সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হাসিনা পরবর্তী বাংলাদেশে উত্তেজনা, উদ্বেগ, হিংসার অন্ত নেই। কেবল তার কারণ বদলে বদলে যাচ্ছে। সোমবারও ছিল একটি ঘটনাবহুল দিন। একদিকে যখন গ্রেপ্তার হয়েছেন নিপীড়িত হিন্দুদের মুখ ইসকনের চিন্ময় প্রভু, সেই দিনই পদ্মাপাড়ের জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যম প্রথম আলোর অফিসে কট্টরপন্থীরা ভাঙচুর চালিয়েছে বলে খবর। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠার সংবাদমাধ্যমটির ঢাকার অফিসে সেনা মোতায়েন করা হয়। এদিকে এই ঘটনার নিন্দা করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম।
বাংলাদেশে মুক্তমনা এবং প্রগতিশীল সংবাদমাধ্যম হিসাবেই পরিচিত প্রথম আলো। যদিও নতুন বাংলাদেশের ক্ষমতাবান একটি গোষ্ঠীর প্রথম আলো খবর পরিবেশন পছন্দ হচ্ছিল না। তাদের দাবি, প্রথম আলো বন্ধ করে দিতে হবে। এর পর সোমবার রাজশাহিতে তাদের অফিসে ভাঙচুর হয়। চট্টগ্রাম ও বাহ্মণবাড়িয়া-সহ বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ দেখায় ইসলামী কট্টোরপন্থীরা। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠায় ঢাকায় প্রথম আলোর সদর দপ্তরে সেনা মোতায়েন করা হয়েছে।
গণমাধ্যম আক্রমণের মুখে পড়ায় অখুশি ইউনুস সরকারের তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, "প্রথম আলো নিয়ে একটি উত্তেজনা দেখতে পাচ্ছি কয়েক দিন ধরে। গতকালও এরকম উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল অফিসের সামনে। আজকে রাজশাহিতে তাদের অফিসে ভাঙচুর হয়েছে এবং চট্টগ্রাম ও বাহ্মণবাড়িয়া-সহ বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ হয়েছে। আমাদের বক্তব্যটি হচ্ছে, কোনও গণমাধ্যম বা পত্রিকার বিরুদ্ধে যদি জনগণের কোনও অংশের অভিযোগ থাকে, ক্ষোভ থাকে, তারা সেটি প্রকাশ করতেই পারেন, তবে সেটি অবশ্যই শান্তিপূর্ণভাবে হতে হবে।" আরও বলেন, "কোনও পত্রিকা অফিসে ভাঙচুর করা, পত্রিকা বন্ধের জন্য চাপ দেওয়া আমরা সমর্থন করি না। এই ধরনের ঘটনা পরে ঘটলে টলারেট (সহ্য) করা হবে না।"
প্রসঙ্গত, সোমবার নিপীড়িত হিন্দুদের মুখ চিন্ময় প্রভুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ঢাকা বিমানবন্দর থেকে। তিনি ইসকন পুণ্ডরিক ধামের সভাপতি। সম্প্রতি বাংলাদেশে মুসলিম কট্টরপন্থীরা চরম হুঁশিয়ারি দিয়েছিল। দাবি করেছিল নিষিদ্ধ করা হোক ইসকনকে। না হলে ধরে ধরে হত্যা করা হবে ইসকন ভক্তদের! সোশাল মিডিয়ায় এই হুমকির কথা জানিয়ে ভারত ও আমেরিকার হস্তক্ষেপ চেয়েছিলেন ইসকনের এক সদস্য। তারও আগে গত ৫ নভেম্বর ইসকনকে নিষিদ্ধ করার দাবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করেন চট্টগ্রামের এক মুসলিম ব্যবসায়ী। ইসকনকে ‘জঙ্গি সংগঠন’-এর তকমা দেন তিনি। যার পরই স্থানীয় হিন্দুদের বিক্ষোভে কার্যত রণক্ষেত্রের রূপ নেয় চট্টগ্রাম। বাড়িতে ঢুকে হিন্দুদের মারধর ও গ্রেপ্তারের অভিযোগ ওঠে বাংলাদেশ সেনা ও পুলিশের বিরুদ্ধে। এর পর ওঠে ইসকনকে নিষিদ্ধ করার দাবি।