সৈকত মাইতি, হলদিয়া: ভোট-পরবর্তী হিংসা মামলায় (Post Poll Violence) জামিন পেলেন নন্দীগ্রামের ৯ জন তৃণমূল (TMC) কর্মী। শুক্রবার হলদিয়া মহকুমা আদালতের অতিরিক্ত দায়রা বিচারক (ফাস্ট ট্র্যাক) এই নির্দেশ দিয়েছেন। এদিন জামিন পান শেখ নজরুল ইসলাম, শেখ কালু, শেখ মুক্তাদের রহমান, আবদুল হাই, শেখ মুস্তাক, শেখ হায়াতুল, শেখ ইমাদুল, শেখ মইদুল এবং শেখ আতাউর রহমান।
২০২১ সালের ৫ মে বিধানসভা ভোট (Assembly Election 2021)-পরবর্তী হিংসায় নন্দীগ্রামের চিল্লগ্রামের বাসিন্দা দেবব্রত মাইতি গুরুতর জখম হন। কলকাতায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৩ মে দেবব্রতর মৃত্যু হয়। সেই ঘটনায় প্রথমে রাজ্য পুলিশ শেখ মিজানুর এবং শেখ ফতেনুর, দু’জনকে গ্রেপ্তার করে। কয়েকমাস পর তাঁরা জামিন পান। পরে মৃতের পরিবারের দাবি অনুযায়ী, হাই কোর্টের (Calcutta HC) নির্দেশে সিবিআই তদন্ত শুরু হয় ২০২১ সালের জুলাই মাসে। হলদিয়া টাউনশিপের হলদিয়া (Haldia)বন্দরের অতিথিশালায় অস্থায়ী অফিস করে লাগাতার তদন্তের কাজে চলে নন্দীগ্রামের বিভিন্ন জায়গায়। তাতে আরও ১৮ জনের নাম উঠে আসে। সকলেই স্থানীয় তৃণমূল নেতা, কর্মী।
[আরও পড়ুন: অভিযোগ নিষ্পত্তি করে ৭দিনে রিপোর্ট, মুখ্যমন্ত্রীকে কাজের খতিয়ান দিতে সব দপ্তরকে কড়া চিঠি]
পূর্ব মেদিনীপুর (East Midnapore)জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি শেখ সুফিয়ান, নন্দীগ্রাম এক নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি আবু তাহের, স্থানীয় কালীচরণপুর গ্রামপঞ্চায়েত প্রধান সৈয়ম কাজি, মহম্মদপুর গ্রামপঞ্চায়েত প্রধান শেখ হাবিবুল, কেন্দেমারি প্রধানের স্বামী শেখ সাহাউদ্দিন, নন্দীগ্রাম গ্রামপঞ্চায়েত প্রধানের স্বামী শেখ বাইতুলের নাম জড়িয়ে যায়। তবে আইনি লড়াইয়ে নেমে সুফিয়ান সুপ্রিম কোর্ট থেকে জামিন পান। সৈয়ম কাজি, শেখ সাহাউদ্দিন, শেখ বাইতুল এবং শেখ হাবিবুল আদালতের নির্দেশে জামিন পেয়েছেন। এই মামলায় এবার একসঙ্গে ৯ জন জামিন পেলেন।
[আরও পড়ুন: ‘কুণাল ঘোষকে প্রণাম, ভবিষ্যদ্বাণী মিলেছে’, ‘সুপ্রিম’ রায়ে বললেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়]
মামলায় সিবিআই (CBI) তদন্ত এড়িয়ে এখনও ফেরার আবু তাহের, খুশনবি এবং আমানুল্লাহ। আসামি পক্ষের আইনজীবী বিমল মাজি এবং মনসুর আলম সিবিআই আইনজীবীর যাবতীয় যুক্তি খণ্ডন করেন। বাদী-বিবাদী পক্ষের যুক্তি-পালটা যুক্তি পর্ব চলে প্রায় দু’ঘণ্টা। সিবিআই আইনজীবী জামিন নাকচের আবেদন জানান। শেষে বিচারক ৯ জনের জামিন মঞ্জুর করেন। তৃণমূল কংগ্রেসের তমলুক সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সৌমেন মহাপাত্র জানান, ‘‘বিচার ব্যবস্থার প্রতি আমাদের আস্থা আছে। হলদিয়া মহকুমা আদালতের নির্দেশে প্রমাণিত হল তৃণমূল কর্মীদের মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল।’’