নব্যেন্দু হাজরা: নো মাস্ক, নো মেট্রো (No Mask, No Metro)। পাতালপথে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করল মেট্রো কর্তৃপক্ষ। মাস্কহীন যাত্রী দেখলেই তাঁর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবে মেট্রোর আধিকারিকরা। মাস্ক না পরে কোনও যাত্রী যাতে মেট্রোয় প্রবেশ করতে না পারেন, সে বিষয়ে রেলপুলিশকে নজরদারি করতে বলা হয়েছে। গোটা বিষয়টি বুধবার থেকে মেট্রোর প্রতি স্টেশনে ঘোষণা করা হচ্ছে।
গোটা দেশের করোনা গ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী। রাজ্যেও বাড়ছে করোনা (COVID-19) আক্রান্তের সংখ্যা। অথচ তাতে কোনও হেলদোল নেই সাধারণ মানুষের। অধিকাংশের মুখেই মাস্ক নেই। কারও কারও যদি থাকেও সেটাও থুতনিতে। আর এই করোনা নিয়ে মানুষের বেপরোয়া মনোভাবই ভাবিয়ে তুলছে চিকিৎসকদের। বাস-ক্যাব তো ছিলই, মেট্রোতেও অধিকাংশ যাত্রী এখন আর মাস্ক ব্যবহার করছেন না। মাস্ক ছাড়াই প্রবেশ করছেন পাতালপথে। আর সেখানেই চিন্তা। কারণ মেট্রোর এসি রেক থেকে সংক্রমণ ছড়ানোর সম্ভাবনা প্রবল।
[আরও পড়ুন : এসএসকেএম থেকে দামি যন্ত্র চুরি, রোগীদের বসিয়ে রেখে তল্লাশি ঘিরে বিতর্ক]
চিকিৎসকদের কথায়, মাস্ক ছাড়া কোনও উপসর্গহীন করোনা রোগী যদি এসি রেকে উঠে পড়েন, সেক্ষেত্রে সংক্রামণ ছড়িয়ে পড়তে পারে। যেহেতু কোভিড ১৯ ড্রপলেটের মাধ্যমে ছড়ায়। তাই বিষয়টি নিয়ে চিন্তায় মেট্রো কর্তৃপক্ষ। বুধবার থেকে সেকারণেই প্রত্যেক স্টেশনে শুরু হয়েছে মেট্রোর প্রচার। ঘোষণা হচ্ছে, মাস্ক ছাড়া কোনওভাবেই মেট্রো স্টেশনে বা মেট্রোয় প্রবেশ করবেন না। কেউ মাস্ক মুখের নিচে নামাবেন না। কারণ করোনা দিন দিন বাড়ছে। মাস্ক ছাড়া কেউ মেট্রোয় উঠলে তাঁর বিরুদ্ধে কড়া শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মেট্রো সূত্রে খবর, লকডাউনের পর যখন প্রথম মেট্রো চালু হয়, সেই সময় মাস্কের বিষয়ে কড়াকড়ি ছিল পাতালে। কিন্তু এখন তা অনেকটা শিথিল হয়েছে। যাত্রীরা মাস্ক না পড়েই উঠে পড়ছেন মেট্রোয়। কেউ আবার স্টেশনে ঢোকার সময় পড়লেও পরে আবার খুলে ফেলছেন মেট্রোতে উঠে। তাই বিষয়টি নিয়ে নজরদারি শুরু করছে মেট্রো কর্তৃপক্ষ। আপাতত মেট্রোর পাবলিক অ্যাড্রেস সিস্টেমে নিয়মিত ঘোষণা হবে মাস্ক পড়ার বিষয়টি।
চিকিৎসকদের কথায়, কোভিড ১৯ ড্রপলেটের মাধ্যমে ছড়ায়। কথা বলা, হাঁচি—কাশির ফলে যে ড্রপলেট তৈরি হয় তা আয়তনে প্রায় ৫ মাইক্রোমিটারের বেশি। এত বড় কণার পক্ষে এক মিটারের বেশি দূর পর্যন্ত যাওয়া খুব মুশকিল। তাই সেটা এক মিটারের মধ্যেই থিতিয়ে পড়ে। বিজ্ঞানীদের মত, যে ড্রপলেটের এক মিটারের মধ্যে লুটিয়ে পড়ার কথায়, এয়ার কন্ডিশনের বায়ুর প্রবাহ সেগুলোকে অনেকটাই দূরে নিয়ে যেতে পারে। আর মেট্রোয় এক সঙ্গে প্রচুর যাত্রী থাকেন। তাই দ্রুত সেখানে করোনা ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবণা বেশি। মেট্রোর তরফে তাই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, আর কোনও ছাড় নয়। এবার মাস্ক ছাড়া যাত্রী দেখলেই তাঁকে শাস্তি দেওয়া হবে। করোনা যাতে না ছড়ায়, সেকারণেই এখনও পাতালপথে টোকেন চালু করেনি কর্তৃপক্ষ। শুধুমাত্র স্মার্টকার্ডেই যাতায়াত করছেন যাত্রীরা। কিন্তু নতুন করে ভাবাচ্ছে, দেশের করোনা গ্রাফ।