shono
Advertisement

অন্য মেয়ের সঙ্গে হবু জামাই, জানতে পেরেই খুন বিহারের তরুণীকে! কাঠগড়ায় হবু শ্বশুর

ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
Posted: 08:23 PM Nov 22, 2022Updated: 08:23 PM Nov 22, 2022

অর্ণব আইচ: অন‌্য মেয়ে নিয়ে এসেছিস কেন? আমার মেয়ের বদলে অন‌্য মেয়ে বিয়ে করবি? দু’টোকেই মেরে ফেলব। হাতে ধারালো অস্ত্র নিয়ে ‘হবু শ্বশুর’-এর রুদ্রমূর্তি দেখে একটু ঘাবড়েই গিয়েছিলেন তরুণ। ‘হবু জামাই’য়ের বুঝতে অসুবিধা হয় না যে, কোনও অঘটন ঘটতে চলেছে। কোনওমতে লাফ দিয়ে পালিয়ে তিনি নিজেকে বাঁচান। কিন্তু বাঁচতে পারেননি চিকিৎসা করতে বিহার থেকে আসা তরুণী অঞ্জলি কুমারী। স্রেফ সন্দেহের বশেই ওই তরুণীকে কুপিয়ে খুন করে কন‌্যাদায়গ্রস্ত মেয়ের বাবা।

Advertisement

পুলিশের দাবি, ‘দাদার মৃত্যুর পর বউদিকে বিয়ে করবে দেওর’, বিভিন্ন রাজ্যের বহু পুরনো এই প্রথার জেরেই প্রাণ গিয়েছে তরুণীর। পূর্ব কলকাতার শিয়ালদহ অঞ্চলে ঘটেছে এই ঘটনা। ঘটনার পর থেকে মূল দুই অভিযুক্ত প্রেম রাই, মুন্না রাই ও তাদের কয়েকজন সঙ্গী পলাতক। ঘটনাটির পর থেকে কুড়ি বছর বয়সের ‘হবু জামাই’ চিত্তরঞ্জন কুমার নামে ওই তরুণও আতঙ্কগ্রস্ত। অভিযুক্তদের সন্ধানে বিহারে রওনা দিয়েছে পুলিশের টিম।

[আরও পড়ুন: ফের এড়ালেন সাক্ষাৎ, বিধানসভায় সুকান্ত যাওয়ার আগেই বেরিয়ে গেলেন শুভেন্দু]

পুলিশ জানিয়েছে, বছর দেড়েক আগে চিত্তরঞ্জন কুমারের দাদার সঙ্গে বিয়ে হয় এক যুবতীর। স্ত্রীকে নিয়ে কলকাতায় এসে থাকতে শুরু করেন দাদা। কিন্তু মাস দেড়েক আগে বিহারের মতিহারির বাসিন্দা ওই যুবকের মৃত্যু হয়। ওই পরিবারের প্রথা অনুযায়ী, ভাই চিত্তরঞ্জনকে বলা হয় বয়সে সামান‌্য বড় বউদিকে বিয়ে করতে। বাধ‌্য হয় চিত্তরঞ্জন রাজি হন। সেইমতো ২৫ নভেম্বর বিয়ের তারিখ ধার্য করা হয়। শিয়ালদহের কোলে মার্কেটে বস্তা সেলাইয়ের কাজ করেন চিত্তরঞ্জন। তাঁর দাদার এক দূর সম্পর্কের শ‌্যালিকা অঞ্জলি কুমারীর (১৮) বাড়ি বিহারের মধুবন এলাকার ভাঙ্গারুয়া গ্রামে। অঞ্জলি বেশ কিছুদিন ধরেই অসুস্থ। সেখানকার চিকিৎসকরা তাঁকে কলকাতার হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসার পরামর্শ দেন। তাই অঞ্জলির বাবা সন্তোষ রাই আত্মীয় চিত্তরঞ্জনকে অনুরোধ করেন তাঁর মেয়েকে কলকাতায় নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করানোর জন‌্য। বিহার থেকে চিত্তরঞ্জন অঞ্জলিকে মিথিলা এক্সপ্রেসে করে নিয়ে এসে ভোর পৌনে পাঁচটা নাগাদ হাওড়ার আসেন। সেখান থেকে শিয়ালদহ স্টেশন তথা এনআরএস হাসপাতালের অদূরে বেলেঘাটা রোডের রেলের সেতুর তলায় আবাসনের বাসিন্দা জয়ন্তী রাইয়ের ঘরে অঞ্জলিকে নিয়ে থাকার ব‌্যবস্থা করেন।

দাদার সম্পর্কের শ‌্যালিকাকে চিত্তরঞ্জন কলকাতায় নিয়ে এসেছেন, এই খবর পেয়ে তেলেবেগুনে জ্বলে ওঠে প্রেম রাই। পেশায় পোস্তা ও কোলে মার্কেটের মুটে প্রেম সম্পর্কে চিত্তরঞ্জনের দাদার শ্বশুর, তথা তাঁর হবু শ্বশুর। তার ধারণা হয়, চিত্তরঞ্জন অঞ্জলিকে বিয়ে করার জন‌্য নিয়ে এসেছেন। সোমবার বেলা গড়াতেই প্রেম তার ছেলে মুন্না ও অন‌্য সঙ্গীদের নিয়ে চড়াও হয় জয়ন্তীর ঘরে। চিত্তরঞ্জন ও অঞ্জলিকে খুনের হুমকি দিতে থাকে। তরুণ ‘হবু শ্বশুর’কে বোঝাতে থাকে যে, শুধু চিকিৎসার জন‌্য নিয়ে আসা হয়েছে অঞ্জলিকে। বিহারে গিয়ে বউদিকেই তিনি বিয়ে করবেন। কিন্তু সেই যুক্তি শুনতে নারাজ প্রেম, মুন্নারা চিত্তরঞ্জনকে মারতে গেলে তিনি পালিয়ে যান। কিন্তু প্রায় সারারাত ট্রেনে জেগে থাকা তরুণীটি ঘুম চোখে বুঝতেও পারেননি কী হতে চলেছে। তার আগেই তাঁর গলায় ধারালো অস্ত্রের কোপ বসিয়ে দেয় প্রেম, মুন্নারা। রক্তাক্ত অবস্থায় এনআরএস হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে তাঁর চিকিৎসা শুরু হয়। ক্রমাগত রক্তপাতের ফলে মৃত্যু হয় তাঁর। ধৃতদের গ্রেপ্তার করা গেলে এই ব‌্যাপারে আরও তথ‌্য মিলবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

[আরও পড়ুন: রাজ্যে লালবাতি-নীলবাতির এত ব্যবহার! বৈধ কি? হাই কোর্টের প্রশ্নের মুখে প্রশাসন]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement