সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: মালাবদল, শুভদৃষ্টি। দুটি মানুষের হৃদয়ের মিলন। আর বউভাতের দিনে অঙ্গীকারবদ্ধ হলেন মরণোত্তর চক্ষুদানের। শুধু নবদম্পতি নন। বিবাহ অনুষ্ঠানে উপস্থিত আরও ২০ জন মরণোত্তর চক্ষুদানে অঙ্গীকারবদ্ধ হলেন। বৃহস্পতিবার এই অভিনব প্রতিজ্ঞার সাক্ষী রইল দুর্গাপুরের অন্ডালের বিবাহবাসরে।
অন্ডালের মদনপুর এলাকার বাসকা রোডের বাসিন্দা তপব্রত চক্রবর্তী। মঙ্গলবার তিনি অন্ডালের স্কুল রোডের লাবনী মজুমদারের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন। বৃহস্পতিবার তাঁদের বউভাতের অনুষ্ঠান। সেই দুপুরে নবদম্পতি মরণোত্তর চক্ষুদানের অঙ্গীকার করলেন। দুপুরে স্বাস্থ্য দপ্তরের আধিকারিকরা বাড়িতে যান। সেখানেই কাগজপত্রে সইসাবুদ করা হয়। দুই পরিবারের সদস্যরা ছাড়াও অন্য আত্মীয়স্বজনরাও উপস্থিত ছিলেন। তপব্রত চক্রবর্তীর মা-বাবাও এই অঙ্গীকার করেন। নবদম্পতি-সহ মোট ২২ জন এদিন মরণোত্তর চক্ষুদানে অঙ্গীকারবদ্ধ হন।
রাতে প্রীতিভোজ শেষে অতিথিদের উপহার দেওয়া হয় একটি করে চারাগাছ। শুধু অতিথিরাই নন, এলাকার ৫০ জন ভবঘুরে ও দুস্থরাও আমন্ত্রিত ছিলেন। বাড়ি বাড়ি গিয়ে খাবার দেওয়া হয়। ভবঘুরেদের শীতবস্ত্র দেওয়া হল। তপব্রত চক্রবর্তী বলেন, "বহুদিনের ইচ্ছা ছিল মরণোত্তর চক্ষুদানের অঙ্গীকারবদ্ধ হওয়ার। ভেবেছিলাম বিয়ের প্রীতিভোজের অনুষ্ঠানে মরণোত্তর চক্ষুদানে অঙ্গীকারবদ্ধ হয়ে দৃষ্টিহীনদের পৃথিবীর আলো দেখার সুযোগ করে দেব। সেটাই আজ সম্পূর্ণ করতে পারলাম।" তিনি আরও বলেন, "শুধু আমরাই নয়, আমাদের বেশ কয়েকজন অতিথিও মরণোত্তর চক্ষুদান করেছেন।"
এই বউভাতের অনুষ্ঠান ঘিরে প্রতিবেশীরাও যথেষ্ঠ উৎসাহিত। এই প্রয়াসকে তাঁরা প্রশংসা করেছেন। নবদম্পতির জীবন সুখের হোক। সেই প্রার্থনাও করেছেন।