অর্ণব আইচ: গৃহবধূ অর্চনা পালংদার খুনে আরও ঘনীভূত হচ্ছে রহস্য। এবার তদন্তকারীদের রাডারে অ্যাপ ক্যাব চালক।অভিযুক্তের সঙ্গে যোগসাজশ থাকতে পারে চালকের, এমনটাই মনে করছে তদন্তকারীরা। এই হত্যাকাণ্ডে আশিস যাদব নাম একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।তদন্তকারীদের দাবি, জেরায় সে জানিয়েছে, অর্চনা ও তাঁর প্রেমিকের দেহ অ্যাপ ক্যাবে করেই লোপাটের চেষ্টা করা হয়।
তদন্তকারীদের অনুমান, এই নারকীয় ঘটনার কথা জানত ওই ট্যাক্সিচালক। দেহ লোপাট করতে সেও মদত দিয়েছে। তা না হলে স্বভাবিকভাবেই বস্তাবন্দি সন্দেহজনক বস্তু গাড়িতে তোলা হলে প্রশ্ন করত চালক। তাই এবার হন্যে হয়ে ওই চালকের সন্ধান চালাচ্ছে পুলিশ।তাকে জেরা করলে অনেকটাই খোলসা হবে রহস্য, বলে মনে করা হচ্ছে। এদিকে ঘটনায় জয়দেব তার বাবা হরিহর ও সনাতন নামের হোটেলকর্মীর সন্ধান করছে পুলিশ। ঘটনার পর প্রত্যেকেই গা ঢাকা দিয়েছে।
[মোবাইল ও ব্যাংকে ফের বাধ্যতামূলক হতে পারে আধার কার্ড]
উল্লেখ্য, সেপ্টেম্বর মাসে আনন্দপুর পশ্চিম চৌবাগা এলাকার খাল থেকে গৃহবধূ অর্চনা পালংদারের বস্তাবন্দি দেহ মেলে। প্রথমে পরিচয় জানা না গেলেও তদন্তে নেমে মৃতার বাড়ির খোঁজ পায় পুলিশ। তদন্তকারীরা জানিয়েছিলেন, একদিন আগেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন অর্চনা। আগেও তিনি বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, স্ত্রীর বিরুদ্ধে একাধিক বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের অভিযোগ এনে এফআইআরও করেছিলেন অর্চনা পালংদারের স্বামী। সেই সূত্র ধরেই তদন্তে নামে পুলিশ। মোবাইল ফোন ও বিভিন্ন সূত্র ঘেঁটে জানা যায়, ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা বলরাম নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে সম্পর্ক ছিল অর্চনার। প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, বলরামই এই খুনের সঙ্গে যুক্ত। বলরামের সন্ধানে ঝাড়খণ্ডেও গিয়েছিলেন তদন্তকারীরা। এদিকে গতকালই উদ্ধার করা হয় বলরামের দেহ।
এদিকে পড়শি রাজ্যে আশিস যাদব নামে এক ব্যক্তির সন্ধান মেলে। জানা যায় ফুলের ব্যবসা করে আশিস। কলকাতার নিউ মার্কেট এলাকায় একটি হোটেলেও অস্থায়ী কর্মী হিসেবে কাজ করে সে। আশিস যাদবের সঙ্গে আবার বলরাম যোগাযোগ রয়েছে। তাকে জেরা করে তদন্তকারীরা জানতে পারেন, সে যে হোটেলে কাজ করে, ১৯ সেপ্টেম্বর অর্চনাকে নিয়ে সেই হোটেলেই উঠেছিল বলরাম। হোটেলেই অর্চনাকে খুন করে আত্মঘাতী হয় সে।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, পুলিশি ঝামেলা এড়াতে আরও দুই হোটেল কর্মীর সঙ্গে আশিস অর্চনার দেহ বাসন্তী হাইওয়ের পাশে আনন্দপুর চৌবাগা খালে ফেলে আসে। বলরামের দেহ লোপাটের দায়িত্ব ছিল অন্য এক হোটেলকর্মীর। যদিও ঘটনার পর থেকে ওই দুই হোটেল কর্মীরও কোনও সন্ধান নেই। এখন প্রশ্ন, অর্চনাকে খুন করে বলরাম যদি আত্মঘাতী হয়ে থাকে তাহলে পুলিশে খবর না দিয়ে তাঁর দেহ লোপাট করতে গেল হোটেলের কর্মীরা?
[ট্রাম্পকে বিষ-চিঠি পাঠিয়ে খুনের ষড়যন্ত্র, গ্রেপ্তার প্রাক্তন সেনাকর্মী]