সুব্রত বিশ্বাস: ট্রেনের ‘গার্ড’ (Guard)পদের বিলুপ্তি। এবার থেকে এই দায়িত্ব সামলানো ব্যক্তিরা সকলেই ‘ট্রেন ম্যানেজার’। সম্প্রতি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে এমনটাই জানিয়েছে রেল বোর্ড (Rail Board)। যদিও বেতন কাঠামোয় কোনও বদল আনা হয়নি। পাশাপাশি ‘গার্ড’ ক্যাটাগরিতেও রদবদল আনা হয়েছে। সহকারী গার্ডদের এই ক্যাটাগরির আওতাভুক্ত করা হয়েছে। আর তা নিয়ে ক্ষুব্ধ রেল কর্মচারী ইউনিয়নের একাংশ। রেলের এই সিদ্ধান্ত ঘিরে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। ফলে ‘ট্রেন ম্যানেজার’ – এই গালভরা তকমাতেও মন ভরল না তাঁদের।
২০০৩ সাল থেকে রেলের কর্মী সংগঠন অল ইন্ডিয়া রেলওয়ে মেনস ফেডারেশনের(AIRMF) দাবি ছিল, চালক বা গার্ড পদের সম্মানজনক নামকরণ করতে হবে। সেইমতো আগেই রেলচালকদের নাম পরিবর্তন হয়ে ‘লোকো-পাইলট’ নামে বলা হচ্ছিল। এবার গার্ডদের পালা। কর্মচারী সংগঠনের দাবিকে মান্যতা দিয়ে তাঁদের ‘ট্রেন ম্যানেজার’ নাম দেওয়া হল।গার্ডের সহকারী যাঁরা ছিলেন, তাঁরাও এবার ‘গার্ড’ ক্যাটাগরির আওতাভুক্ত হলেন।
[আরও পডুন: পাঞ্জাবে চান্নি, সিধু দু’জনকেই প্রার্থী করল কংগ্রেস, টিকিট পেলেন সোনু সুদের বোনও]
রেল আধিকারিকদের একাংশের ব্যাখ্যা, গার্ডদের নিয়োগের পর প্রথমে মালগাড়িতে কাজ করতে হয়। তারপর ধীরে ধীরে লোকাল ট্রেন, মেল, প্যাসেঞ্জার ও এক্সপ্রেস ট্রেনের দায়িত্ব পান দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে। এঁদের বেতন কাঠামো শুরু হয় ৪২০০ টাকা থেকে। লক্ষাধিক টাকা পর্যন্ত বেতন পান। কিন্তু রেলে চতুর্থ শ্রেণির (Group D) কর্মীরা পদোন্নতির ফলে সহকারী গার্ডের দায়িত্বে আসেন। তাঁদের বেতন কাঠামো ১৯০০ টাকা থেকে শুরু। ফলে এই দুই পদকে এক ক্যাটাগরিতে আনা কেন? এই প্রশ্ন তুলছেন আধিকারিকদের কেউ কেউ। এছাড়া গার্ডদের সঙ্গে থাকা ব্যাগে আপৎকালীন পরিস্থিতির জন্য যেসব সরঞ্জাম থাকে, সেসব ব্যবহার করে রেললাইনে কাপল লাগানো কিংবা অন্যান্য যান্ত্রিক কাজ করে থাকেন ‘ব্রেকসম্যান’রা। তাঁদের প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়ে থাকেন গার্ডরা। কিন্তু রেলের নয়া বিজ্ঞপ্তিতে ‘ব্রেকসম্যান’ পদ তুলে দেওয়া হচ্ছে। তাই এখন থেকে গার্ডদের লাইনে নেমে কাজ করতে হবে, এমনটাই ইঙ্গিত। এও অনেকের না-পসন্দ।
[আরও পডুন: COVID-19 Restriction: কড়া বিধিনিষেধের মেয়াদ বাড়ল রাজ্যে, শর্তসাপেক্ষে ছাড় মেলা ও বিয়ের অনুষ্ঠানে]
অল ইন্ডিয়া রেলওয়ে মেনস ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক অমিত ঘোষের কথায়, ”আমাদের দাবি মেনে গার্ড পদের নতুন নামকরণ হয়েছে, তাতে আমরা খুশি। কিন্তু মনে হয়, এই নাম অলংকারমাত্র। তাঁদের যদি রেললাইনে নেমে কর্মীদের মতো কাজ করতে হয়, তাহলে তা মর্যাদাহানি বলেই মনে করি।” সবমলিয়ে, ‘ট্রেন ম্যানেজার’-এর গালভরা তকমাতেও পুরোপুরি সন্তুষ্ট হতে পারলেন না বিদায়ী গার্ডরা।