সুকুমার সরকার, ঢাকা: বাংলাদেশের অভিনেত্রী হোমায়রা হিমুর (Humaira Himu) অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় ফাঁস হল চাঞ্চল্যকর তথ্য। ঘটনায় অভিযুক্ত সন্দেহে ইতিমধ্যেই হিমুর প্রেমিক মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন ওরফে রুফিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এবার শোনা যাচ্ছে, বাংলাদেশের র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিনায় ওরফে র্যাবকে রুফি জানিয়েছে, হিমু যখন আত্মহত্যা করেন তখন তাঁর সামনেই বিছানায় বসেছিল সে এবং গোটা বিষয়টা নিজের চোখে দেখেছে।
বাংলাদেশের বিনোদন জগতে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে হিমুর কেরিয়ার শুরু হয়। তার পর নোয়াখালির আঞ্চলিক ভাষার টেলিভিশন নাটকে অভিনয় করে জনপ্রিয়তা পান অভিনেত্রী। ২০১১ সালে মুক্তি পাওয়া ‘আমার বন্ধু রাশেদ’ দিয়ে চলচ্চিত্রে অভিষেক হয় হিমুর। গত বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) বিকেলে হোমায়রা হিমুকে উত্তরায় বাংলাদেশ মেডিক্যাল হাসপাতালে নিয়ে যায় তার প্রেমিক রুফি ও পাতানো ভাই মিশির। হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা অভিনেত্রীকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। হিমুর মৃত্যুর খবর শুনে নাকি তার মোবাইল ফোন নিয়ে পালিয়ে যায় রুফি। এর পরই তার গ্রেপ্তারির খবর পাওয়া যায়।
[আরও পড়ুন: শুভমানের গলা জড়িয়ে সারা! শচীনের ‘হবু জামাই’? ভাইরাল ছবির সত্যিটা জানুন]
রুফিকে জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে র্যাবের লিগ্যাল ও মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, হিমুর আত্মহত্যা কাণ্ডে মাসতুতো দিদির প্রাক্তন স্বামীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়ানো এবং অনলাইন জুয়ায় আসক্ত হওয়ার বিষয়টি উঠে এসেছে। হিমুর মাসতুতো দিদির সঙ্গে রুফির বিয়ে হয়েছিল ২০১৪ সালে। সেই সময় হিমু ও রুফির পরিচয় হয়। পারিবারিক সমস্যার কারণে কিছুদিন পর রুফির সঙ্গে হিমুর মাসতুতো দিদির বিচ্ছেদ হয়ে যায়। কিন্তু হিমু ও রুফির মধ্যে ঘনিষ্ঠতা আরও বাড়ে। টেক্সটাইল কেমিক্যালের ব্যবসা করতেন রুফি। বিভিন্ন মহলে তাকে উরফি জিয়া হিসেবেও ডাকা হয়।
রুফি পরবর্তীতে অন্যত্র বিয়ে করলেও হিমুর সঙ্গে তার সম্পর্কে ছেদ পড়েনি। জেরার মুখে র্যাবকে রুফি জানিয়েছে, অভিনেত্রীকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে নিয়মিত তাঁর বাসায় রাত কাটাত। তবে এর মধ্যেও নানা বিষয় নিয়ে ঝগড়া হতো তাদের মধ্যে। বিশেষ করে অনলাইন জুয়া সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে। এর আগেও নাকি একাধিকবার হিমু অত্মহত্যার হুমকি দিচ্ছে। বৃহস্পতিবার যখন অভিনেত্রী গলায় ফাঁস লাগাচ্ছিলেন সামনেই বিছানায় বসে সমস্ত কিছু দেখছিল রুফি। সেই হিমুকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু চিকিৎসকরা যখন অভিনেত্রীকে মৃত বলে ঘোষণা করে তাঁর আইফোন দুটি নিয়ে পালিয়ে যায় রুফি। মোবাইল ফোন দুটি বিক্রির উদ্দেশে ঢাকার বংশালে গিয়েছিল সে। সেখানেই র্যাবের হাতে ধরা পড়ে যায়।