সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়: হাওড়ার নামী স্কুলে ‘হামিকাণ্ড’-এ নয়া মোড়! শিবপুর বিই কলেজ মডেল স্কুলে ক্লাস চলাকালীন ‘হামিকাণ্ড’-এর সত্যতা যাচাই করতে এবার নিজে থেকেই তদন্ত শুরু করল রাজ্য মানবাধিকার কমিশন। সোমবার তদন্তের প্রথম ধাপ হিসাবে ঘটনার সত্যতা যাচাই করতে স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে রিপোর্ট চেয়ে পাঠালেন রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তথা রাজ্য পুলিশের প্রাক্তন ডিজি নাপরাজিত মুখোপাধ্যায়। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে এই রিপোর্ট কমিশনে জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দুই-একদিনের মধ্যেই এবিষয়ে কমিশনের চিঠি পৌঁছে যাবে স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে। এরপর তদন্ত রিপোর্ট রাজ্য সরকার ও স্কুল শিক্ষা দপ্তরে জমা দিয়ে এবিষয়ে কি করণীয় তা সুপারিশ করবে কমিশন। উল্লেখ্য, কয়েকদিন ধরেই শিবপুর বিই কলেজ মডেল স্কুলে ক্লাস চলাকালীন ছয় পড়ুয়ার ‘হামিকাণ্ড’ নিয়ে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে রাজনৈতিক ও শিক্ষামহলে।
‘গণচুম্বন’ কাণ্ডে এবার স্কুলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অভিযুক্ত পড়ুয়াদের অভিভাবকরা
ঘটনার সূত্রপাত, গত অক্টোবর মাসে। সেই সময় স্কুলে নবম শ্রেণির ফাইনাল পরীক্ষার আগে ক্লাস চলাকালীন ওই শ্রেণির ছয় পড়ুয়া ‘হামিকাণ্ড’ জড়িয়ে পড়েছিল বলে স্কুল কর্তৃপক্ষের অভিযোগ। কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, ঘটনাটি ধরা পড়ে ক্লাসের সিসিটিভির ফুটেজে। সেই ফুটেজ দেখে জরুরি বৈঠকে বসে পরিচালন কমিটি। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, পড়ুয়াদের ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে তাদের নবম শ্রেণির ফাইনাল পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হবে। পরীক্ষায় পড়ুয়ারা ভালভাবেই পাশ করে দশম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয়। এরপর আর তাদের দশম শ্রেণিতে ভরতি নেওয়া হয়নি। কার্যত তাদের বহিষ্কার করে দেওয়া হয়। দিয়ে দেওয়া হয় ট্রান্সফার সার্টিফিকেট বা টিসি। এই ঘটনায় তৈরি হয় তুমুল বিতর্ক। অভিভাবকদের অনুরোধ ছিল, দশম শ্রেণির পড়ুয়ারা কোনও দাগি আসামি নয়। ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে তাদের প্রতি একটু নরম মনোভাব নিক স্কুল কর্তৃপক্ষ। কাউন্সেলিং করে বা অভিভাবকদের লিখিত মুচলেকা নিয়ে পড়ুয়াদের শেষবারের মতো আরও একবার সুযোগ দেওয়া হোক। এটি একটি অমানবিক সিদ্ধান্ত। কিন্তু অভিভাবকদের সেই আবেদন কোনও রকমভাবেই মেনে নেয়নি স্কুল কর্তৃপক্ষ। এই অবস্থায় ঘটনাটির সত্যতা যাচাই করে সঠিক কী সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত, সেই বিষয়ে তদন্ত শুরু করল রাজ্যের মানবাধিকার কমিশন।
‘গণচুম্বন’ কাণ্ডে পড়ুয়াদের বহিষ্কারে বিতর্ক, পরিস্থিতি খতিয়ে দেখবেন শিক্ষামন্ত্রী
কমিশনের প্রশ্ন, ঘটনাটি যদি সত্যিই হয় তবে, পড়ুয়াদের প্রথমে কাউন্সেলিং করানো হল না কেন? স্কুলে যদি কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা না থাকে তবে বাইরের কোনও কাউন্সেলারকে দিয়ে কাউন্সেলিং করানো হয়নি কেন? রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তথা রাজ্য পুলিশের প্রাক্তন ডিজি নপরাজিত মুখোপাধ্যায় জানান, “আমরা স্কুলের কাছ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে এবিষয়ে রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছি। প্রয়োজন মতো এরপর আমরা সিসিটিভির ফুটেজ চেয়ে পাঠাব। সেই ফুটেজ দেখে পড়ুয়াদের দোষ কতটা ছিল তা খতিয়ে দেখব আমরা। ঘটনার মধ্যে দেখতে হবে মানবাধিকার কতটা লঙ্ঘন হয়েছে। প্রয়োজন হলে দু’পক্ষকেই কমিশনে ডেকে শুনানি করা হবে। এরপর আমরা রিপোর্ট পাঠাব রাজ্য সরকার ও স্কুল শিক্ষা দপ্তরের কাছে।
The post হাওড়ার স্কুলে ‘গণচুম্বন’ কাণ্ডে রিপোর্ট তলব মানবাধিকার কমিশনের appeared first on Sangbad Pratidin.