আকাশ মিশ্র: পরিচালক অভিজিৎ চৌধুরী বরাবরই তাঁর সিরিজে এমনভাবে গল্প বলেন, যা শুরুতে একরকম, পরে একেবারে একশো আশি ডিগ্রি ঘুরে যায়। প্রমাণ রয়েছে এই পরিচালকের ‘আস্তে লেডিজ’ সিরিজেও। তবে জনি বনির ক্ষেত্রে ছক এক থাকলেও, এই সিরিজ অভিজিতের সব সিরিজ থেকে একেবার আলাদা। কারণ, পরিচালক এবার কমেডিকে মেশালেন ক্রাইম থ্রিলারের সঙ্গে। আর সেখানেই বাজিমাত করল ক্লিক প্ল্যাটফর্মের নতুন সিরিজ ‘জনি বনি’। বলা ভাল, এই সিরিজের গল্প এবং গল্প বলার কায়দাই সব সিরিজ থেকে একে এগিয়ে রাখে।
গল্পটা একটু ছুঁয়ে নেওয়া যাক। পুলিশ অফিসার জনার্দন ওরফে জনি (দেবাশিস মণ্ডল)। তার শাস্তিমূলক বদলি হয়েছে এক নেতার বাড়ির নিরাপত্তারক্ষী হিসেবে। পুলিশ অফিসার হয়েও নেতার বাড়ির টুকটাক কাজ সারতে হয়। কুকুরকে ঘোরানো থেকে শুরু করে বাজারঘাট। গোটা ঘটনায় হতাশ অফিসার জনি। মনে মনে ইচ্ছে চেপে রাখে একটা দারুণ কেস সমাধান করার। ঠিক তখনই অফিসারের বাড়িতে হাজির হয় তাঁর বউয়ের বোন পো দাবারু বনি। এরপরেই সিরিজের গল্প অন্য দিকে ঘুরতে থাকে। জনি আর বনি মিলে সমাধান করে এক কঠিন কেসের। যা গল্পের আসল মোচড়।
[আরও পড়ুন: কর্মহীন দুই যুবকের গল্পে নজর কাড়লেন রুদ্রনীল ও রাহুল, কেমন হল ‘আকাশ অংশত মেঘলা’? পড়ুন রিভিউ]
এই গল্পকেই এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন পরিচালক অভিজিৎ। তবে ক্রাইম থ্রিলারের সঙ্গে কমেডি মিশিয়েই বাজিমাত করেছেন তিনি। যা কিনা খুব একটা সিরিজে দেখা যায় না। যেমন, অফিসার জনার্দনের সঙ্গে তাঁর মৃত বাবার কথোপকথন এই সিরিজে একটা নতুনত্ব দেয়। বেশ কিছু দৃশ্য, বিশেষ করে জনি ও বনির যুগলবন্দি সিরিজকে জমিয়ে রাখে।
এই সিরিজের সবচেয়ে স্ট্রং পয়েন্ট হল, প্রত্যেকের অভিনয়। বিশেষ করে মন্দারের তকমাকে ঝেড়ে ফেলে দেবাশিস মণ্ডল এই সিরিজে একেবারে নতুন অবতারে। জনির চরিত্রে তিনি নিজের একশো শতাংশ দিয়েছেন। বিশেষ করে কমেডি দৃশ্যে দেবাশিস অসাধরণ। নজর কেড়েছেন অঙ্কিত মজুমদারও। ভাল লাগবে স্বস্তিকা দত্ত, যুধাজিৎ সরকার, লোকনাথ দের অভিনয়ও।
সব মিলিয়ে জনি বনি এমন এক সিরিজ যা কিনা টান টান রহস্যের সঙ্গে কমেডির ফিল দেবে। তবে ক্লাইম্যাক্সটা আরও একটু জমলে ভাল হত। গল্পের শুরুটা দারুণ হয়েও, শেষটা মাঝারি মানের হয়ে গেল।