রাহুল রায়: প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে প্যারা অলিম্পিক সাঁতারে অংশগ্রহণ করেছিলেন। দেশের হয়ে ক্রীড়াক্ষেত্রে সর্বোচ্চ পর্যায়ে প্রতিনিধিত্ব করার পুরস্কার হিসাবে শ্রেষ্ঠ ক্রীড়াবিদের সম্মান দিয়েছিল রাজ্য সরকার। এবার সেই ক্রীড়াবিদকেই যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে বঞ্চিত করার অভিযোগ উঠল। এ নিয়ে মামলা দায়ের হল কলকাতা হাই কোর্টে (Calcutta High Court)।
২০১২ সালে প্যারা অলিম্পিকে (Para Olympics) সাঁতার প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছিলেন দিবাকর কুণ্ডু। ২০১৫ সালে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে তাকে ‘মেরিটোরিয়াস স্পোর্টসপার্সন’ হিসাবে সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়। সরকারি চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে এই সার্টিফিকেট কাজে লাগার কথা। কিন্তু দিবাকরবাবুর (Dibakar Kundu) অভিযোগ, যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও তাঁকে চাকরির পরীক্ষায় বিশেষ সুবিধা দেওয়া হয়নি। রাজ্য সরকারের পঞ্চায়েত দপ্তরে যোগ্য প্রার্থী হয়েও তাকে বঞ্চিত করা হয়েছে বলে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি।
[আরও পড়ুন: পূর্ব লাদাখে ভারতের জমি দখল করেছে চিন! চাঞ্চল্যকর দাবি এলাকার কাউন্সিলরের]
২০১৮ সালে উত্তর দিনাজপুর জেলায় বিভিন্ন পঞ্চায়েতের এক্সিকিউটিভ অ্যাসিস্ট্যান্ট পদের নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করে জেলা প্রশাসন। সেখানে দিবাকরবাবুও আবেদন জানান। কিন্তু ওই নিয়োগ পরীক্ষায় একাধিক অসংগতি দেখতে পান তিনি। প্যারা অলিম্পিকে অংশ নেওয়া সাঁতারুর অভিযোগ, ওই পরীক্ষায় সরকারি নির্দেশিকা মেনে ক্রীড়াবিদদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়নি। পরীক্ষায় অতিরিক্ত সময়ও বরাদ্দ করা হয়নি তাঁর জন্য। যা রাজ্য সরকারের শ্রম দপ্তরের গেজেট নোটিফিকেশনের পরিপন্থী। শুধু তাই নয়, ওই পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বর সমেত মেধা তালিকাও প্রকাশ করা হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন দিবাকরবাবু।
[আরও পড়ুন: কাশ্মীরে বাংলার শ্রমিককে লক্ষ্য করে গুলি, হামলাকারী দুই জেহাদিকে নিকেশ করল সেনা]
বুধবার বিচারপতি শম্পা সরকারের (Shama Sarkar) এজলাস মামলার শুনানি চলাকালীন দিবাকর কুণ্ডুর পক্ষের আইনজীবী আশিস কুমার চৌধুরী বলেন, প্রতিবন্ধী হওয়া সত্বেও সমস্ত প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে প্যারা অলিম্পিকে দেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন তাঁর মক্কেল। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকেও দিবাকরবাবুকে শ্রেষ্ঠ ক্রীড়াবিদ হিসাবে সম্মানিত করা হয়। কিন্তু নিয়োগের ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের নির্দেশিকায় যা যা সুবিধা পাওয়ার কথা, ডিস্ট্রিক্ট লেভেল সিলেকশন কমিটি সেই সুযোগ-সুবিধা থেকে তাঁকে বঞ্চিত করেছে। সব পক্ষের শুনানির পর বিচারপতি শম্পা সরকার উত্তর দিনাজপুরের জেলাশাসককে নির্দেশ দেন, অবিলম্বে মামলাকারীর সমস্ত নথিপত্র নিয়ে অভিযোগ খতিয়ে দেখে যদি কোনও দুর্নীতি হয়ে থাকে তাহলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। পাশাপাশি কেন ক্রীড়াবিদ বঞ্চিত হলেন তার রিপোর্ট ৬ সপ্তাহের মধ্যেই ক্রীড়াবিদকে জানাতে হবে।