সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গত দু’সপ্তাহ ধরে উত্তপ্ত কাশ্মীর (Kashmir)। রক্ত ঝরছে আমজনতার। শহিদ হচ্ছেন সেনা জওয়ানরা। প্রাথমিকভাবে গোয়েন্দাদের ধারণা ছিল, পাক সীমান্ত পেরিয়ে জইশ-ই মহম্মদ কিংবা লস্কর-ই-তইবার জঙ্গিরা (Terrorist) হামলা চালাচ্ছে ভূস্বর্গে। কিন্তু একটু খোঁজখবর করতেই ভারতীয় গোয়েন্দাদের চক্ষুচড়কগাছ। জইশ, লস্করদের পাশাপাশি সীমান্তে ওঁত পেতেছে ‘হরকত-৩১৩’ জঙ্গি গোষ্ঠী। তারাই বিদেশি জঙ্গি ঢোকাচ্ছে এদেশে। কাশ্মীরে অনুপ্রবেশের ইতিহাসে একেবারে আনকোরা নাম এই ‘হরকত-৩১৩’ (Harkat 313)।
কী এই ‘হরকত ৩১৩’?
১৯৯৯ সালে ইলিয়াস কস্তুরির হাত ধরে জন্ম নিয়েছিল এই ‘এলিট’ ব্রিগেড। সেই সময় পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরেই সক্রিয় ছিল এই গোষ্ঠী। কাজ করত মূলত আল কায়দার হয়ে। বর্তমানে পাক সেনা, আইএসআই এবং তালিবানের হাক্কানি নেটওয়ার্কের (Haqqani Network) মদতেই খোলনলচে বদলাচ্ছে এই ‘৩১৩ ব্রিগেড’। শীতের আগেই কাশ্মীরে জেহাদি ঢোকাচ্ছে এই গোষ্ঠী।
[আরও পড়ুন: কাশ্মীরে ফের জঙ্গি নিশানায় আমজনতা, নিহত ফুচকা বিক্রেতা, উদ্ধার নিখোঁজ ২ জওয়ানের দেহ]
প্রসঙ্গত, ইসলাম ধর্মের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে এই ৩১৩ সংখ্যাটি। আলবদরের যুদ্ধে মহম্মদের সঙ্গী ছিলেন ৩১৩ জন। সেই সূত্র ধরেই জঙ্গি গোষ্ঠীর অভিজাত বা অত্যাধুনিক সংগঠনকে এই সংখ্যা দিয়ে চিহ্নিত করা হয়। বর্তমানে তালিবানের সবচেয়ে এলিট শাখা ‘বদরি ৩১৩’। যারা কাবুল শহর এবং বিমানবন্দরের নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে। এই ব্রিগেডের ধাঁচেই পুনর্জন্ম হচ্ছে ‘হরকত ৩১৩’-এর।
কারা রয়েছে এই ব্রিগেডে?
তালিবানের (Taliban) অন্দরে হাক্কানি নেটওয়ার্কের বাড়বাড়ন্তেই সিঁদুরে মেঘ দেখেছিলেন ভারতীয় গোয়েন্দারা। চিন্তা বেড়েছিল সীমান্তের নিরাপত্তা নিয়ে। এই হাক্কানি নেটওয়ার্কে মধ্য এশিয়ার বিভিন্ন দেশের জেহাদিরা রয়েছে। রয়েছে চেচেনরাও। যারা অত্যাধুনিক অস্ত্র চালনা, যুদ্ধকৌশল রপ্ত করেছে। স্বভাবে ডাকাবুকো, লড়াকু। ধর্মের জন্য প্রাণ দিতেও পিছপা হয় না। এই গ্লোবাল জেহাদিদের নিয়েই তৈরি হয়েছে ‘হরকত ৩১৩’। যাদের মূল লক্ষ্য কাশ্মীরের শান্তিভঙ্গ। দেশের অন্দরে নাশকতার বীজ বপনের চেষ্টা করছে তারা।
[আরও পড়ুন: Singhu Lynching: ধর্মগ্রন্থের অবমাননা করাতেই হাত-পা কেটে খুন, লখবীর হত্যা মামলায় ধৃত বেড়ে ৪]
শীতের শুরু থেকেই প্রবল তুষারপাতের জেরে কাশ্মীরে জঙ্গি অনুপ্রবেশ কার্যত বন্ধ হয়ে যায়। তাই প্রতি বছরই শীতের আগে ভূস্বর্গে লাগাতার অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালায় জেহাদিরা। এবারও ব্যতিক্রম হয়নি। তবে জইশ, লস্কর, হিজবুলের পাশাপাশি সীমান্ত টপকে কাশ্মীরে ঢুকছে ‘হরকত ৩১৩’ জঙ্গিরা। যারা মূলত ভিড়ে মিশে সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করতে চাইছে। হামলা চালাতে চাইছে সেনাবাহিনীর উপর। তাই এবার ‘হরকত ৩১৩’ নিয়ে বাড়তি সতর্ক নিরাপত্তা বাহিনী।