক্রি হয়েছে মাছও। খোলা রইল একাধিক আমিষ হোটেল।
নবদ্বীপ পৌরসভা এলাকার এক আমিষ হোটেলের কর্ণধার রাজীব দেবনাথ জানাচ্ছেন, ''পেটের দায়ে হোটেল খোলা রেখেছিলাম। আশঙ্কা ছিল, বিক্রি নাও হতে পারে। তবে অনেক মানুষ খেতে এসেছেন। মুরগির মাংসের চাহিদা ছিল সবথেকে বেশি।'' খাসির মাংস বিক্রি করে নিশীথ মণ্ডল। তিনি বলছেন, ''মাংস তো ভালোই বিক্রি হল, অন্যদিনের মতোই। উন্মাদনা না থাকলেও ভাটাও পড়েনি।" এসব শুনে উলটো সুর পৌর চেয়ারম্যান বিমানকৃষ্ণবাবুর। তাঁর দাবি, "আমরা তো কোনও কিছু চাপিয়ে দিইনি। যেটা হয়েছে, মানুষ দেখেছেন। আর এটা মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত সাড়া।"