সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: হাই কোর্টের নির্দেশ মেনে ঝালদার নিহত কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দুর সেই ভাইপো মিঠুনকে দেওয়া হল সর্বক্ষণের নিরাপত্তারক্ষী। পুরুলিয়ার (Purulia) ঝালদা পুরসভার দু’নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দু খুনে সিবিআই (CBI) তদন্তের দাবির মামলায় কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি রাজশেখর মান্থার শুনানিতে গত মঙ্গলবার ওই মিঠুন কান্দুকে নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য ঝালদা থানার পুলিশ আধিকারিককে নির্দেশ দেন। সেই অনুযায়ী ঝালদা থানার তরফে ভাইপো তথা প্রাক্তন সিভিক ভলান্টিয়ার মিঠুন কান্দুকে একটি কনস্টেবল মোতায়েন করে তাঁর নিরাপত্তারক্ষী দিয়েছে। পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার এস. সেলভামুরুগন বলেন, ”মিঠুন কান্দুকে নিরাপত্তারক্ষী দেওয়া হয়েছে।”
এই খুনের ঘটনায় নাটকীয় মোড় নেয় অভিযুক্ত ঝালদা থানার আইসি সঞ্জীব ঘোষের সঙ্গে এই মিঠুন কান্দুর ভাইরাল হওয়া কথোপকথনের দুটি পর্যায়ের অডিও (সংবাদ প্রতিদিন যার সত্যতা যাচাই করেনি)। ওই অডিও গুলিতে আইসি সঞ্জীব ঘোষ কাউন্সিলর তপন কান্দু, তাঁর স্ত্রী পূর্ণিমা কান্দু-সহ মোট তিন কংগ্রেস কাউন্সিলরকে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন বলে প্রকাশ পেয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ের যে অডিও ভাইরাল (Viral) হয়েছে, সেখানে ওই ভাইপো মিঠুন কান্দুকে তাঁর কাকিমার অভিযোগের বয়ান বদলে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। এমনকী আইসি (IC)তাঁর নিজের কাছে মিঠুনকে আসতে বলে তাঁরই বন্দুক দিয়ে তাঁকে গুলি করার কথা বলে কাকার খুনের বদলা হয়ে যাবে, এমনই শোনা যায় ওই অডিওতে। সেই কারণেই এই মামলার অন্যতম মূল সাক্ষী মিঠুনকে হাই কোর্টের নির্দেশে বলা হয়, দ্রুত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে। মিঠুন কান্দু বলেন, ”মঙ্গলবার রাতেই একজন নিরাপত্তারক্ষী পেয়েছি।”
[আরও পড়ুন: মূল্যবৃদ্ধির ক্ষতে প্রলেপ! সরকারি কর্মচারীদের DA বাড়াল কেন্দ্র]
এদিকে, তপন কান্দু খুন হওয়ার পরেই তাঁর স্ত্রী পূর্ণিমা কান্দুও একজন নিরাপত্তারক্ষী পেয়েছিলেন। পরে আরও একজন রক্ষীকে তাঁর কাছে পাঠানো হয়েছে। ঝালদা পুরসভার বাকি ১০ কাউন্সিলরের জন্য একজন করে নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন করে পুরুলিয়া জেলা পুলিশ। যদিও অধিকাংশ কাউন্সিলরই রক্ষী নিতে রাজি হননি।
[আরও পড়ুন: সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটালের খবরের জের, প্রশাসনিক তৎপরতায় শিকলমুক্ত ‘অসুস্থ’ যুবক]
গত ১৩ মার্চ বিকেলে হাঁটতে গিয়ে ঝালদা-বাঘমুন্ডি সড়কপথে গোকুলনগর গ্রামের কাছে আততায়ীদের গুলিতে খুন হন ঝালদা পুরসভার দু’নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দু। এই ঘটনার পরেই তোলপাড় হয়ে যায় রাজ্য রাজনীতিতে। ঘটনার পর থেকেই তাঁর স্ত্রী পূর্ণিমা দেবী দাবি জানিয়ে আসছেন এই ঘটনার বিচার চাই। সেই বিচারে একমাত্র সিবিআই সঠিকভাবে তদন্ত করতে পারবে বলে তাঁর দাবি। আর তাঁর দাবিকে সামনে রেখেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দল সরব হয়েছে। সম্প্রতি পূর্ণিমা দেবী সিবিআই তদন্তের দাবিতে হাই কোর্টের (Calcutta HC) দ্বারস্থ হন। এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে শুক্রবার। অন্যদিকে, তপন কান্দু হত্য়াকাণ্ডের প্রতিবাদে আজ এসপি অফিস ঘেরাও অভিযানে শামিল হয় জেলা কংগ্রেস। মিছিলে নেতৃত্ব দিয়েছেন জেলা কংগ্রেস সভাপতি তথা বর্ষীয়ান নেতা নেপাল মাহাতো।