সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: কংসাবতী নদীর তিরতিরে স্রোত। তার পাশেই ঘন সবুজ বন। ছোট ছোট পাহাড়-টিলা। সেই জঙ্গলের পাশেই তাঁবুতে রাত্রিযাপন। সঙ্গে লোকশিল্পের স্বাদ। বাংলার অ্যাডভেঞ্চার টুরিজমের নয়া ঠিকানা পুরুলিয়ার (Purulia) মানবাজারের হাতিপাথর।
‘মাটির সৃষ্টি’ প্রকল্পে মানবাজার এক নম্বর পঞ্চায়েত সমিতি ও জিতুজুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের উদ্যোগে এই পর্যটন কেন্দ্রের দরজা খুলেছে। যেখানে পাওয়া যাবে রোদে পোড়া, বৃষ্টি ভেজা মাটির ঘ্রাণ l শালপাতার থালা বাটিতে খাওয়া-দাওয়ায় যেন চড়ুইভাতির আনন্দ। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর আপ্যায়নে উইকেন্ডের (Weekend Trip) ছুটিতে হারিয়ে যাওয়াই যায় এই অরণ্যময় প্রান্তরে, দূষণহীন প্রকৃতিতে।
[আরও পড়ুন : COVID-19: সংক্রমণ ঠেকাতে ফের কড়া বিধিনিষেধের পথে হাঁটতে পারে রাজ্য! দাবি সূত্রের]
জঙ্গল ঘেরা এই হাতিপাথর যেন পটে আঁকা ছবি। একেবারে স্বপ্নের জগৎ। পুরুলিয়ার মানবাজারে এসে জিতুজুড়ি হয়ে যাওয়া যায় হাতিপাথরে। আবার সোজা পুরুলিয়া শহর থেকে থেকে জিতুজুড়ি প্রায় ৪৪ কিমি। সেখান থেকে হাতিপাথর আড়াই কিলোমিটারের মধ্যে। গত ডিসেম্বরের শেষ দিকে এই পর্যটন কেন্দ্রের দ্বার খুলে যাওয়ার পর থেকেই ভিড় বাড়ছে পর্যটকদের। এই কেন্দ্রেই রয়েছে বনভোজনের ব্যবস্থা। ফলে নতুন বছরের পয়লা দিনে ভিড় ছিল ভালই।
মানবাজার এক নম্বর ব্লকের বিডিও মোনাজকুমার পাহাড়ি বলেন, ” মাটির সৃষ্টি প্রকল্পে আমরা এই পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তুলেছি। পরিবেশবান্ধব এই পর্যটনে একেবারে মাটির ঘ্রাণই এই প্রকল্পের বৈশিষ্ট্য।” রয়েছে দু’টি কটেজ, ছ’টি তাঁবু। একেবারে জঙ্গল ছুঁয়ে রাত্রিবাসের সঙ্গে মাটির গন্ধ মাখা শালপাতায় স্বনির্ভর গোষ্ঠীদের হাতে তৈরি দেশি মুরগি রসনায় তৃপ্তি দেবে। এছাড়া একেবারে পুরুলিয়ার স্টাইলে মিলবে মুড়ি, ঘুগনি, চপ লঙ্কা, পিঁয়াজও। বলা যায়, সব রকম খাওয়ারই ব্যবস্থা রয়েছে।
[আরও পড়ুন : রাজ্যে করোনার নয়া চিকিৎসাবিধি, ব্যবহার হবে ককটেল থেরাপি এবং ওরাল ট্যাবলেট]
ছোটদের আনন্দ- বিনোদনের জন্য হয়েছে নানান খেলার সরঞ্জাম। হরেক কিসিমের পাখি, টার্কি যেন আলাদাভাবে চোখ টানবে। সেই সঙ্গে স্থানীয় লোকশিল্পীদের মাধ্যমে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। ছৌ, ঝুমুর, বাউল, বাহায় মন ভরিয়ে দেবে। চারদিকে দিগন্ত বিস্তৃত সবুজ পাহাড়ের মাঝে কংসাবতীর কলধ্বনি যেন সবুজ করে দেওয়ার হাতছানি।