সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চাঁদ (Moon) সম্পর্কে এতদিনের ধারণাতেই যেন বড়সড় পরিবর্তনের হদিশ। চাঁদে জলের পরিমাণ (Water) যতটা রয়েছে বলে ভাবা হয়েছিল, সম্ভবত তার চেয়ে অনেক বেশি পরিমাণে জল রয়েছে পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহে। এবং তা ভবিষ্যতে চাঁদের মাটিতে পা রাখা নভোচারীদের দারুণ সাহায্য করতে পারে। সোমবার মার্কিন গবেষণা সংস্থা নাসা (NASA) এমনটাই জানিয়েছে। দু’টি গবেষণার সূত্রেই এই কথা জানিয়েছে তারা। জানিয়েছে, এই প্রথম চাঁদের সূর্যালোকিত অংশেও মিলেছে জলের সন্ধান। নাসার স্ট্র্যাটোস্ফেরিক অবজারভেটরি ফর ইনফ্রারেড অ্যাস্ট্রোনোমি তথা সোফিয়া টেলিস্কোপ তা খুঁজে পেয়েছে।
‘নেচার অ্যাস্ট্রোনমি’তে প্রকাশিত এই নতুন গবেষণা সম্পর্কে টুইট করে নাসা জানিয়েছে, ‘‘আমাদের সোফিয়া টেলিস্কোপের সাহায্যে আমরা জলের সন্ধান পেয়েছি চাঁদের সূর্যালোকিত অংশেও।’’ নাসা আরও জানিয়েছে, বিজ্ঞানীরা মনে করছেন এই জল সম্ভবত জমা রয়েছে মাটির ভিতরে, যা পেনসিলের ডগার চেয়েও ছোট ছোট আকৃতির গর্তের মধ্যে রয়েছে। কয়েক দশক আগেও মনে করা হত চাঁদের বুকে জল নেই। তা পুরোপুরি শুষ্ক। কিন্তু প্রায় এক দশক আগে পরপর কয়েকটি আবিষ্কারের মাধ্যমে সেই ধারণা ভেঙে যায়। জানা যায়, চাঁদে জলের অস্তিত্বের কথা।
[আরও পড়ুন: প্রযুক্তি দিয়ে পরিবেশের ক্ষয়রোধ সম্ভব নয়, বরিস জনসনের ধারণা ভেঙে দিলেন বিশেষজ্ঞরা]
কিন্তু এবার সেই ধারণাতেও এল পরিবর্তন। আসলে প্রথমে বিজ্ঞানীরা জল অর্থাৎ H2O ও হাইড্রক্সিলের মধ্যে ফারাক করতে পারেননি। প্রসঙ্গত, হাইড্রক্সিল হল এমন এক অণু যার মধ্যে অক্সিজেনও হাইড্রোজেন দুইয়েরই একটি করে পরমাণু রয়েছে। নতুন গবেষণা প্রমাণ করে দিচ্ছে, চাঁদে আণবিক আকারে জল রয়েছে, এমনকী চাঁদের সূর্যালোকিত অংশেও।
সংবাদ সংস্থা এএফপিকে এই গবেষণার অন্যতম গবেষক কেসি হনিবল জানিয়েছেন, সম্ভবত এই জলকে পানীয় জল, শ্বাসপ্রশ্বাসের উপযুক্ত অক্সিজেন কিংবা রকেটের জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। ফলে আগামী দিনে মানুষ চাঁদে গেলে এই আবিষ্কার দারুণ সাহায্য করতে পারে।
গবেষণা থেকে আরও জানা গিয়েছে চাঁদের মেরু অঞ্চলেও ছোট ছোট ক্রেটার বা গর্তের মধ্যে বরফ আকারে জল থাকতে পারে। এই সব অংশগুলিতে কখনও সূর্যের আলো পড়েনি। এর আগে ২০০৯ সালে নাসা আবিষ্কার করেছিল চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে জল কেলাসিত অবস্থায় রয়েছে গভীর গর্তের মধ্যে। কিন্তু এবার বিজ্ঞানীরা খুঁজে পেয়েছেন কোটি কোটি খুদে গর্ত। মনে করা হচ্ছে, এগুলির মধ্যে বরফ আকারে জল রয়েছে। ফলে গবেষকরা মনে করছেন, আগের ধারণাকে ভুল প্রমাণিত করে চাঁদের আরও বহু বিস্তৃত অংশেই জল রয়েছে। চাঁদ সম্পর্কে এতদিনের গবেষণার নিরিখে এই আবিষ্কারকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।