সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্স হয়ে গিয়েছে। বিচ্ছেদের যন্ত্রণা ভুলতে নতুন করে ভালোবাসার খোঁজ করছিলেন। মনের মানুষ খুঁজতে এক ডেটিং অ্যাপে অ্যাকাউন্ট খুলেছিলেন। খুঁজেও পেয়েছিলেন একজনকে। কিন্তু সেই যুবতীর প্রেমের ফাঁদে পা দিয়ে সারা জীবনের সঞ্চয় খোয়ালেন দিল্লির ওই যুবক! এই অর্থের পরিমাণ প্রায় ৬ কোটি। সমস্ত টাকা ফিরে পেতে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি।

জানা গিয়েছে, প্রতারিত যুবকের নাম দলজিৎ সিং। তিনি নয়ডার বাসিন্দা। দিল্লির এক বেসরকারি ফার্মের ডিরেক্টর দলজিৎ। ডিভোর্সের পর গত বছর একটি ডেটিং অ্যাপে অনিতা নামের এক তরুণীর সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। কথা বলতে বলতে দু'জনের মধ্যে বন্ধুত্ব গভীর হয়। খুব সহজেই দলজিতের বিশ্বাস অর্জন করে ফেলেন অনিতা। আর সেটাই সুযোগ হিসাবে কাজে লাগান।
পুলিশের কাছে দলজিতের অভিযোগ, অনিতাকে নিজেকে হায়দরাবাদের বাসিন্দা বলে পরিচয় দিয়েছিল। একদিন অনিতা কয়েকটি ওয়েবসাইটের কথা জানান। যেখানে লগ্নি করলে বিরাট অঙ্কের লাভ হবে। সেই সময় ওই তরুণীকে বিশ্বাস করে বিনিয়োগ শুরু করেন দলজিৎ। প্রথম দিন একটি ওয়েবসাইটে প্রায় ৩ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ২৪ হাজার টাকা আয় করেন তিনি। ফলে বিশ্বাস আরও পোক্ত হয়। এরপর একদিন অতি উৎসাহিত হয়ে তিনি তাঁর জীবনের প্রায় ৪.৫ কোটি টাকা সঞ্চয় বিনিয়োগ করে ফেলেন। এমনকী অনিতার পরামর্শে, আরও ২ কোটি টাকা ঋণ নেন এবং সেটাও বিনিয়োগ করেন। সব মিলিয়ে ৩০টি ভিন্ন লেনদেনের মাধ্যমে ২৫টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে মোট ৬.৫ কোটি টাকা স্থানান্তর করেন দলজিৎ।
কিন্তু সমস্যা শুরু হয় এরপর। একদিন টাকা তোলার চেষ্টা করেন দলজিৎ। তখন তাঁকে বিনিয়োগ করা অর্থের ৩০ শতাংশ স্থানান্তর করতে বলা হয়। কিন্তু তিনি তা করতে অস্বীকার করায় অনিতা যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। এমনকী ওই ওয়েবসাইটগুলোর সার্ভারও ডাউন হয়ে যায়। এরপরই ধীরে ধীরে সবটা পরিষ্কার হয় দলজিতের কাছে। বুঝতে পারেন খুব বড় প্রতারণার শিকার হয়েছেন। তিনি অর্থ ফেরত পাওয়ার জন্য নয়ডা সেক্টর-৩৬-এর সাইবার থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, ডেটিং অ্যাপে অনিতার প্রোফাইলটি ভুয়ো ছিল। তদন্তের জন্য বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করছে পুলিশ।