সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শুধু বিরোধী শিবির নয়, ইভিএম বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে সন্দিগ্ধ খোদ বিজেপিও। নির্বাচনী ফলাফল প্রকাশ্যে আসার পর এক ডজনেরও বেশি প্রার্থী ইভিএম ও ভিভিপ্যাট মিলিয়ে দেখার আবেদন জানিয়ে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছেন। এই তালিকায় অন্যান্য রাজনৈতিক দলের পাশাপাশি রয়েছেন খোদ বিজেপি প্রার্থীও।
নির্বাচন কমিশনের রিপোর্ট অনুযায়ী, ভোটের ফল প্রকাশের পর থেকে অন্তত ১০ জন প্রার্থী ইভিএম ও ভিভিপ্যাট মিলিয়ে দেখার আবেদন জানিয়েছেন কমিশনে। এঁদের মধ্যে বেশিরভাগই ১ থেকে ৩টি বুথের ভোটযন্ত্র মিলিয়ে দেখার আবেদন জানিয়েছেন। কেউ আবার তারও বেশি। তবে এই তালিকায় উল্লেখযোগ্য মহারাষ্ট্রের আহমেদনগর লোকসভা আসনের বিজেপি প্রার্থী সুজয় রাধাকৃষ্ণ। তিনি ওই লোকসভা কেন্দ্রের গোটা একটি বিধানসভার ইভিএম ও ভিভিপ্যাট মিলিয়ে দেখার আবেদন জানিয়েছেন। তাঁর সন্দেহ, সংশ্লিষ্ট বিধানসভায় ইভিএমে কিছু গোলমাল করা হয়েছে যার জন্যই হারতে হয়েছে তাঁকে। ১৯ রাউন্ডের গণনায় ১৭ রাউন্ড পর্যন্ত এগিয়ে ছিলেন তিনি। শেষ দুই রাউন্ডে হঠাৎ পিছিয়ে পড়েন এবং হারতে হয় তাঁকে। মোট ১৩টি ইভিএম মিলিয়ে দেখার আবেদন জানিয়েছেন ওই বিজেপি প্রার্থী।
[আরও পড়ুন: শেয়ার বাজার দুর্নীতি! সেবি সাক্ষাতের আগে পওয়ারের বাড়িতে বৈঠক তৃণমূলের প্রতিনিধি দলের]
উল্লেখ্য, সম্প্রতি এই মহারাষ্ট্রেই ইভিএমে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ উঠেছে। এই ইস্যুতে শিব সেনা শিণ্ডে গোষ্ঠীর সাংসদ রবীন্দ্র ওয়াকারের আত্মীয় মঙ্গেশ পন্ডিলকরের বিরুদ্ধে অভিযোগও দায়ের করেছে মুম্বই পুলিশ (Mumbai Police)। অভিযোগ তিনি গণনাকেন্দ্রের মধ্যে ফোন ব্যবহার করেছিলেন। সেই ফোন দিয়ে ওটিপি জোগাড় করে গণনায় কারচুপি করেন। যার জেরেই মাত্র ৪৮ ভোটে জয়ী হয়েছেন শিণ্ডে শিবিরের সাংসদ রবীন্দ্র। পুলিশ দাবি করেছে, এই মঙ্গেশের ফোনের সঙ্গে ইভিএম সংযুক্ত ছিল। ভোট গণনার সময় নাকি মঙ্গেশের ফোনে ওটিপি আসছিল। সেই ওটিপি দিয়ে নাকি ইভিএমগুলি ‘আনলক’ করা যাচ্ছিল। এই আবহে পুলিশ তদন্ত করে বের করতে চাইছে যে মঙ্গেশের কাছে এমন ফোন কোথা থেকে এল যেটি ইভিএম-এর সঙ্গে যুক্ত। ইতিমধ্যেই বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে সেই ফোন।
যদিও সেই অভিযোগ পুরোপুরি খারিজ করেছে নির্বাচন কমিশন। কমিশনের আধিকারিক বন্দনা সূর্যবংশী স্পষ্ট ভাবে জানিয়েছেন, ইভিএম আনলক করতে কোনও ওটিপি লাগে না। এবং ইভিএম একটি স্বতন্ত্র সিস্টেম। এটি কোনও ডিভাইসের সঙ্গে যংযুক্ত নয়। ফলে যে দাবি করা হচ্ছে তা পুরোপুরি মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।’ তবে গণনাকেন্দ্রের কোনও কারচুপি হয়েছিল কিনা তার প্রমাণস্বরূপ সিসিটিভি ফুটেজের দাবি জানানো হলে ওই আধিকারিক বলেন, ‘আদালতের নির্দেশ ছাড়া আমরা কাউকে কোনও সিসিটিভি ফুটেজ দিতে পারি না। এমনকী খোদ পুলিশকেও আমরা এই সিসিটিভি ফুটেজ দিতে অক্ষম।’
[আরও পড়ুন: পান্নুন খুনের ষড়যন্ত্র! মার্কিন আদালতে নিজেকে ‘নির্দোষ’ দাবি নিখিলের]
শুধু তাই নয়, ইভিএম নিয়ে বিস্ফোরক দাবি করেছেন সোশাল মিডিয়া জায়ান্ট এক্সের কর্ণধার এলন মাস্ক। টেসলা কর্তা মাস্ক (Elon Musk) নিজের সোশাল মিডিয়া হ্যান্ডেল এক্সে সম্প্রতি লিখেছেন, “আমাদের দ্রুত ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (EVM) বাতিল করা উচিত। কারণ মানুষ বা এআইয়ের মাধ্যমে ইভিএম হ্যাক করার সম্ভাবনা থেকেই যায়। সেই সম্ভাবনা ক্ষুদ্র হলেও সেটার প্রভাব বিরাট।” মাস্কের সেই বক্তব্যকে সমর্থন করেছেন এদেশের বিরোধী মুখ রাহুল গান্ধী, সপা নেতা অখিলেশ যাদবের মতো বিরোধী নেতারা।