সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পেরিয়েছে প্রায় ৭৫ ঘণ্টা! এখনও ৭০০ ফুট গভীর বোরওয়েলে আটকে রাজস্থানের ৩ বছরের শিশুকন্যা চেতনা। সব চেষ্টা প্রায় ব্যর্থ হওয়ায়, ডাকা হল র্যাট হোল খননকারীদের। এবার নিষিদ্ধ র্যাট হোল মাইনিং পদ্ধতিতেই শিশুটিকে উদ্ধারের চেষ্টা করা হবে।
কী পরিকল্পনা রয়েছে উদ্ধারকারীদের? জানা গিয়েছে, ৭০০ ফুট গভীর বোরওয়েলের ১৫০ ফুটের গভীরে আটকে রয়েছে চেতনা। বোরওয়েলের সমান্তরালে খোঁড়া ১৬০ ফুটের গভীর গর্তে প্রবেশ করবেন র্যাট হোল খননকার্যে পারদর্শী শ্রমিকরা। সেখান থেকে হাতে আরও প্রায় ১০ ফুট লম্বা একটি টালেন বানাবেন তাঁরা। সেই টালেন দিয়েই উদ্ধারের পরিকল্পনা চেতনাকে।
কী এই র্যাট হোল মাইনিং পদ্ধতি? নাম থেকেই আন্দাজ করা যায় ইঁদুরের মতো অল্প, অল্প গর্ত খুঁড়ে বস্তুর দিকে এগিয়ে যাওয়া। ২০১৪ সালের আগে, অনেক খনি থেকে আকরিক উত্তোলনের কাজে এই পদ্ধতি ব্যবহৃত হত। হাতে শাবল-গাঁইতি দিয়ে গর্ত খুঁড়ে এগোতেন শ্রমিকরা। তবে এই পদ্ধতিতে খোঁড়া গর্তের মুখ খুবই সংকীর্ণ। ফলে বিপদের সম্ভাবনা প্রবল। যে-কোনও মুহূর্তে গর্তে ধস নামতে পারে। তার জেরে ২০১৪ সালে এই পদ্ধতিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইব্যুনাল।
তাহলে কেন এই বিপজ্জনক পদ্ধতির সাহায্য নিতে হচ্ছে? উদ্ধারকার্যে দিনরাত এক করে দেওয়া এনডিআরএফের ইনচার্জ জোগেশকুমার মীনা জানাচ্ছেন, "আমরা পাইলিং মেশিনের সাহায্যে ১৫৫ ফুট গর্ত খোঁড়ার পর এক পাথরে বাধাপ্রাপ্ত হই। পরে ১৬০ ফুট গর্ত খুঁড়তে পেরেছি। এখনও আড়াআড়ি ভাবে ১০ ফুট গর্ত খুঁড়তে হবে। সেটা ম্যানুয়াল পদ্ধতিতেই করতে হবে।"
র্যাট হোল খননকার্য নিষিদ্ধ হলেও ২০২৩ সালে নভেম্বরে উত্তরকাশীর সিল্কিয়ারার সুড়ঙ্গে আটকে পড়া ৪১ জন শ্রমিককে উদ্ধারের জন্য এই পদ্ধতিই ব্যবহার করতে হয়। যাঁরা সেই সফল উদ্ধারকার্যে ছিলেন, সেই শ্রমিকদেরই চেতনাকে উদ্ধারের জন্য আনা হচ্ছে বলে খবর।
উল্লেখ্য, সোমবার দুপুরে বাবার ফার্মের কাছে খেলার সময় ৭০০ ফুট গভীর গর্তে পড়ে যায় চেতনা। প্রথমে ১৫ ফুট গভীরে আটকে ছিল শিশুকন্যাটি। পরিবারের সদস্যরা উদ্ধারের চেষ্টা করলে তা হিতে বিপরীত হয়। আরও গভীরে চলে যায় বালিকা। তবে মঙ্গলবার উদ্ধারকারীরা তাকে কিছুটা উপরে তুলে আনতে সক্ষম হয়। গর্তে অক্সিজেনের পাইপ পাঠানো হয়েছে। স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখা হচ্ছে। উৎকণ্ঠায় রাত কাটছে সকলের।