যুগলের ভালবাসা, বিরহ ও অপেক্ষার আবেগঘন গাঁথামালা ‘ময়ূরপঙ্খী’ । লিখছেন সোমনাথ লাহা।
জলের মাঝে অন্তহীনভাবে পালতোলা নৌকার ভেসে চলা। বিরামহীনভাবে সেই চলা অনন্ত পথে। ‘ময়ূরপঙ্খী’-র চিত্ররূপ কল্পনায় এমন কথাই মনে অাসে বারবার। লীনা গঙ্গোপাধ্যায়ের লেখনীতে এবার সেই অনন্ত ভালবাসা ও অনন্ত বিরহের গল্পই অাসছে স্টার জলসার নতুন মেগা ধারাবাহিক ‘ময়ূরপঙ্খী’-তে। ম্যাজিক মোমেন্টস মোশন পিকচার্সের ব্যানারে নির্মিত এই মেগার প্রযোজক ও পরিচালক শৈবাল বন্দ্যোপাধ্যায়। ইতিপূর্বে লীনার কলম থেকে বেরিয়ে এসেছে ‘জলনূপুর’, ‘এই ছেলেটা ভেলভেলেটা’, ‘অন্দরমহল’-র মতো দর্শকমনকে ছুঁয়ে যাওয়া সফল ধারাবাহিক। তবে এবার অনন্ত ভালবাসার গল্প বলেছেন লীনা গঙ্গোপাধ্যায়। শুধুমাত্র প্রেম নয়। এ এক অনন্ত ভালবাসা ও অনিঃশেষ অপেক্ষার কাহিনিও। তারই রেশ ধরে দুটি সদ্য যুবক-যুবতীর ভালবাসা, বিরহ ও অপেক্ষার অাবেগঘন গাঁথামালা।
[আকাশে এবার ‘গান ফাইট’, কবে শুরু রিয়ালিটি শো?]
কাহিনির সূত্রপাত মায়ের বিসর্জনে নদীতে ঠাকুর ভাসান দিতে গিয়ে অালাপ হয় দুটি পরিবারের। দুই বাড়ির দুটি ছেলেমেয়েরও পরিচয় হয় এই সূত্র ধরেই। তিসাম (সোহিনী) ও সৌরদীপ (সৌম্য) প্রথমবার একে অপরকে দেখার মধ্যে তৈরি হয় কিছু মুহূর্ত। ছবি তুলতে ভালবাসা সৌরদীপ সুগায়িকা তিসামের নৌকায় গান শুনে ছবি তুলতে যায়। এমতাবস্থায় একজন ঠাট্টা করে মেয়েটিকে তথা তিসামকে বলে, ‘দেখ তোর ছবি তুলছে’। সে ঘুরে দেখতে গিয়ে জলে পড়ে যায়। তিসামকে বাঁচাতে অাগুপিছু না ভেবে জলে ঝাঁপ দেয় সৌরদীপও। এরপর দু’জনের কাউকেই অার পাওয়া যায় না। তারপর কী হয়? উত্তর রয়েছে ধারাবাহিকটির পর্বজুড়ে।
মেগায় তিসামের চরিত্রে রয়েছেন সোহিনী গুহরায়। ইতিপূর্বে কালার্স বাংলার মেগা ধারাবাহিক ‘রেশম ঝাঁপি’-তে ‘নন্দিনী’-র চরিত্রে দর্শক দেখেছে তাঁকে। অপরদিকে সৌরদীপের ভূমিকায় দেখা যাবে সৌম্য মুখোপাধ্যায়কে। এর অাগে জি-বাংলা অরিজিন্যালস সহ বেশ কিছু বিজ্ঞাপনী ছবি, ওনিরের ‘কুছ ভিগে অলফাজ’ এবং হইচই-এর ওয়েব সিরিজ ‘হোলি ফাঁক’-এ সৌম্যর অভিনয় দেখে ফেলেছেন দর্শকরা।
মেগার কাহিনি, চিত্রনাট্য ও সংলাপ লিখেছেন লীনা গঙ্গোপাধ্যায়। অন্যান্য চরিত্রে রয়েছেন সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়, সন্তু মুখোপাধ্যায় ও অন্যান্য শিল্পী, সংগীত পরিচালনা দেবজ্যোতি মিশ্র।
[বিয়ের পিঁড়িতে বসছেন অভিনেত্রী মোনালিসা, পাত্র কে জানেন?]
শুটিং হয়েছে টাকির ইছামতী নদী সহ গড় জঙ্গল, ডাবু ও বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে। সম্প্রতি সাংবাদিক সম্মেলনে লীনা ও শৈবাল দু’জনেই জানালেন শুটিংয়ের বিভিন্ন অভিজ্ঞতার কাহিনি। উপস্থিত ছিলেন মেগার দুই অভিনেতা-অভিনেত্রী সৌম্য ও সোহিনীও।
বিসর্জনের অাবহকে সঠিকভাবে তুলে ধরার জন্য এ বছর দুর্গাপুজোর শেষদিন দশমীতে শুটিং করা হয়েছে টাকিতে। লীনা গঙ্গোপাধ্যায়ের কথায় “ময়ূরপঙ্খী’ অাসলে শুধু প্রেমের নয়, এটা একটা অনন্ত ভালবাসার গল্প। ভালবাসা ও প্রেমের মাঝে পার্থক্য রয়েছে। প্রেম অনেক বেশি পরিণত। তবে ভালবাসার মধ্যে এখনও একটা ছেলেমানুষি, অাবেগ, বিরহ-সহ অনেক কিছুই খুব বেশিমাত্রায় রয়েছে। তাই প্যাশনও বেশি হয়। এটা অামার খুব পছন্দের একটা গল্প। তাই এটা লিখতে বিষয়টা নিয়ে ভাবতেও বেশ ভাল লাগছে।” দর্শকরা এটা দেখতে দেখতে যৌবনে নিজেদের কলেজ জীবনে ফিরে যাবেন বলেই মনে করেন লীনা গঙ্গোপাধ্যায়।
[এই জনপ্রিয় বাংলা ধারাবাহিকে এবার দেখা যাবে ঋ-কে]
পরিচালক শৈবাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে, “এই ধারাবাহিকের গোটা একটা পর্বের শুটিং হয়েছে নৌকার উপরে। দুটি ছেলেমেয়ের জলে পড়ে যাওয়ার শুটিং সুরক্ষিতভাবে করার পাশাপাশি দৃশ্যটিকে ভিস্যুয়ালি দর্শকদের সামনে ইন্টারেস্টিং ভাবে তুলে ধরাটা বেশ চ্যালেঞ্জিং ছিল অামার কাছে।” সোহিনীর কথায়, “অামি এমনিতেই জলে অত্যন্ত ভয় পাই। তার উপর উলটোদিক করে জলে পড়া। প্রথম থেকেই একটা প্যানিক থাকলেও শৈবালদা ও পুরো টিম সুরক্ষিতভাবে বিষয়টা করে যেভাবে অামায় সাপোর্ট করেছে সেটার জন্যই দৃশ্যটা করতে পেরেছি। অার এই ভালবাসার গল্পে ভালবাসার জন্য অপেক্ষা করাটা অাজকের দিনে কেউ করে না। গল্পের এই বিষয়টা অামার খুব অাকর্ষিত করেছে।” সৌম্যর অভিমত, “লীনা ম্যামের লেখা এত সুন্দর গল্প ও চিত্রনাট্যে অভিনয় করতে পারাটা অামার কাছে বিরাট বড় প্রাপ্তি। কোনও ম্যাজিকের থেকে কম নয়। অামার বাড়ির সকলেই ওঁর লেখার গুণমুগ্ধ।”
‘ময়ূরপঙ্খী’ শুরু হয়েছে স্টার জলসায় সোম থেকে রবি প্রতিদিন বিকেল ৫:৩০ টায়।
The post ভালবাসা, বিরহ ও অপেক্ষার আবেগঘন গাঁথামালা ‘ময়ূরপঙ্খী’ appeared first on Sangbad Pratidin.