কৃষ্ণকুমার দাস: আর মাত্র ন’মাস পরেই খুলে যাবে নির্মীয়মাণ চার লেনের নতুন টালা ব্রিজ (Tala Bridge)। দক্ষিণের মাঝের হাটের (Majerhat Bridge) মতোই উত্তরের টালায় ৩৬৫ কোটি টাকা ব্যয়ে এই সেতুও তৈরি হচ্ছে কেবল স্টেড রেলওভার ব্রিজ হিসেবে। ইতিমধ্যে ব্রিজের নির্মাণ প্রায় অর্ধেক সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে। রেলের উপরের অংশের কাজ ছাড়া দু’দিকের অবশিষ্ট অংশের র্যাম্প নির্মাণ শেষ করেছেন ভারপ্রাপ্ত বিশেষজ্ঞ ইঞ্জিনিয়াররা।
পুরেনো টালা ব্রিজে লাইনের মাঝে পিলার ছিল। কিন্তু এবার লাইনের উপরে ২৪০ মিটার অংশের পুরোটাই কেবলের উপরে ঝুলবে। শনিবার ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে সেতু নির্মাণের অগ্রগতি পরিদর্শনে গিয়েছিলেন পুরসভার বিদায়ী ডেপুটি মেয়র ও স্থানীয় বিধায়ক অতীন ঘোষ। পরে তিনি পূর্ত দফতর ও দায়িত্বপ্রাপ্ত ‘লারসেন অ্যান্ড টুব্রো’র শীর্ষ ইঞ্জিনিয়ারের সঙ্গে নির্মাণের পরবর্তী ধাপ নিয়ে বৈঠক করেন। এরপর অতীন জানান, “ট্রেন লাইনের উপরের অংশের নির্মাণের জন্য রেল থেকে অনুমতি পেলেই এবার সেতুর ঝুলন্ত অংশের কাজ শুরু হবে। ইঞ্জিনিয়াররা আশ্বাস দিয়েছেন, নয়া টালা ব্রিজের নির্মাণ ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যে সম্পূর্ণ করা যাবে। তা হলে ওই মাসেই মুখ্যমন্ত্রী তা উদ্বোধন করবেন।”
[আরও পড়ুন: কুণাল ঘোষের বাড়িতে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, আরও বাড়ছে ‘ঘর ওয়াপসি’র জল্পনা]
উল্লেখ্য, মাঝেরহাট সেতু ভেঙে পড়ার পর রাইটসের সুপারিশে ১৯৬৩ সালে চালু হওয়া তিন লেনের টালা ব্রিজ নতুন করে নির্মাণের কাজ শুরু হয়। গত ২০২০ সালের ৩১ জানুয়ারি রাত থেকে পুরোনো ব্রিজ ভাঙা শুরু হয়। আর ৬১০ মিটার দীর্ঘ টালা সেতুর নয়া নকশা গত বছর ২২ ডিসেম্বর রেল অনুমোদন করে, নির্মাণ শুরু হয় জানুয়ারিতে।
টালা সেতু পরিদর্শনে গিয়ে বিশেষজ্ঞরা জানতে পারেন, পলতা থেকে টালা জলট্যাঙ্কের জন্য তিনটি বড় পাইপ লাইন আসা নিয়ে জটিলতা রয়েছে। এখনও ওই জলের লাইনের জন্য রেললাইনের উপর দিয়ে পৃথক সরু সেতু নির্মাণের সবুজ সংকেত পাওয়া যায়নি। যদিও ওই জলের লাইনের বিকল্প রুটের ফাইনাল নকশা তৈরি হয়ে গিয়েছে। সেই অনুমতি পেলে কেবল স্টেড ব্রিজের ঝুলন্ত অংশের নির্মাণের পাশাপাশি জলের মোটা পাইপের কাজও শুরু হবে বলে অতীন জানান।
সূত্রের খবর, এবছর ডিসেম্বরের মধ্যে টালা ব্রিজের ঝুলন্ত অংশের নির্মাণ সম্পূর্ণ করে ভার বহন ক্ষমতার পরীক্ষা করবেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ, যেহেতু ওই ব্রিজের নিচ দিয়ে কলকাতা স্টেশনের ট্রেন যাতায়াত করবে তাই রেলের সেফটি কমিশনার থেকে শুরু করে অনেকগুলি ধাপেই দ্রুত অনুমতি জরুরি। সেই অনুমতি পেতে পেতে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাস হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত ইঞ্জিনিয়াররা। পুরনো সেতুর ভারবহনের ক্ষমতা ছিল মাত্র ১৫০ টন। কিন্তু এবার নয়া কেবল স্টেড ব্রিজটি ৩৮৫ টন ভার বহন করতে পারবে বলে পূর্ত দপ্তর জানিয়েছে।