দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: বাঘদুটিকে দেখে আদর করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নাম দিয়েছিলেন 'সোহান ' আর 'সোহানি'। আগেই প্রাণ হারিয়েছে 'সোহানি। এবার মৃত্যু হল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাধের 'সোহান'-এর। শনিবার বনদপ্তরের তরফ থেকে এই খবরটি নিশ্চিত করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর নিয়মমাফিক শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে বলে খবর।
ঝড়খালি ব্যাঘ্র পুনর্বাসন কেন্দ্রে প্রথমে যে দুটি বাঘকে এনে রাখা হয়েছিল তাদের মধ্যে অন্যতম সোহান। সে ছিল পূর্ণবয়স্ক একটি পুরুষ বাঘ। অন্যদিকে সোহানি ছিল বাঘিনী। প্রথম যখন ঝড়খালি পুনর্বাসন কেন্দ্র তৈরি করা হয় তখন, ২০১২ সালে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর উদ্বোধনে যান। আদর করে দুটি বাঘের নামকরণ নিজেই করেন। তারপর থেকেই সেই নামেই ডাকা হয়ে থাকত তাদের। বেশ কয়েকদিন আগে স্ত্রী বাঘ 'সোহানি' মারা যায়। তারপর অসুস্থ হয়ে পড়ে সোহান। শনিবার মৃত্যু হল তারও।
উল্লেখ্য, ২০০৯ সালে বারবার সাতজেলিয়ার লোকালয়ে ঢুকে পড়ছিল সোহান। পরে বনদপ্তরের পাতা খাঁচায় ধরা পড়ে সে। তারপর রাখা হয়েছিল আলিপুর চিড়িয়াখানায়। পরবর্তীতে তাকে পুনরায় ফিরিয়ে আনা হয় ঝড়খালির ব্যাঘ্র পুনর্বাসন কেন্দ্রে। পর্যটকদের কাছে যথেষ্ট আকর্ষণীয় ছিল সোহান ও সোহানি। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ ভিড় জমাতেন তাদের দেখতে। সোহানি মারা যাওয়ার পর নতুন একটি বাঘকে এনে রাখা হয় ঝড়খালিতে। কিন্তু তাতে মন ভরেনি সোহানের। সোহানের জন্য প্রতিনিয়ত ছিল চিকিৎসার ব্যবস্থা। পশু চিকিৎসক নিয়ম করে তার চিকিৎসা করতেন। শুধু তাই নয়, খাবারও দেওয়া হতো যথেষ্ট হিসাব করেই। তা সত্ত্বেও শেষরক্ষা হল না। এ বিষয়ে রাজ্যের বন্যপ্রাণ শাখার অধিকর্তা নীলাঞ্জন মল্লিক বলেন, "বিষয়টি দুঃখের। তবে যথেষ্ট বয়স হয়েছিল এই বাঘটির। প্রায় ২২ বছর। বেশ কিছুদিন যাবৎ বাম চোখে ছানি পড়ার কারণে দেখতেও পাচ্ছিল না সে। সব মিলিয়ে বয়সজনিত অসুস্থতার কারণে মারা গিয়েছে বাঘটি।"