সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মহাকুম্ভে চরম বিশৃঙ্খলায় পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছিল বহু পুণ্যার্থীর। এই ঘটনায় যোগী সরকারের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত গাফিলতির পাশাপাশি অভিযোগ ওঠে মৃতের তথ্য লুকোনোর। সেই ঘটনাই এবার উঠে এল সংসদ অধিবেশনে। কেন্দ্রকে প্রশ্ন করা হল, মহাকুম্ভে পদপিষ্ট হয়ে ঠিক কতজন মানুষের মৃত্যু হয়েছে? তবে মহাকুম্ভ নিয়ে সাফল্যের ঢাক পেটানো মোদি সরকার জানিয়ে দিল, এই বিষয়ে তাদের কাছে কোনও তথ্য নেই।

মঙ্গলবার সংসদে কেন্দ্রের কাছে লিখিত প্রশ্ন করেন কংগ্রেস সাংসদ কেসি বেনুগোপাল ও কে নামদেও। তাঁরা জানতে চান, মহাকুম্ভে চলাকালীন পদপিষ্ট হয়ে ঠিক জনের প্রাণহানি হয়েছে? আহত হয়েছেন কতজন? এই দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে কেন্দ্র সরকার ঠিক কী কী পদক্ষেপ নিয়েছেন? এর উত্তরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই জানান, 'ধর্মীয় অনুষ্ঠান আয়োজন, ভিড় ব্যবস্থাপনা, ভক্তদের জন্য সুযোগ সুবিধার ব্যবস্থা করা এবং কোনও রকম দুর্যোগ মোকাবিলা পুরোপুরি সংশ্লিষ্ট রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার বিষয়। কোনও রাজ্যে এই ধরনের ঘটনা ঘটলে তাঁর তদন্ত, মৃত ও আহতদের আর্থিক সাহায্য দেওয়ার বিষয়টি রাজ্যসরকারের এক্তিয়ারের মধ্যে পড়ে। এই বিষয়ে কেন্দ্র কোনও রকম তথ্য সংরক্ষণ করে না। ফলে কেন্দ্রের কাছে এমন কোনও তথ্য নেই।'
তবে মৃত্যুর তথ্য নিয়ে মুখে কুলুপ আটলেও কুম্ভের ঢাক পেটাতে কোনও খামতি রাখেননি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। মঙ্গলবার সংসদে বক্তব্য রাখতে উঠে কুম্ভের গালভরা প্রশংসা করে নরেন্দ্র মোদি বলেন, “মহাকুম্ভ থেকে একতার অমৃত পেয়েছি আমরা। দেশের সমস্ত প্রান্ত থেকে আসা মানুষ এক হয়ে গিয়েছেন প্রয়াগরাজের তীর্থক্ষেত্রে। আলাদা আলাদা জায়গা থেকে এসে মানুষ দেশের একজোট হয়েছেন। ‘আমি’ থেকে তাঁরা মিশে গিয়েছেন ‘আমরা’য়। মহাকুম্ভ হয়ে উঠেছিল একতার এক অনন্য নজির। গোটা বিশ্বে যখন আমরা ভাঙন দেখছি, সেখানে বৈচিত্রের মাঝে ঐক্যের উজ্জ্বল ছবি তুলে ধরেছে মহাকুম্ভ। গোটা বিশ্ব মহাকুম্ভের মাধ্যমে ভারতের বিরাট স্বরূপ দর্শন করেছে।”
যদিও মহাকুম্ভে মৃতদের উদ্দেশে শোকপ্রকাশ তো দূরে থাক, নিজের বক্তব্যে সেই বিষয়ে একটি শব্দও খরচ করেননি তিনি। যার জেরে মোদির বিরুদ্ধে সরব হয় বিরোধী শিবির। সংসদে হট্টগোল শুরু করেন বিরোধী সাংসদরা। যার জেরে মুলতুবি হয়ে যায় সংসদ। এই বিষয়ে রাহুল গান্ধী বলছেন, “প্রধানমন্ত্রী যে বলছেন কুম্ভ আমাদের ঐতিহ্য, ইতিহাস এবং সংস্কৃতি। আমরা সেটাকে সমর্থনই করতে চেয়েছিলাম। আমাদের একমাত্র আপত্তির জায়গা হল যারা কুম্ভে গিয়ে প্রাণ হারালেন, পদপিষ্ট হলেন তাঁদের জন্য শোকপ্রকাশটাও করলেন না।” সেই বিতর্কের মাঝেই এবার কেন্দ্র জানাল কুম্ভের দুর্ঘটনায় প্রাণ হারানো পুণ্যার্থীদের বিষয়ে কোনও তথ্য তাদের কাছে নেই।