বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত, নয়াদিল্লি: শীতকালীন অধিবেশনে এনডিএ'র শরিকদের মধ্যে সমন্বয়ের যথেষ্ট অভাব ছিল। বিশেষ করে 'এক দেশ এক ভোট' বিল পেশ নিয়ে ভোটাভুটি ও আম্বেদকর ইস্যুতে অমিত শাহর মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে তৈরি হওয়া বিতর্কের সময় সংসদের দুই কক্ষেই ছন্নছাড়া ছিল শাসক শিবির। ফায়দা তুলেছে ইন্ডিয়া জোট। তাই আগামী দিন সংসদের অধিবেশন চলাকালীন এনডিএ জোটের শরিকদের আরও ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে বলে শরিক নেতৃত্বের কাছে আবেদন জানালেন বিজেপি সভাপতি ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জেপি নাড্ডা। বুধবার নাড্ডার বাড়িতে বৈঠকে বসে এনডিএ'র শীর্ষ নেতৃত্ব। ছিলেন বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব ও জোটের মুখ্যমন্ত্রীরা।
বুধবার ছিল প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীর জন্মশতবর্ষ। এদিন সকালেই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে শ্রদ্ধা জানান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহ ও জেপি নাড্ডারা। সন্ধ্যায় শরিকদের মধ্যে সমন্বয় বাড়ানোর লক্ষ্যে নিজের বাড়িতে বৈঠক ডাকেন জেপি নাড্ডা। বৈঠকে যোগ দিতে মঙ্গলবার রাতেই দিল্লিতে পৌঁছন অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডু।
এবারের শীতকালীন অধিবেশন ছিল ঘটনা বহুল। এক দেশ এক ভোট বিল পেশ হলেও তা পাঠিয়ে দেওয়া হয় যৌথ সংসদীয় কমিটিতে। সংবিধান নিয়ে আলোচনা সময় রাজ্যসভায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর বিতর্কিত মন্তব্যের ফলে উত্তাল হয়ে ওঠে সংসদের অধিবেশন। সংসদ ভবনের মকর দ্বারের সামনে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পরে পড়েন সরকার ও বিরোধী পক্ষের সাংসদরা। রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে ধাক্কা মেরে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ করেন বিজেপির দুই সাংসদ। বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন শাসক দলের সাংসদরা। কিন্তু কোনওক্ষেত্রেই কেন্দ্রের শাসক জোটকে ঐক্যবদ্ধ হতে দেখা যায়নি। বরং বিরোধীদের তুলনায় ছিল ছন্নছাড়া। ফলে সংসদের অন্দরে গেরুয়া শিবিরের নেতৃত্বের আলগা হচ্ছিল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। তাদের মতে, নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন গত দুটি শাসনকালে শরিকদের ওপর ভরসা করতে হয়নি বিজেপিকে। একাই সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছিল পদ্ম শিবির। কিন্তু এবার পরিস্থিতি ভিন্ন। সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই বিজেপির। তাই শরিকদের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে।
বছর ঘুরলেই দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনের পাশাপাশি বসবে বাজেট অধিবেশন। ফলে শরিকদের মধ্যে সমন্বয়ে জোর দেওয়া সিদ্ধান্ত নিয়েছে গেরুয়া পদ্মপক্ষ। এছাড়াও এক দেশ এক ভোট ও ওয়াকফ নিয়ে শরিক নেতৃত্বের মনোভাব বুঝে নিতে চাইছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি-সহ বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। সেই মতো আগামী দিন কৌশল ঠিক করা হবে বলে যা সূত্রের খবর।