জ্যোতি চক্রবর্তী, বনগাঁ: আগামী মঙ্গলবার মতুয়া ধর্মমেলা এবং পুণ্যস্নান। বনগাঁর ঠাকুরবাড়িতে লক্ষাধিক ভক্ত সমাগমের সম্ভাবনা। আর সেই অনুষ্ঠানেই বার্তা দেবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। বনগাঁর বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর শনিবার খোদ একথা জানান। মতুয়াদের মন পেতেই কী এই উদ্যোগ, রাজনৈতিক মহলে উঠছে প্রশ্ন।
রাজ্য তথা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছেন মতুয়া (Matua Mahasangha) ভক্তরা৷ মতুয়া ধর্ম মহামেলা উপলক্ষে এবছর রেলদপ্তরের পক্ষ থেকে স্পেশ্যাল এবং এক্সপ্রেস মিলিয়ে ১৫টি ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শনিবার বনগাঁর বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর বলেন, “এবার মতুয়া ধর্মমেলা উপলক্ষে পুণ্যস্নান শুরু হচ্ছে ২৯ মার্চ।”
পুণ্যস্নান উপলক্ষে উত্তরাখণ্ড, কর্ণাটক, মহারাষ্ট্র-সহ দেশের বিভিন্ন রাজ্য থেকে বিশেষ ট্রেন এবং এক্সপ্রেসে চড়ে ভক্তরা ঠাকুরনগরে আসবেন৷ আন্দামানে (Andaman) থাকা মতুয়া ভক্তদের জন্য বিশেষ জাহাজের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যদি প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হয় তাহলে আন্দামানে থাকা মতুয়া ভক্তরা জাহাজে করে খিদিরপুরে আসবেন। সেখান থেকে ঠাকুরবাড়ি আসবেন।”
[আরও পড়ুন: আরও ৬ মাস বিনামূল্যে রেশন পাবেন ৮০ কোটি ভারতবাসী! বড় ঘোষণা মোদি সরকারের]
ধর্মমেলা নিয়ে বিরোধ থাকলেও এবার মতুয়া বাড়ির দু’পক্ষই একসঙ্গে মেলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অতীতে মেলার আয়োজন নিয়ে বনগাঁ বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের সঙ্গে বনগাঁর প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ মমতা ঠাকুরের মধ্যে বারবার বিরোধ ফুটে উঠেছে। মতুয়া ভক্তরাও দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। কিন্তু এবার দু’পক্ষই একসঙ্গে মেলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
গাইঘাটার বিজেপি বিধায়ক তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের (Shantanu Thakur) ভাই সুব্রত ঠাকুর বলেন, ‘‘একটা জট ছিল। এখন সে সবের ঊর্ধ্বে উঠে একসঙ্গে মেলা আয়োজন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আগামী দিনেও একসঙ্গে চলব। রাজনীতি রাজনীতির জায়গায়। ঠাকুরবাড়িতে সবাই এক।” তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ মমতা ঠাকুর বলেন, ‘‘গত দু’বছর ধরে করোনার কারণে মেলা হয়নি। এবার মেলা হচ্ছে। ঠাকুরবাড়ির ভক্তদের মধ্যে কোনও ভেদাভেদ নেই। ভক্তরা সবাই এক। এই বার্তা ভক্তদের কাছে পৌঁছে দিতেই একসঙ্গে কাজ করার সিদ্ধান্ত।”
রাজনৈতিক মহলের মতে, সাম্প্রতিক সময়ে বিজেপির (BJP) রাজ্য কমিটি তৈরি হয়েছে বিজেপির অন্দরে বিরোধ তৈরি হয়। মতুয়াদের সেখানে প্রাধান্য দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ ওঠে৷ তা নিয়ে সরব হন খোদ শান্তনু ঠাকুর। বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতিও মতুয়াদের মধ্যে থেকে কাউকে না করায় শান্তনু ঠাকুর ও তার অনুগামীরা প্রকাশ্যেই ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন৷ এই পরিস্থিতিতেই ধর্মমেলায় মতুয়াদের উদ্দেশে বার্তা দেবেন প্রধানমন্ত্রী। ক্ষোভ প্রশমনে মতুয়াদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বার্তা দেবেন বলেই মনে করা হচ্ছে।